জেনারেল রাইটিং : শিশু শ্রমকে না বলুন।

সবাইকে শুভেচ্ছা।
একটি দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে আজকের শিশুরা। শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ আমরা সবাই জানি। শিশুবান্ধব পরিবার,পরিবেশ ও দেশ খুব জরুরি। আমাদের যে কোন পরিকল্পনা ও প্রস্তাবনায় থাকা উচিত সবার আগে শিশু। আপনি পরিবারে যাই করতে যান না কেন, সবাই আগে পরিবারের শিশুদের কথা মাথায় রাখতে হবে। শিশুদের ইগনোর করা মানে ওদের আপনি বঞ্চিত করলেন -পিছিয়ে দিলেন। বর্তমানে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিটি পরিবারে নিজ নিজ শিশুদের নিয়ে সবাই সচেতন। বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্য -শিক্ষা নিয়ে। শিশুদের স্বাস্থ্য শিক্ষা নিয়ে অনেক অবিভাবকের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে! কিন্তু শিশু কিসে খুশি সেদিকে তেমন নজর নেই। আজকে আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুদের সাথে আমি শিশুর শিক্ষা- স্বাস্থ্য বিষয়ে নয়, শিশু শ্রম বিষয়ে কয়েকটি কথা শেয়ার করবো।
pexels-calvin-_cowakces-580917276-25129226.jpg

source

আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুযায়ী ১ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের শিশু বলা হয়। অবশ্য বিভিন্ন দেশের শিশুর বয়সের নিজেস্ব সংজ্ঞা আছে। কিন্তু আমরা আন্তর্জাতিক বয়সটাকেই ধরে নিবো। আমাদের শ্রম আইনেও ১৮ বছরের আগে কোব শিশুকে কাজের সাথে যুক্ত করা যাবে না বলে বিধান আছে। শিশুশ্রম নিরসনে আইন আছে কিন্তু বাস্তবতা কি? আমাদের সমাজের বাস্তবতা আমরা সবাই জানি। আমাদের সামিনে পিছনে ও ডানে বামে তাকালেই শিশু শ্রমের ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই। সামান্য মুনাফার লোভে কিছু মানুষ শিশুদের দিয়ে বিভিন্ন কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। আবার অনেক পরিবার আছেন অভাব অনটনের কারনে শিশুদের শ্রমের সাথে যুক্ত করছেন। ভাবতেই অবাক লাগে যে বয়সে শিশুদের ব্যাগে বই খাতা পেন্সিল নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সেই বয়সে তারা কাজে যুক্ত হয়ে অর্থ উপার্জন করছে।

একজন শিশুর শৈশব হওয়ার কথা আনন্দময় ও নিরাপদ। শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ্য-সবল ভাবে বেড়ে উঠবে কিন্তু না শ্রমি শ্রমের ঝুঁকিতে পড়ে তারা শারীরিক ও মানসিক ভাবে দূর্বল হয়ে পড়ছে। শিক্ষার আলো থেকে হচ্ছে বঞ্চিত। ২০২২ সালের একটি সার্ভে থেকে জানা যায় বাংলাদেশে ৩৫ থেকে ৭০ লাখ শিশু, শিশু শ্রমের সাথে যুক্ত। যার অর্ধেকই ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের সাথে যুক্ত! বিষয়টি কিন্তু ভয়াবহ।

আইন আছে কিন্তু বাস্তবায়ন নেই। সরকারি - বেসরকারি ভাবে এই নিয়ে কিছু কাজও হচ্ছে কিন্তু শিশুশ্রম নিরসণ তো দুরের কথা দিন দিন বেড়েই চলছে। কেন শিশু শ্রম বন্ধ হচ্ছে না? এটা আগে ভাবতে হবে কর্তা ব্যক্তিদের।

অশিক্ষা-কুশিক্ষা, অভাব-অনটন ও সচেতনতার অভাবেই মুলত শিশু শ্রমের অন্যতম প্রধান কারন। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা গুলো যদি মালিক শ্রমিক ও অবিভাবকের যুক্ত করে শিশুশ্রম নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন তাহলেই শিশুশ্রম নিরসন সম্ভব। একজন শিশু একেক জন স্ব্রগ। নিজের প্রাণের চেয়ে সন্তান্দের আমরা ভালোবাসি। শিশু শ্রমের সাথে যুক্ত শিশুরাও কারো না কারো সন্তান। এইসব শিশু যাদের ঘরে জন্ম নিয়েছেন, তাদের দোষ কি? সব শিশুই সমান। রাষ্ট্র-সমাজ,আপনি-আমি দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারিনা এইসব শ্রমজীবী -সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের। রাষ্ট্রের উচিত এইসব শিশুদের সমাজের মূল ধারায় নিয়ে আসা। অন্যান্য শিশুদের মত আনন্দময় শৈশব তাদের অধিকার।

একটি সময়েজ বা একটি দেশের জন্য শিশ্রশ্রম জঘন্য কাজ। একটি মানবিক দেশ গড়তে শিশুশ্রম বন্ধের বিকল্প নেই। সরকারের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা,মালিক শ্রমিক,অবিভাবক,সরকারি-বেসরকারি সংস্থার যৌথ প্রচেষ্টায় শুধু নয়, জন সচেতনতা ছাড়া শিশুশ্রম বন্ধ সম্ভব নয়। শিশুশ্রম বব্ধে আনাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। রাষ্ট্রকে বাধ্য করার পাশাপাশি আমাদের নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে,যার যার সামর্থ অনুযায়ী।মানবিক রাষ্ট্র গড়তে শিশু শ্রমকে না বলতে হবে। আসুন মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্টায় শিশুশ্রমকে না বলি।

ধন্যবাদ।
ঢাকা-বাংলাদেশ।