জেনারেল রাইটিং- প্রতিশোধ নেওয়ার মনোভাব দূর করি
হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা অনেক অনেক ভাল রয়েছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আপনাদের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক্স নিয়ে আলোচনা করব। আমার আলোচনার বিষয় থাকবে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত থাকি। বর্তমান সময়ে মানুষের মধ্যে ধৈর্য শক্তি বেশ কমে গেছে। সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে বড় গ্যাঞ্জাম সৃষ্টি করে ফেলে অথবা মারাত্মক কিছু সৃষ্টি করে ফেলছে। তাই এই বিষয়গুলো এড়িয়ে সজাগ ভাবে চলতে হবে আমাদের। এজন্য আমার আজকের লেখালেখি।
প্রতিশোধ, শব্দটা মনে আসলেই এক অন্যরকম অনুভূতি জাগ্রত হয়। মনের মধ্যে ভেসে আসে শত্রুপক্ষ, বিপক্ষ অথবা যারা হিংসা করে সেই সমস্ত মানুষদের কথা। আমরা মানুষ, সৃষ্টির সেরা জীব। আমাদের জ্ঞান বুদ্ধি বোধশক্তি অন্যান্য জীবের চেয়ে আলাদা। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের এমন জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যার দ্বারা আমরা সব কিছু উপলব্ধি করতে পারি। তাই বলা চলে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব, সকল জীবের চেয়ে অধিক জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ। কিন্তু এ মানুষের কিছু কিছু আচরণ যেগুলো পশুর চেয়েও জঘন্য। মানুষের কিছু ব্যবহার, কথাবার্তা, চালচলন যেন পশুর পরিচয় দিয়ে থাকে। আমরা সমাজে বাস করি। সমাজ সৃষ্টি হয়েছিল মানুষের সমস্যা দূর করে একত্রে বসবাস করার তাগিদে। যেখানে একে অপরের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে এবং বিপদে-আপদে বন্ধু হয়ে পাশে থাকবে। এমন চাহিদার জন্যই মানুষ দলবদ্ধ হয়ে বসবাস শুরু করেছিল এবং সৃষ্টি করেছিল সময়। অতি প্রাচীনকালের ইতিহাসের দিকে তাকাতে গেলে বোঝা যায় বিভিন্ন পশু পাখির হাত থেকে বাঁচতে মানুষ ঘর নির্মাণ করে, এরপর বিভিন্ন সমস্যার হাত থেকে বাঁচতে সমাজবদ্ধ হয়। কিন্তু এখন দেখা যায় সমাজে বসবাস করতে গেলে মানুষের মধ্যে নানান বিশৃঙ্খলা লেগে থাকে। জমি জায়গা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমস্যা শেষ পর্যন্ত পেশি শক্তি ও ক্ষমতার বল রূপ লাভ করে।
কোন কারনে একজন ব্যক্তি আরেকজন ব্যক্তির উপর আক্রমণ করে বসে। হতে পারে সেটা সমাজে বসবাস করার ক্ষেত্রে অথবা জীবন চলার পথে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে। একজন ভুল করে হোক অথবা পশুর পরিচয় খারাপ আচরণ করে বসে। সেক্ষেত্রে আমরা অন্যজন চেষ্টা করে থাকি প্রতিশোধ নেওয়ার। হয়তো উপস্থিত ভাবে প্রতিশোধ নিতে না পারলেও মনের মধ্যে রাগ পুষে রাখা হয়, কোন এক সুযোগে দেখে নিব। আবার দেখা যাচ্ছে পথ চলতে গিয়ে কোন কারনে একজন আরেকজনের আক্রমণ করে বসেছে সাথে সাথে সেই ব্যক্তির উপর পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করে থাকে। এভাবেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা হতে দেখা যায়। আমাদের মনের মধ্যে সে ধৈর্য শক্তি আনতে হবে যে, যেটা কল্যাণকর। কোন কারনে একজন ভুল করে বসতে পারে, তাই বলে আমি কেন পাল্টা আক্রমণ করব অথবা প্রতিশোধ নেব। নিজের মধ্যে এমন একটা মন মানসিকতা তৈরি করতে হবে যে মানসিকতা সবসময় ছাড় দিতে জানে। এখন ছাড় দিতে বলতে কি বুঝায়। একটু উদাহরণস্বরূপ বিশ্লেষণ করলে ভালো হয়।
