জেনারেল রাইটিংঃ প্রতিবন্ধী ও আমরা।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

সবাইকে বড় দিনের শুভেচ্ছা।

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,আশাকরি সবাই ভালো আছেন।সবাই ভালো থাকুন এই প্রত্যাশা করি সবসময়। আমিও ভালো আছি।আজ ১০ই পৌষ, শীতকাল,১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রীস্টাব্দ।

disabled.jpg
সোর্স

-আশাকরি ভালো আছেন সবাই। আমিও ভালো আছি।খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড় দিন। বাৎসরিক খ্রীস্টিয় উৎসব। যিশু খ্রীস্টের জন্মদিন। আমার বাংলা ব্লগের সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা।সবার মঙ্গল হোক। এবার শীতের তীব্রতা কম বলে মনে হচ্ছে এখন পর্যন্ত। ঢাকায় তেমন শীত নেই। তবে ঘণকুয়াশা দেশের বিভিন্ন জায়গায় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিং এ আজ একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো। টাইটেল দেখেই বুঝতে পেরেছেন,আজকের জেনারেল রাইটিং এর বিষয় কি? আশাকরি ভালো লাগবে আপনাদের।
প্রতিবন্ধী শব্দটির সাথে আমরা কম বেশী সবাই পরিচিত। আমাদেরই কারো আপনজন, প্রতিবেশী প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধীদের অনেক ধরণ আছে। শারীরিক,মানসিক,শ্রবণ,দৃষ্টি,বাক,বুদ্ধি ও বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী আমাদের সমাজে বিদ্যমান। এদের কেউ অতিকম, কম ও বেশী মাত্রায় প্রতিবন্ধী। এরা কেউ আমাদের সন্তান, বাপ-মা,ভাই-বোন। আমাদের পরিবারের সদস্য। সমাজের অংশ। দেশের নাগরিক। অথচ প্রতিবন্ধী মানুষ সম্পর্কে আমাদের সমাজের অধিকাংশের দৃষ্টিভঙ্গী ইতিবাচিক নয়। কুসংস্কার দ্বারা আচ্ছন্ন ,অধিকাংশ মানুষ। পরিবার ও সমাজে অপাংতেও ভাবা হয়ে থাকে। বোঝা হিসেবে মনে করা হয়। ন্যুনতম সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করা হয় প্রতিবন্ধীদের। অযত্ন- অবহেলায় দিন কাটে তাদের। মানুষ হিসেবে ন্যুনতম মর্যদা দেইনা আমরা। অনেকেই মনে করে থাকেন তারা পাপের ফসল। কানা,খোড়া,ল্যাড়া,পাগল,হাবাগোবা বিভিন্ন নামে তাদের পরিচিত করে বঞ্চিত করছি। কি অমানবিক আমরা!
অথচ এই প্রতিবন্ধীরা, আমাদের আপনজন। কারো ভাই-বোন। দেশের নাগরিক। পরিবারের সন্তান হিসেবে, দেশের নাগরিক হিসেবে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার তার আছে। বিভিন্ন অক্ষমতার কারণে বরং তাদের অধিকার সক্ষমদের চেয়ে বেশী পাওয়া বা হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু উলটো পথে হাটছি আমরা। বর্তমান জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে, চিকিৎসা ব্যবস্থার আধুনিকিকায়নে, শিক্ষা ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন ও প্রসারে, আমরা যদি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী ও মানুষিকতার পরিবর্তন করে প্রতিবন্ধীদের জন্য এসব সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করি, তাদের সুযোগ দেই, তাহলে আমুল পরিবর্তন ঘটবে। প্রতিবন্ধীরা তখন হীনমন্যতায় ভুগবে না। নিজেকে অসহায় ভাববে না। সমাজের আর দশ জনের মত মর্যাদা নিয়ে বাচতে শিখবে। সাহস পাবে এগিয়ে যাওয়ার। আমরা প্রায়ই দেখি পত্র পত্রিকায় প্রতিবন্ধীদের সাফল্যগাথার খবর। এর কারণ তারা সুযোগ পেয়েছে। তবে এই সংখ্যাটা একেবারেই কম।
প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূল শ্রোতে ফিরিয়ে আনতে,দক্ষ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে, সরকারি ও বেসরকারি ভাবে অনেক কর্মসূচি আছে।যেমন বিষেশায়িত শিক্ষা-প্রতিষ্টান,প্রতিক্ষণ কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী ভাতা, প্রতিবন্ধী কার্ড, বিভিন্ন প্রতিষ্টানে প্রতিবন্ধীদের যাওয়া আসা সহজ করতে বিশেষ ব্যবস্থা, সরকারি চাকুরিতে কোটাসহ প্রতিবন্ধীবান্ধব অনেক ব্যবস্থা। সর্বোপরি আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি আইন। আছে অনেক কিছুই !কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনা ও স্বচ্ছতার অভাবে প্রতিবন্ধীদের কাংখিত লক্ষ্য পুরণ হচ্ছেনা। সেই সাথে মানুষের অধিকার সচেতনতার অভাব, মানুসিকতা ও কুসংস্কারের কারণে পিছিয়ে পড়ছে প্রতিবন্ধীদের অধিকার আদায়।
আসুন, আমরা প্রতিবন্ধীদের সমাজ ও পরিবারের বোঝা নয়, তাদের মানুষ ভাবি। সমাজের মূল শ্রোতে তাদের ফিরিয়ে আনতে দক্ষ্য করে গড়ে তুলি। তাদের সুযোগের ক্ষেত্র সংকুচিত না করে বিস্তার ঘটাতে সহায়তা করি, এগিয়ে আসি।কানাকে কানা,খোড়াকে খোড়া না বলে, তারা যাতে মনে কষ্ট না পায় সে ধরণের শব্দ চয়নে অভ্যস্ত হওয়া দরকার আমাদের। যেমন পঙ্গু না বলে শারীরিক ভাবে অক্ষম বলা যেতে পারে। আর আমাদের উচিত প্রতিবন্ধীদের স্বাবলম্বী ও স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা। সেটা সম্ভব প্রতিবন্ধীদের সেই সুযোগের নিরাপদ-নিশ্চিত ব্যবস্থা করে দেওয়া। আমার বিশ্বাস যথাযথ সুযোগ তাদের নিয়ে যাবে অনেক দূর। মনে রাখবেন, স্টিফেন হকিং কিন্তু একজন প্রতিবন্ধী ছিলেন।

