জেনারেল রাইটিং || ডিপ্রেশন || তৃতীয় পোস্ট

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago


আসসালামু আলাইকুম


হাই
বন্ধুরা!

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে বলে রাখি,
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজকে আমি ডিপ্রেশন নিয়ে তৃতীয় পোস্ট শেয়ার করতে চলেছি। আশা করব এই পোস্টগুলো আপনাদের সকলের জন্য বেশ শিক্ষনীয় হবে। ডিপ্রেশন সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন এবং এই শ্রেণীর মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।


Picsart_24-10-10_12-27-24-940.jpg




ডিপ্রেশন:
ডাক্তার পেশেন্টের কথোপকথন


সবকিছু জানার পর ডাক্তার তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন কখনো যেন একলা ঘরে না থাকে। ভালো থাকলেও যেন ঘরা আটকিয়ে না রাখে। সে তখন অবিবাহিত ছিল ডাক্তারের তাকে বিয়ে করতে নিষেধ করেছিলেন কয়েক বছরের জন্য। বলেছিলেন এমন এক মনের মানুষের সাথে সব সময় আলোচনা করতে থাকো চলতে থাকো, যার দ্বারা তুমি দ্রুত হতাশা কাটিয়ে উঠতে পারবা এবং দীর্ঘদিন হতাশার অনুভূতি মনের মধ্যে না আসলে দেখবে একটি পর্যায়ে ভালো কোন পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেছে। বেশি বেশি কর্মব্যস্ততায় থাকো যেন হতাশার চিন্তা মাথায় না আসে। আর সেই থেকে তোমার অতীতের কষ্ট লাগা অনুভূতি দূরে চলে যাবে, আর এখান থেকেই ডিপ্রেশন কমে যাবে। তবে ডাক্তার এভাবেই বলেছিলেন যদি বয়ফ্রেন্ড না থাকে এমন কোন বন্ধুর সাথে মিল রাখ যে তোমার কথাগুলো বুঝবে এমন কোন বান্ধবীর সাথে সুসম্পর্ক রাখো যে তোমার পাশে থাকবে। কিন্তু বিবাহিত জীবনে বিভিন্ন সময় অনেক চাপ সৃষ্টি হয় তখন দেখবা সে চাপে আবার হতাশার টেনে আনবে।

IMG_20240417_102112_6.jpg


ডাক্তার অনেকক্ষণ সময় ধরে তার সাথে আলোচনা করে। কারণ তিনি শুধু ডাক্তার নয় তিনি ডিপ্রেশন বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করে থাকেন। তার বিভিন্ন পেশেন্টের ডিপ্রেশন বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ অনুভূতিগুলো নোট করেন। তাই আমার সেই প্রিয় ব্যক্তির কাছে ডাক্তার জানতে চেয়েছিল, ডিপ্রেশনের কারণে তার জীবনের মারাত্মক কোন ঘটনা থাকলে শেয়ার করতে পারে। তখন আমার প্রিয় ব্যক্তি টা তার জীবনের দুইটা ঘটনা শেয়ার করলো যা আমার জানা ছিল না। তার মধ্যে একটা ঘটনা আমার ভালই মনে হচ্ছে। সে প্রায় খেয়াল করে দেখতো,তার পিতা মাতার মধ্যে প্রায় ঝগড়া সৃষ্টি হয়। সে অন্য কিছু নীরবে সহ্য করতে পারলেও পিতা-মাতার ঝগড়া মন থেকে মেনে নিতে পারতো না। তার পিতা মাতার অতীতে এমন ঘটনাও রয়েছে তার চোখের সামনে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাচ্ছে এমন ভাব। তাই এমন একটা দিন পিতা-মাতার ঝগড়া, কথা কাটাকাটি তার উপর কঠিন প্রভাব ফেলে। এরপর তার বাবা অফিসে চলে যায় মা কান্না করতে থাকে, সে তার মাকে বুঝিয়ে ছিল আম্মা তুমি মুখ না চালালেই তো ঝগড়া সৃষ্টি হয় না। তুমি কেন আব্বার সাথে তর্কে জড়িত হও। বুঝনা মানুষটা কষ্ট করে বাড়িতে ফিরে আর সামান্য বিষয় নিয়ে তার সাথে এত তর্কাতর্কি সৃষ্টি করে ঝগড়া সৃষ্টি করো। তার মা বুঝতে চাইনি মেয়ের কথা এতে তার আরো খারাপ লাগে এবং মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় মায়ের সাথে। সে ঘর আটকে দিয়ে বসে থাকে। এমন মুহূর্ত তার মধ্যে বিভিন্ন চিন্তা হতাশার টেনশন এসে প্রভাব ফেলতে থাকে। সে তার ঘরে থাকা সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না বেঁধে ফেলেছে। দীর্ঘক্ষণ মেয়ে ঘরের মধ্যে দরজা আটকে রেখেছে কিন্তু মা সেভাবে খেয়াল করছে না, ভাবছে হয়তো মেয়ে ঘুমাচ্ছে। কয়েকবার শুধু এসে দরজা ধাক্কা দিয়েছে এবং ডাক দিয়েছে,উঠ!ঘর খোল খেয়ে নেয়।

