|| জেনারেল রাইটিং : এই গরমে আমাদের কিছু নৈতিক দায়িত্ব ||

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

মানুষ হলো পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সেরা জীব। সেটা হোক বুদ্ধিমত্তা কিংবা নৈতিকতার দিক থেকে। তবে সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার পাশাপাশি আমাদের কিছু দায়িত্ব এবং কর্তব্য রয়েছে অন্যান্য প্রাণী কুলের প্রতি। যেগুলো আমাদের পালন করা উচিত বলে আমি মনে করি।আপনারা তো অনেকেই জানেন যে বর্তমানে যে পরিমাণ গরম পড়ছে তাতে মানুষ সহ অন্যান্য অসহায় প্রাণীদের কষ্টের কোনো সীমা নেই। হয়তো মানুষ সৃষ্টিশীল এবং বুদ্ধিমত্তার কারণে তাদের বুদ্ধি খাটিয়ে এই গরম থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যারা অসহায় এবং নিরীহ প্রাণী তাদের অবস্থা কি হচ্ছে সেটা আমরা একবারও ভেবে দেখছি না। যেসব প্রাণী কথা বলতে পারে না বা মানুষের মত যাদের কোনো বিবেক বুদ্ধি নেই তারা এই গরমে পড়ছে প্রচুর বিপদে। কিছুদিন আগেই ফেসবুকে একটা ভিডিও দেখলাম যে একটা কুকুর এই রোদ থেকে বাঁচার কারণে একটা ট্রাকের নিচে গিয়ে শুয়ে রয়েছে ছায়ায়।

costa-rica-8606850_1280.webp

সোর্স

হঠাৎ করেই সেই ট্রাকটা ড্রাইভার চালাতে শুরু করে এবং চাকার নিচে পড়ে কুকুরটা জায়গায় মরে যায়। এই ভিডিওটা ফেসবুকে প্রচুর ভাইরাল হয়েছে এবং এর পর থেকে হয়তো অনেকে সচেতন হয়েছে। তবে এই সচেতনতা আমাদের আগেই দরকার ছিল, তাহলে হয়তো ওই কুকুরটা প্রাণে বেঁচে যেত। এখানে হয়তো যে ড্রাইভার টা গাড়ি চালাচ্ছে তারও কোন দোষ নেই কিংবা কুকুরটাও একটু ছায়ার আশায় গাড়ির নিচে শুয়ে রয়েছে, সেখানে তারও কোন দোষ নেই। দোষটা হলো আমাদের উপস্থিত বুদ্ধির। অর্থাৎ গাড়ি চালানোর আগে যদি আমরা একটু চেক করে নেই যে এই গরমে আমাদের গাড়ির নিচে কোন প্রাণী শুয়ে আছে কিনা তাহলে হয়তো এই সমস্যাটা আর হয় না। তবে শুধু এই একটা ব্যাপার নয় আরো বেশ কিছু ব্যাপার রয়েছে। তার ভেতর একটা ব্যাপার হল, এই গরমে সব জায়গায় কম বেশি জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে এবং সেই কারণে যে সমস্ত পশু পাখি আমাদের আশেপাশে বসবাস করে তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ জলের অভাব হচ্ছে।

এই সময়টাতে আমরা যদি কিছু ঠান্ডা জল বাড়ির ছাদে কিংবা বাড়ির আঙিনায় রেখে দেই তাহলে হয়তো এই পাখিগুলো সেই জল খেয়ে তাদের জীবন রক্ষা করতে পারে। যেমনটা আমি বিগত বেশ কিছুদিন ধরে করছি। বাড়ির ছাদে একটা মাটির পাত্রে জল রেখে দিচ্ছি। প্রথম যেদিন রেখে দিয়েছিলাম তখন সবেমাত্র একটা কাক এসেছিল এই জল খাওয়ার জন্য। কিন্তু দিন যত গেছে এখন শুধু কাক নয় আরো অনেক পাখি রয়েছে যারা এই জল খেতে আসে। আগে এক লিটার জল দিলে মোটামুটি একদিন হয়ে যেত। এখন তিন চার লিটার করে জল দিতে হচ্ছে। তাই আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করব বাড়ির ছাদে কিংবা বাড়ি আঙ্গিনা একটু জল রেখে দেওয়ার জন্য। যাতে করে এই পাখিগুলো প্রাণে বেঁচে থাকতে পারে প্রচন্ড গরমে।

