জেনারেল রাইটিং: “কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী”
🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001।
হ্যালো বন্ধুরা.........
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।আজ আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট লিখে শেয়ার করবো। আশাকরি আমার লেখা পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
২৫শে বৈশাখ এই একটি দিনই যেন বাঙালির হৃদয়ে এক চিরন্তন দীপ্তির প্রতীক। এই দিনে জন্ম নিয়েছিলেন এমন একজন পুরুষ, যাঁর কলমে, কণ্ঠে ও চিন্তায় জেগে উঠেছিল বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও মানবতার নবজাগরণ। তিনি আর কেউ নন তিনি আমাদের “কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ”।১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ই মে (২৫শে বৈশাখ, ১২৬৮ বঙ্গাব্দ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর অভিজাত ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এই বিস্ময় প্রতিভা। তিনি ছিলেন ব্রাহ্ম সমাজের নেতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্র। জন্ম থেকেই তিনি পেয়েছিলেন এক শিল্পস্নিগ্ধ, বৌদ্ধিক ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল যেখানে সাহিত্য, সঙ্গীত, ধর্ম, দর্শন ও সমাজচিন্তার মিলন ঘটেছিল।একাধিক পরিচয়ে রবীন্দ্রনাথকে মানুষ চেনে।রবীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র একজন কবি নন। তিনি ছিলেন উপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, সঙ্গীতস্রষ্টা, শিক্ষাবিদ, চিত্রশিল্পী, দার্শনিক এবং একজন মানবতাবাদী চিন্তক। তিনি বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার পথপ্রদর্শক। তাঁর লেখা হাজার হাজার কবিতা, দুই হাজারেরও বেশি গান (যা আজ “রবীন্দ্রসঙ্গীত” নামে সমাদৃত), অসংখ্য গল্প, উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধ বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডারকে করেছে অপরিসীম সমৃদ্ধ।বিশ্বনন্দিত গীতাঞ্জলি ও নোবেল সম্মান১৯১৩ সালে তাঁর “Gitanjali: Song Offerings” কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। এশিয়ার মাটিতে তিনিই প্রথম সাহিত্যে নোবেল পাওয়া ব্যক্তি। এই কাব্যগ্রন্থ শুধু সাহিত্যিক মূল্যেই নয়, এক গভীর আধ্যাত্মিক ও মানবিক উপলব্ধির প্রতিফলন, যা তৎকালীন পাশ্চাত্য জগতেও গভীরভাবে নাড়া দিয়েছিল।
মানবতার কণ্ঠস্বর ও বিদ্রোহী চেতনার কবি
রবীন্দ্রনাথ একদিকে ছিলেন ঈশ্বরবিশ্বাসী এক আধ্যাত্মিক চিন্তাবিদ, অন্যদিকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এক কণ্ঠস্বর। তিনি ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ‘নাইট’ উপাধি ফিরিয়ে দেন। তাঁর এই প্রতিবাদ ছিল এক নীরব কিন্তু প্রবল রাজনৈতিক বার্তা। তাঁর লেখায় বারবার উঠে এসেছে সাম্য, স্বাধীনতা, জাতীয়তা ও বৈশ্বিক মানবতার বাণী।তিনি কেবল সাহিত্যেই নয়, শিক্ষা ক্ষেত্রেও রেখে গেছেন যুগান্তকারী প্রভাব। প্রথাগত গণ্ডিবদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে গিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শান্তিনিকেতন “বিশ্বভারতী”। এখানে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে, মুক্ত পরিবেশে ছাত্রদের শিক্ষা দেওয়া হয় যেখানে জ্ঞান, শিল্প ও মানবিকতা একসূত্রে গাঁথা। বিশ্বভারতী আজও তাঁর সেই শিক্ষাদর্শ বহন করে চলছে।শেষ বেলায় এক চিত্রশিল্পী ও অন্তর্জ্ঞানী সাধক
জীবনের শেষদিকে রবীন্দ্রনাথ হয়ে ওঠেন এক চিত্রকরও। তাঁর আঁকা ছবি আজ বিশ্বনন্দিত। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ক্রমে হয়ে ওঠে আরও গভীর, আরও আধ্যাত্মিক। তিনি তখন মানুষের বাইরের রূপ নয়, খুঁজেছেন অন্তরের আলোকসন্ধান। তিনি লিখেছিলেন “জীবনকে যেমন করে দেখেছি, মৃত্যুকেও তেমনি করিয়া দেখিতে চাই।” মৃত্যু তাঁর কাছে ছিল নতুন জীবনের দুয়ার।রবীন্দ্রনাথ এক প্রজন্মের নয়, অনন্তকালের কবি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধুমাত্র একজন সাহিত্যিক ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক চলমান বোধ, এক মানবিক আন্দোলনের মূর্ত রূপ। তাঁর জন্মদিন তাই নিছক স্মরণ নয়এটি আত্মার উৎসব, চেতনার উন্মেষ। ২৫শে বৈশাখে আমরা তাঁকে স্মরণ করি কেবল ফুল দিয়ে নয়, তাঁর চিন্তা ও আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে। যতদিন বাংলা থাকবে, যতদিন মননশীলতা থাকবে, ততদিন রবীন্দ্রনাথ থাকবেন আমাদের আত্মার মাঝে।আজ তাঁর জন্মদিনে আমরা যেন কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে পারি:“হে নূতন, দেখা দিক আর-বার, জন্মের প্রথম শুভক্ষণে!”
পোস্টের বিষয় | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্টকারী | তানহা তানজিল তরসা |
ডিভাইস | রেডমি নোট ১১ |
লোকেশন | পাবনা |
https://x.com/TanhaT8250/status/1921219043211833859?t=YoVr1LYOPy-BdMXUj1YNbw&s=19
https://x.com/TanhaT8250/status/1921219975903121472?t=f_qy-TaQ-NL75U_6BzeIPg&s=19
https://x.com/TanhaT8250/status/1921220263384895615?t=C3dMdVm73YmSJq7boYdNRw&s=19