IMG_20240721_222002_515.jpg


মায়ের কয়েকটা কথা যেন তার কাছে আরো তিতা মনে হয়েছিল, তাই মনের মধ্যে আরো প্রবল কষ্ট সৃষ্টি হয়েছিল। ততক্ষণ সে গলায় ফাঁস দিবে ঠিক এমন একটা মুহূর্ত। সে দ্রুত ফাঁস দেওয়ার জন্য ওড়নাটা গলার সাথে বাধার চেষ্টা করছে কিন্তু হাত কাঁপছে। এই মুহূর্তে তার অতি প্রিয় বান্ধবী বাইরের বকুল গাছের নিচ থেকে তার নাম ধরে ডাকতে থাকলো। তার বান্ধবী যে এই মুহূর্তে ৩/৪ কিলো পথ অতিক্রম করে এসে ক্যান্টনমেন্টের আর্মিদের পারমিশন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে কে জানতো। কারণ এর আগে যতবার সে তার সাথে দেখা করতে এসেছে মোবাইলে ফোন দিয়েছে, সে ভেতর থেকে গেটের কাছে এগিয়ে গিয়ে পরিচয় দিয়ে বান্ধবীকে রিসিভ করেছে। কারণ ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে তো বাইরের মানুষ প্রবেশ করতে পারে না। ভেতর থেকে গেটে উপস্থিত হয়ে রিসিভ করতে হয় নাম পরিচয় দিয়ে। কিন্তু ঐদিন সে একাই পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করতে পারছিলো এটা ভাগ্য, গেটে যে আর্মি ছিলেন তিনি এর আগে উনাকে রিসিভ করেছিলেন পরিচয় নিয়ে তাই ফেচ পরিচিত। গেটে সব সময় আর্মি থাকে না কিন্তু ওইদিন ভাগ্যক্রমে পরিচিত সে মানুষটা ছিলেন। যাই হোক বান্ধবী নিচ থেকে নাম ধরে ডাকতে থাকলো বারবার। সে বলতে থাকলো দেখ তোদের না বলে আমি আমার পরিচয় দিয়ে ঢুকে পড়েছি ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে। দরজা জানালা আটকানো কেন এই দেখ আমি এসে গেছি, তোকে সারপ্রাইজ দেবো বলে উপস্থিত হয়েছি আমি।(চলবে)

পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ

qjrE4yyfw5pEPvDbJDzhdNXM7mjt1tbr2kM3X28F6SraZgB7TZjdex8Jfeum4QdvWrYyVKf1TVdkBn3Afz5h9WN46gBh4J5bjeVSUjgbCkhDF2MvcDktfM1Q.jpeg