আমাদের বাড়ির সামনে বেশ কিছু কুকুর রয়েছে তারা এই রোদে কোন আশ্রয় না পেয়ে রীতিমতো রোদের ভিতর শুয়ে জিভ বের করে দিয়ে বসে আছে। দু একটা কুকুর তো জিভ বের করে লালা বের করছে। এমন সময় তাদের সামনে একটু জল কিংবা খাবারের ব্যবস্থা করলে তারা হয়তো প্রাণে বেঁচে যায়। আসলে এই বুদ্ধিটা আমার মাথায় এসেছিল যখন আমি কিছুদিন আগে গাছে জল দিতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করেই দেখি সেই গাছের টবের নিচে একটা ছোট্ট পাখি বসে সেখান থেকে জল খাওয়ার চেষ্টা করছে। তখন বুঝতে পারলাম যে তাদের আসলে কতটা কষ্ট হচ্ছে এই গরমে। যাই হোক এগুলো তো খুবই সাধারণ ব্যাপার, কিন্তু যারা আরেকটু উঁচু চিন্তাধারা করছেন যে রাস্তার অসহায় মানুষদের ঠান্ডা জল খাওয়াবেন, যেমনটা কলকাতা পুলিশ দেখছি এখন করছে। এটাও অনেকে করতে পারেন। এর থেকে পুণ্যের কাজ আমার মনে হয় না আর কিছু আছে। যাইহোক সর্বোপরি এটাই বলব যে নিজেও সুস্থ থাকুন এবং অন্যান্য প্রাণীকেও পাশাপাশি সাহায্য করুন সুস্থ থাকার জন্য। তাহলে সৃষ্টিকর্তাও অনেক বেশি খুশি হবে এবং যে মানুষগুলো কে সাহায্য করা হচ্ছে বা যে পশু পাখিগুলোকে সাহায্য করা হচ্ছে তারাও কিছুটা হাফ ছেড়ে বাঁচবে।


পোস্ট বিবরণজেনারেল রাইটিং

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।





🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

কথাগুলো একদম ঠিক বলেছেন আপু এই কাজ বা এই দায়িত্ব গুলো সত্যি আমাদের নৈতিকতার মধ্যেই পড়ে। যেগুলো আমাদের পালন করা উচিত। অথচ দিনশেষে আমরা সেগুলোর গুরুত্ব দেই না। বেশ ভালো একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন আপু। চেষ্টা করব কিছু করার। আপনার জন্যও শুভকামনা রইল।

 last year 

আপনিও এই দায়িত্বগুলো পালন করার চেষ্টা করবেন জেনে ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ আপনাকে, শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 last year 

সত্যি দিদি এটা ঠিক আমাদের একটু সচেতনতায় অনেক পশু,পাখির প্রান বেঁচে যায়।আমাদের এখানে ঢাকাতে শুনেছি পানি, শরবত মানুষের মাঝে বিলি করছে।আর নিজেদের বাড়িতে নানা জায়গায় পানি দিয়ে রাখলে এই গরমে পশু-পাখি খেয়ে জীবন বাঁচাতে পারবে।আর এতে আল্লাহ ও খুশী হবেন।সুন্দর লিখেছেন।ধন্যবাদ দিদি।

 last year 

আপনাদের ওখানে তো দেখছি তাহলে বেশ ভালো একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আপু। আমার লেখাটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

