জেনারেল রাইটিং: আত্মনির্ভরতা জীবনের এক অপরিহার্য পাঠ।
🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001।
হ্যালো বন্ধুরা..........
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আলোচনা করবো। আজ আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট লিখে শেয়ার করবো। লেখালেখি করতে আমি অনেক পছন্দ করি। আশাকরছি আমার লেখা জেনারেল রাইটিং আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা সবসময় অন্যের উপর নির্ভর করে জীবন কাটাতে অভ্যস্ত। কিন্তু বাস্তবতা হলো, জীবনে সফলতা ও সম্মান পেতে হলে সবচেয়ে জরুরি হলো আত্মনির্ভরতা। আত্মনির্ভরতা মানে শুধু নিজের উপার্জনে জীবনযাপন নয়, বরং নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে শেখা, নিজের কাজ নিজে করতে শেখা, এবং সমস্যার সমাধান নিজে খুঁজে বের করার মানসিকতা গড়ে তোলা।ছোটবেলা থেকেই যদি একটি মানুষকে সবকিছু অন্যে করে দেয়, সে কখনো পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠতে পারে না। তার চিন্তাশক্তি, কর্মক্ষমতা এবং আত্মবিশ্বাস দিনে দিনে ক্ষয় হতে থাকে। অন্যদিকে যে শিশু নিজে বই ব্যাগ গোছায়, নিজে ভুল করে শিখে নেয়, নিজের ছোটখাটো কাজ নিজে করে সে বড় হয়ে হয়ে ওঠে আত্মনির্ভর, দৃঢ়চেতা এবং আত্মবিশ্বাসী।আধুনিক বিশ্বে প্রতিযোগিতা এতটাই বেশি যে, এখানে টিকে থাকতে হলে আত্মনির্ভরতার কোনো বিকল্প নেই। একাডেমিক শিক্ষা যতই থাকুক, যদি একজন ব্যক্তি নিজের কাজ নিজে করতে না পারে, নতুন সমস্যার মুখে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারে, তবে সে জীবনে এগোতে পারবে না। আত্মনির্ভরতা একদিকে যেমন মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে, অন্যদিকে তা ব্যক্তি, পরিবার এবং জাতির সামগ্রিক উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করে।যেমন ধরো, একজন গৃহিণী যদি তার সংসারের ছোটখাটো বিষয়েও স্বামীর উপর নির্ভর করে থাকেন, তাহলে এক সময় তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। আবার একজন শিক্ষার্থী যদি সবসময় টিউটরের উপর নির্ভর করে থাকে, তাহলে তার স্বতন্ত্র চিন্তার শক্তি ক্ষীণ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে যে ছাত্র নিজের পড়া নিজে বোঝার চেষ্টা করে, নিজে সমস্যা সমাধান করে, সে ধীরে ধীরে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মানসিকতা গড়ে তোলে।তবে আত্মনির্ভরতার মানে এই নয় যে কাউকে সাহায্য নেওয়া যাবে না। বরং প্রকৃত আত্মনির্ভর মানুষ জানে কখন সাহায্য নিতে হয়, আর কখন নিজে সমস্যার সমাধান করতে হয়। সে কখনো অকারণে নির্ভরশীল হয় না।
বর্তমান তরুণ প্রজন্মের জন্য আত্মনির্ভরতা একটি চরম প্রয়োজনীয় শিক্ষা। অনেক সময় আমরা দেখি, যুবসমাজ শুধু চাকরির পিছনে ছুটছে, অথচ নিজের কোনো দক্ষতা গড়ে তুলছে না। অথচ যদি তারা প্রযুক্তি, হাতের কাজ, ব্যবসা বা অন্য কোনো ক্ষেত্রেও দক্ষতা অর্জন করে, তবে তারা নিজেরাই নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে।সবশেষে বলা যায়, আত্মনির্ভরতা শুধু একটি গুণ নয়, এটি জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য প্রয়োজন। এটি শুধু নিজের নয়, একটি জাতির মর্যাদা, সাফল্য এবং অগ্রগতির সোপান। আমাদের প্রত্যেকের উচিত ছোট ছোট কাজ থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে নিজেকে এমনভাবে গড়ে তোলা, যেন আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি, নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারি, এবং নিজের জীবনের দায়িত্ব নিজেই বহন করতে পারি।আমাদের চারপাশে এমন বহু মানুষ আছে, যারা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছেন নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে। শহর কিংবা গ্রামে সবখানেই এখন অনেক যুবক-যুবতী আছেন, যারা চাকরির জন্য অপেক্ষা না করে নিজে কিছু শুরু করার সাহস দেখাচ্ছেন। কেউ ছোট্ট একটি অনলাইন ব্যবসা করছেন, কেউ ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করছেন, কেউ আবার কৃষিকাজ কিংবা গৃহপ্রস্তুত পণ্যের ব্যবসা শুরু করেছেন। তাদের এই উদ্যোগই আত্মনির্ভরতার প্রকৃত উদাহরণ।এই আত্মনির্ভরতার চর্চা শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, চিন্তাধারার ক্ষেত্রেও জরুরি। আজকের সমাজে আমাদের এমন একটি মানসিকতা দরকার, যেখানে আমরা নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই নির্মাণ করার পরিকল্পনা করি। পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের উপর একান্ত নির্ভর না থেকে যদি প্রতিটি ব্যক্তি নিজেকে নিজের মতো গড়ে তোলে, তবে সেটাই হবে একটি উন্নত জাতির ভিত্তি।
আত্মনির্ভরতা আমাদের আত্মসম্মানবোধ জাগিয়ে তোলে। যখন আমরা নিজের পরিশ্রমে কিছু অর্জন করি, তখন তা শুধু আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নই আনে না একটি মানসিক তৃপ্তিও দেয়। এমনকি আমাদের ব্যর্থতাও তখন শিক্ষার অংশ হয়ে ওঠে, কারণ আত্মনির্ভর মানুষ ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেয়, দোষারোপে বিশ্বাস করে না।আজকের শিক্ষাব্যবস্থায়ও আত্মনির্ভরতার শিক্ষা থাকা দরকার। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে কীভাবে তারা বাস্তব জীবনে সিদ্ধান্ত নেবে, ঝুঁকি মোকাবিলা করবে, সমস্যা সমাধান করবে এবং সৃজনশীল চিন্তা করবে। এসব গুণ ছাড়া শিক্ষিত হওয়া মানে কাগজে-কলমে একটি সার্টিফিকেট অর্জন মাত্র।পরিশেষে বলা যায়, আত্মনির্ভরতা এমন একটি শক্তি যা ব্যক্তি, পরিবার ও জাতিকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এটি যেমন ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রতীক, তেমনি উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত ছোট থেকেই আত্মনির্ভরতার অভ্যাস গড়ে তোলা হোক তা সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, কাজের দায়িত্বে কিংবা জীবনের যেকোনো কঠিন মুহূর্তে।
পোস্টের বিষয় | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্টকারী | তানহা তানজিল তরসা |
ডিভাইস | রেডমি নোট ১১ |
লোকেশন | পাবনা |
https://coinmarketcap.com/community/post/358445967
https://x.com/TanhaT8250/status/1920263629297070267?t=ABYYATmuDdnNCt5tPKPipw&s=19
https://x.com/TanhaT8250/status/1920061973632373173?t=8zS0BP92Dghhmqs4W_E0Bw&s=19
https://x.com/TanhaT8250/status/1920062282249150943?t=78IWDG1AR8O8FupgBTn5mA&s=19