আমাদের পরিবার,সমাজ, রাষ্ট্র হোক প্রতিবন্ধী বান্ধব।

প্রতিবন্ধী সম্পর্কে মানুষের ধারণা ও মানুসিকতার পরিবর্তন হোক।

প্রতিবন্ধীদের জয় হোক।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টঃজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরিselina 75
তারিখ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
লোকেশনঢাকা।

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পাড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ.

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

সত্যি আপু প্রতিবন্ধীরা কখনো সমাজের বোঝা নয়। তাই তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত এবং তাদেরকেও যোগ্য সম্মান দেওয়া উচিত। আসলে আমাদের সমাজে তাদের হয়তোবা যোগ্য সম্মান প্রদান করা হয় না। তবে তারাও নিজের যোগ্যতায় একদিন ঠিকই এগিয়ে যায়।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু।সুযোগ পেলে তারাও সমাজের জন্য কাজ করতে পারে।

 2 years ago 

প্রতিবন্ধী হলেও তারা আমাদের মতো মানুষ। তারা সবসময় আমাদের সাথে মিশতে চায়। তাই আমাদের তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত এবং তাদের সাহায্য করা উচিত। বিভিন্ন জায়গায় তাদেরকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। তবে তারাও একদিন এগিয়ে যাবে এবং নিজে কিছু করে দেখাবে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম ইউনিক একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

প্রতিবন্ধীদের সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। আসলে প্রতিবন্ধীদেরকে কখনোই বোঝা মনে করা উচিত নয়।ওরাও দেশের জন্য অনেক কিছুই করে থাকেন বর্তমানে।আসলেই ওদের মনে আঘাত লাগে কষ্ট পায় এমন আচরণ এবং এমন কথা একদমই আমাদের বলা উচিত নয়।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপু। তারাও অনেক কিছু করতে পারে যদি সুযোগ পায়।