দিদি আমিও ফেসবুকে ওই ভিডিওটা দেখেছি, কুকুরটা যখনই ট্রাকের নিচে গিয়েছে তার কিছু সময় পরে ট্রাক ড্রাইভার ট্রাক সামনের দিকে নেয় কুকুরটার কি নির্মম মৃত্যু। আসলে এই ভিডিওটা দেখে একদম পুরোপুরি মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

 last year 

আমিও যখন এই ভিডিওটা দেখেছিলাম ভাই,আমারও প্রচন্ড পরিমাণে খারাপ লেগেছিল দৃশ্যটা দেখে।

 last year 

অনেক জনসচেতন মূলক পোস্ট আপনি শেয়ার করেছেন। তবে পাখির জন্য পানির ব্যবস্থা করা এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়গুলো আমিও মাথায় রাখি কিন্তু যাই হোক আমরা গ্রামে বাস করি যার জন্য প্রয়োজন হয় না এখানে অনেক পুকুর রয়েছে। তবে শহরের মানুষরা যদি এই বিষয়ে সচেতন হয় তাহলে অনেক উপকার হয় পশু পাখির জন্য। যাহোক অনেক সুন্দর সুন্দর বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন,এমন সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি আমি খুবই পছন্দ করি।

 last year 

হ্যাঁ ভাই,গ্রামে তো অনেক পুকুর রয়েছে সেই জন্য পশুপাখিদের কোনো অসুবিধা হয় না । তবে শহরাঞ্চলে এরকম পুকুরের সুবিধা নেই, এই জন্যই পশু পাখিদের দিকে একটু নজর রাখা উচিত আমাদের।

 last year 

ঠিক বলেছেন এগুলো আসলেই আমাদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। মানুষের পাশাপাশি পশু পাখিদের প্রতিও আমাদের কিছু দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে। গরমের মধ্যে এই উদ্দ্যেগ গুলো নিলে তাদেরও অনেকটাই উপকার হবে। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।

 last year 

হ্যাঁ আপু,মানুষের পাশাপাশি পশু পাখিদের প্রতি আমাদের সত্যিই অনেক দায়িত্ব রয়েছে। তবে সেগুলো আমরা ঠিকভাবে পালন করি না। পোস্টটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

ট্রাকের চাকার নিচে কুকুর চাপা পড়ে মরে যাওয়ার ব্যাপারটা আমি নিজেও ফেসবুকে দেখেছি দিদি। অনেক বেশি কষ্ট লেগেছিল ভিডিওটা দেখে। তবে আমরা যদি একটু সচেতন হই এবং এই গরমে অসহায় পশু পাখিদের জন্য কিছুটা খাবার এবং জলের ব্যবস্থা করি, সেটা কিন্তু সত্যিই খুব ভালো হয়। এই কাজটা অনেকেই করেনা, তবে যারা করে তারা অবশ্যই খুব ভালো মনের মানুষ। এই ব্যাপারটা আমার মাথায় থাকলো দিদি। যদিও আমি মাঝেমধ্যে ছাদে জল রেখে আসি পাখিদের জন্য। খুব ভালো লাগলো দিদি, এত সুন্দর একটা পোস্ট পড়ে।

 last year 

আপনিও মাঝেমধ্যে ছাদে পাখিদের জন্য জল রেখে আসেন জেনে ভালো লাগলো ভাই। গরমের দিনে আমরা সবাই যদি এইটুকু মাথায় রাখতাম তাহলে সত্যিই খুব ভালো হতো। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে যাওয়া সেই কুকুরের ভিডিওটি আমি নিজে দেখেছিলাম৷ সেটি দেখে আমার অনেক খারাপ লেগেছিল৷ আসলে মানুষের যেরকম গরম থেকে বাঁচার বিভিন্ন উপায় রয়েছে সেরকম পশুপাখিদের কোন উপায় নেই যে তারা কোন জায়গায় গিয়ে ঠাঁই নিভে যাতে করে তাদের গরম কম লাগে৷ তবে আমি এরকম কিছু ভিডিও দেখেছি যে অনেক মানুষ এরকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যাতে করে পশু পাখিদেরকেও পানি খাওয়ানো যায়৷ আসলে যেরকম একদিকে বিষয়টি খারাপ লাগছে অন্যদিকে তাদের নেওয়া পদক্ষেপটিও অনেকটাই ভালো লাগছে৷