পোস্ট বিবরণ


বিষয়ডিপ্রেশন
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
Photo editing apppicsart app
লোকেশনগাংনী-মেহেরপুর
ব্লগার@sumon09
দেশবাংলাদেশ


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png


6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png


Sort:  
 6 months ago 

আসলে সত্যি বলতে দুইটা দম্পত্তির মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি লাগলে সেটা যদি প্রকাশ্য হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে এর বিরূপ প্রভাবটাও তার ছেলেমেয়েদের উপরেও পড়ে কিন্তু এই বিষয়টা অনেকে বুঝতে চায় না। শেষ পর্যন্ত এমন একটাই পর্যায়ে যাওয়ারই কথাই ছিল কারণ সে ডিপ্রেশনে থাকলেও তার প্রিয় মা বাবা পাশে ছিল না তারা তাদের মত ছিল এই জন্যই হয়তোবা এমনটা ঘটেছিল যাই হোক আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 6 months ago 

হ্যাঁ পিতা-মাতার বোকামির জন্য সন্তানদের অবস্থা খারাপ হয়

 6 months ago 

আসলে মা বাবার এমন আচরণ আর পরিবারের ঝগড়ার বাচ্চাদের জীবন নরক হয়ে উঠে। যার থেকে বাঁচতে কিছু কিছু ছেলে মেয়েরা হয়তো এইসব রাস্তা বেছে নিতে বাধ্য হয়।আর সব থেকে বড় কথা হলো যারা এমন ডিপ্রেশনে থাকে তারা কখনো একা থাকতে পারবে না। তাদের সাথে ভালো আচরণ করতে হয় সব সময়। যাইহোক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। হয়তো বান্ধুবীর জন্য মেয়ের জীবন টা বেঁচে যাবে।

 6 months ago 

হ্যাঁ, তবে ঘটনা আছে

 6 months ago 

আসলে আমাদের সমাজে দেখা যায় পিতা মাতার কারণে সন্তানদের অনেক কষ্ট হয়। অনেক সময় দেখা যায় পিতা-মাতা আলাদা হয়ে যায় । এতে করে সন্তানরা তাদের পিতা-মাতার আদর থেকে বঞ্চিত হয়। আসলে আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে খুব কষ্ট লাগছে। এধরনের ঘটনা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত। যাইহোক আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 6 months ago 

পোস্টি পড়ার জন্য ধন্যবাদ

 6 months ago 

ডিপ্রেশন সত্যি অনেক ভয়ঙ্কর। অনেক সময় ডিপ্রেশন থেকে মৃত্যুর চিন্তা চলে আসে। আর আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এটা সত্যি অনেক ভয়ঙ্কর ভাইয়া। অনেকেই ডিপ্রেশন এর শিকার হয়ে খারাপ কিছু করে ফেলছে।

 6 months ago 

হ্যাঁ ঠিক বলেছেন আপনি

 6 months ago 

পৃথিবীর কয়েকটি ভয়ংকর জিনিসের মধ্যে একটি হচ্ছে এই ডিপ্রেশন৷ যদি কেউ এই ডিপ্রেশনের শিকার হয়ে যায় তাহলে সে কখনো এখান থেকে বের হয়ে আসতে পারে না৷ যদি বের হয়ে আসার চেষ্টা করে তাহলে তার অনেকটাই কষ্ট হয়ে যায়৷ তবে বেশিরভাগ সময়ই বের হয়ে আসা যায় না৷ সেক্ষেত্রে নিজের জীবন শেষ করার জন্য চিন্তা চলে আসে৷ এইজন্য অনেকে অনেক ধরনের খারাপ পথ বেছে নেয়৷ এর ফলে অনেক মানুষ তাদের জীবন শেষ করে দিয়েছে৷

 6 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন আপনি।