মনে করুন আমি পথ চলছি। এই মুহূর্তে একজন ব্যক্তি আমার সাথে খারাপ আচরণ করে ফেলল। আমি সাথে সাথে তার প্রতিবাদ করতে যাব না। চেষ্টা করব সুন্দর করে বুঝিয়ে বলার। আবার আমার নিজের যদি অপরাধ থাকে মাফ চেয়ে নিব। যদি অপরাধ না থাকে মাফ করে দিব। বুঝিয়ে বিষয়টা সমাধানে আনার চেষ্টা করব। কারণ কখনো যদি কোন প্রকার ঝগড়া গ্যাঞ্জাম ফ্যাসাদ সৃষ্টি হয় মনে রাখতে হবে সেখানে উভয় পক্ষের ভুল ত্রুটি থাকতে পারে অথবা একজনের ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে চড়াউ হয়ে কেন বেশি ভুল ত্রুটি সৃষ্টি করব। হয়তো সকল বিষয়ে মাপ করা যায় না, তবে নিজের মধ্যে সেই বিবেক জাগ্রত রাখতে হবে। যেটা করলে কল্যাণ হবে। ঝগড়া বিবাদ কমে যাবে বা বন্ধ হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে কুত্তায় কামড় দিলে তাকে তো আর কামড় দেওয়া যায় না। হয়তো তাকে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে কিন্তু সেটা একটু থেমে বুঝে শুনে। কুত্তা যদি হয় সমাজের জন্য বা সবার জন্যই ক্ষতিকারক তাহলে উপযুক্ত একটা ব্যবস্থা নেওয়া যায় অনেকজন মিলে। এখন সে ক্ষেত্রে মানুষের দিকে যদি আপনি লক্ষ্য করেন কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা মানুষের ক্ষতি করে বেড়ায় তাদের জন্য অ্যাকশন নিতে হবে যৌথভাবে ও আইনের মাধ্যমে।
ঠিক তেমনি, সমাজে কিছু কিছু মানুষ পেশি শক্তি অথবা ক্ষমতার বল দেখিয়ে খারাপ আচরণ করে বা ঝামেলায় ফেলে। সে ক্ষেত্রে নিজেকে একটু কন্ট্রোল করতে হবে এবং বুঝতে হবে। হুট করে যারা মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে, জীদ দেখিয়ে আঘাত করে তারা সব সময় ডেঞ্জারাস পারসন হতে পারে। মিথ্যে গ্যাঞ্জাম সৃষ্টি করে এমন কোন কিছু করতে পারে, যেটা আপনাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যেতে পারে। বর্তমান মিডিয়ার দিকে লক্ষ্য করলে এমনটাই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাই নিজেকে সেভ রাখতে অনেক সময় বুঝে শুনে চলাটাই উত্তম। আমরা জানি, খারাপ মানুষের প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক নয়, নিজেকে প্রতিবাদী হতে হবে, খারাপের বিরুদ্ধে লড়তে হবে, খারাপ মানুষকে দমিয়ে রাখতে হবে। তবে সব সময় এই অনূভূতি নিয়ে চললে কিন্তু সুন্দর সমাজ প্রত্যাশা করা যায় না। কিছু কিছু সময় রয়েছে যখন কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তখন অবশ্যই জ্ঞান করে চলতে হবে। আর যখন দেখা যায় এমন কিছু বিষয় আমাদের সামনে এসে গেছে, মুখ বুজে থাকা মোটেও ঠিক হবে না। তখন অবশ্যই মুখ খুলতে হবে এবং প্রতিবাদ করতে হবে। তবে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় নিজের বিবেক ঠিক রেখে চলার চেষ্টা করতে হবে। সামান্য কিছুতে প্রতিশোধ নিবো, পেশি শক্তি বা বল প্রয়োগ করবো এমন মনে হওয়া যাবে না।
দেশের পরিস্থিতি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ডেঞ্জারাস পারসন মানুষগুলো যেকোনো মুহূর্তে মারাত্মক কিছু করে বসে। যেটা আপনার আমার সকলের জন্য অপ্রত্যাশিত এবং মারাত্মক দুর্ঘটনা। অনেকেই রয়েছে কিতা মাতার সাথে ঝগড়া বিবাদ করে সন্তানদের ক্ষতি করে। সামান্য একটু কারণ কে কেন্দ্র করে রাতের আঁধারে ছুরি আঘাত করে বসে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে খুন গুম ধর্ষণ বেড়ে চলেছে। তাই আমি মনে করি আমাদের সবাইকে একটু বুঝেশুনে চলার চেষ্টা করতে হবে। যেন কোন প্রকার অপ্রত্যাশিত বিপদ এর সম্মুখীন হতে না হয়। তাই সমাজে অথবা পথে-ঘাটে চলতে কোন প্রকার গ্যাঞ্জামের মধ্যে লিপ্ত হব না। কেউ ভুল করে বসলে ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করব