জেনারেল রাইটিং//" অভিযোগ নয়, সহ্যই হোক জীবনের পথচলা"।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো । "অভিযোগ নয়, সহ্যই হোক জীবনের পথচলা" ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

Source

মানুষ মাত্রেই জীবনে কোনো না কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়। কখনও ছোটখাটো অসুবিধা, আবার কখনও বড় ধরনের বিপর্যয় এসে হানা দেয় জীবনের বুকে। এই বিপদের সময়ে আমরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেই, সেটাই আসলে আমাদের চরিত্র ও মানসিক পরিপক্বতার আসল প্রতিফলন। অনেকেই হয়তো সামান্য কষ্টে ভেঙে পড়ে, অভিযোগ করতে থাকে । নিজের ভাগ্যের ওপর, সমাজের ওপর, এমনকি প্রিয়জনের ওপরও। অথচ কেউ কেউ থাকে যারা শত কষ্টের মধ্যেও নীরবে সহ্য করে, অভিযোগ না করে শুধু সময়ের অপেক্ষা করে। বাস্তবতা বলছে, শান্তভাবে সহ্য করার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে জীবনের বড় একটি জয়।

সহ্য করার ক্ষমতা সবসময় সহজে অর্জিত হয় না। এটি একদিনে তৈরি হয় না। জীবনের নানা অভিজ্ঞতা, ব্যর্থতা, নিঃসঙ্গতা এবং আত্মোপলব্ধির মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে এই শক্তি। অভিযোগ করার প্রবণতা আমাদের মাঝে জন্ম নেয় যখন আমরা মনে করি।আমার প্রাপ্য আমি পাইনি, অথবা অন্যেরা আমাকে বোঝেনি। কিন্তু শান্তভাবে সহ্য করা মানে এই নয় যে আমরা দুর্বল। বরং এই সহ্য করার মধ্যে রয়েছে এক প্রকার আত্মশক্তি এবং জ্ঞান, যা বলে সময়ই সবচেয়ে বড় বিচারক। অভিযোগ করে আমরা সাময়িকভাবে নিজের রাগ বা হতাশা প্রকাশ করতে পারি বটে। কিন্তু তা কোনো সমাধান আনে না। বরং, ধৈর্য রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে, সময়কে নিজের পক্ষে কাজে লাগানো সহজ হয়।

যারা জীবনে সফল হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই অভিযোগ করার বদলে সহ্য করার পথ বেছে নিয়েছেন। জীবনে যদি তারা প্রতিটি বাধা বা অবিচারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অভিযোগ করতে থাকতেন, তাহলে হয়তো তারা কখনই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারতেন না। ইতিহাস, সাহিত্য এবং বাস্তব জীবনজুড়েই আমরা এমন বহু উদাহরণ দেখি, যেখানে কেউ জীবনের কঠিনতম সময়েও ঠান্ডা মাথায় সহ্য করে এগিয়ে গেছেন, এবং এক সময় এসে সবকিছু পাল্টে দিয়েছেন। একজন মায়ের প্রতিদিনকার আত্মত্যাগ, একজন কৃষকের রোদ-বৃষ্টিতে নীরবে কাজ করে যাওয়া। কিংবা একজন শিক্ষকের অক্লান্ত প্রচেষ্টা সব কিছুতেই ধৈর্য ও সহ্য করার নিদর্শন স্পষ্ট।

সহ্য করা মানে সবসময় নীরব থেকে নিজেকে নিঃশেষ করে ফেলা নয়। বরং এই ধৈর্যের অর্থ হচ্ছে নিজের আবেগকে সংযত রেখে, সঠিক সময় ও উপায়ে প্রতিক্রিয়া দেখানো। এটি একধরনের আত্মনিয়ন্ত্রণ, যা মানুষকে শান্ত ও ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। কোনো কিছু নিয়ে বারবার অভিযোগ করলে তা নিজের আত্মাকে বিষাক্ত করে তোলে, মনে অস্থিরতা বাড়ায় এবং জীবনের ইতিবাচক দিকগুলো চোখের আড়ালে চলে যায়। তাই মনের ভেতরে যদি একটি স্থিরতা রাখা যায়, যদি বিশ্বাস রাখা যায় যে সবকিছুরই একটা সময় আসে।তবে জীবন অনেক সহজ হয়।অভিযোগ না করে শান্ত থাকা মানে এই নয় যে আমরা কিছু অনুভব করছি না, বা আমাদের কষ্ট নেই। বরং আমরা সেই কষ্টকে শক্তিতে পরিণত করছি, আমরা নিজেকে তৈরি করছি আরও বড় চ্যালেঞ্জের জন্য। ধৈর্যশীল মানুষেরা কখনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখায় না, বরং পরিস্থিতিকে পর্যবেক্ষণ করে, বুঝে নেয় কোনটা ঠিক এবং কখন সেটার মোকাবিলা করতে হবে।

অতএব, এই পৃথিবীতে যখন প্রতিনিয়ত অন্যায়, অবিচার কিংবা হতাশার মুখোমুখি হই, তখন প্রতিটি মানুষের উচিত অকারণে অভিযোগ না করে নিজেকে সংযত রাখা। নিজের কাজ করে যাওয়া, সময়ের অপেক্ষা করা এবং বিশ্বাস রাখা যে, ধৈর্য এবং সহ্য করার ফল কখনো বৃথা যায় না। প্রতিটি কষ্টই একসময় কোনো না কোনো রূপে আমাদের জীবনে আলো বয়ে আনে। শান্তভাবে সহ্য করার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে জীবনের গভীরতম বুদ্ধি ও উপলব্ধি।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।