এবং নিজেকে কন্ট্রোল করে নীরবে সেখান থেকে সরে যেতে হবে। কারণ বর্তমান দেশের আইন সেভাবে ন্যায্য অধিকার এনে দিতে সক্ষম নয়। ভিকটিমকে সাথে সাথে সহযোগিতা করতে পারছে না। যার জন্য হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলেছে। যদি দেশের আইন শাসন কঠোর থাকতো তাহলে হয়তো এগুলো হতো না। তাই এখন নিজের নিরাপত্তা নিজেকেই দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে বুঝে শুনে। আর আশা করব দ্রুত আমাদের দেশের আইন শাসন সঠিক পর্যায়ে এসে প্রত্যেক জনের নিরাপদ তা নিশ্চিত করে দিবে ইনশাল্লাহ। ততক্ষণে আমরা একটু সজাগ ভাবে চলবো যেন কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তাই আমার পক্ষ থেকে এই কথাটাই থাকবে, প্রতিশোধ নেওয়া বা পাল্টা আক্রমণ করা এগুলো থেকে বিরত থাকাটাই উত্তম।
ব্লগিং ডিভাইস | মোবাইল ফোন |
---|---|
বিষয় | জেনারেল রাইটিং |
আলোচনার বিষয় | প্রতিশোধ নেওয়া |
আমার ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর |
বর্তমান অবস্থান | ঢাকা সাভার |
ফটোগ্রাফার ও ব্লগার | @helal-uddin |
ধর্ম | ইসলাম |
দেশ | বাংলাদেশ |
পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি মোঃ হেলাল উদ্দিন। আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুরে। আমার বর্তমান ঠিকানা,ঢাকা সাভার বিশ-মাইল। আমি একজন বিবাহিত ব্যক্তি। কর্মজীবনে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী।
আমার আজকের টাস্ক
Twitter-promotion
প্রতিশোধ নেওয়ার মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসা সত্যিই কঠিন, কিন্তু এটি আমাদের মানসিক শান্তি এবং ব্যক্তিগত বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখলে আমরা সমস্যাগুলোকে সহজেই সমাধান করতে পারি। করা শুধু অন্যের জন্যই নয়, এটি নিজের জন্যও খুব জরুরি। ক্ষমা করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের হৃদয়কে হালকা করতে পারি এবং নেতিবাচকতা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
প্রতিশোধ নিয়ে সবসময় সুখী হওয়া যায় না। আমাদের সব সময় উচিত ক্ষমা করে দেওয়া। একজন মানুষকে ক্ষমা করে দিলে সৃষ্টিকর্তা ও খুশি হন। তাই আমাদের প্রতিশোধ নেওয়া মনোভাব থেকে দূরে সরে আসতে করতে হবে। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া অনেক মানুষ আছে প্রতিশোধ নিতে তৃপ্তি পায়। তবে প্রতিশোধ নেওয়ার মনোভাব দূর করতে হবে। কারণ প্রতিশোধ নিয়ে কোন মানুষ সুখী হয় নাই। আর বর্তমান সময়ে দেখা যায় কিছু মানুষ একদম হিংসু প্রাণীর চেয়ে ভয়ঙ্কর। এবং মানুষের মনোবল থাকতে হবে প্রতিশোধ না নিয়ে ব্যবহার দিয়ে পরিচয় দেওয়া। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।
খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আসলে সবার মনের মধ্যে যদি এরকম চিন্তা ঢুকে যায় তাহলে কখনোই পৃথিবীর কোন জায়গায় কোন ধরনের খারাপ কাজ হবে না৷ যদি মানুষ প্রতিশোধের যে একটা আগুন তাদের মনের মধ্যে জালাতে থাকে সেটি যদি তারা বন্ধ করে দেয় তাহলে কোনভাবেই তারা মানুষের ক্ষতি করতে পারে না৷ আর প্রতিশোধের চেয়ে এখন ক্ষমা করে দেওয়াই উত্তম৷ কারণ প্রতিশোধের কারণে একটা সমস্যা থেকে আরো হাজারটা সমস্যা তৈরি হয়ে যায়৷ তবে যদি তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হয় তাহলে কোন ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার কোন সম্ভাবনায় থাকেনা৷ ধন্যবাদ আজকের অসাধারণ পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