নদীর পাড়ে বন্ধুদের সাথে ভ্রমণের আনন্দময় গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

আসসালামুআলাইকুম/আদাব

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @alif111, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।

young-8208513_1280.jpg

source


মানুষের জীবনে ভ্রমণ এক অনন্য অভিজ্ঞতা। পড়াশোনা কিংবা কাজের চাপে যখন মন ক্লান্ত হয়ে যায়, তখন সামান্য একটি ভ্রমণই আমাদের নতুন প্রাণশক্তি এনে দেয়। কয়েকদিন আগে আমি ও আমার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিলে ঠিক করলাম, আমরা সবাই মিলে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীর তীরে একটি দিন কাটাবো। পরিকল্পনা হতেই সবার মনে আনন্দের ঝিলিক ফুটে উঠল।

সকালের প্রথম সূর্যের আলো গায়ে মেখে আমরা সবাই যাত্রা শুরু করলাম। হাতে ছিল খাবারের ঝুড়ি, কিছু বাদ্যযন্ত্র, আর ক্যামেরা। গ্রামের সরু পথ ধরে হেঁটে যখন নদীর পাড়ে পৌঁছালাম, তখন মনে হলো প্রকৃতি যেন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। নীল আকাশের নিচে দিগন্তজোড়া নদী, সাদা বকের সারি, আর হালকা বাতাসের মিষ্টি ছোঁয়া,সব মিলিয়ে এক অন্যরকম অনুভূতি।

আমরা নদীর পাড়ে বসে প্রথমেই নাস্তা করলাম। সকালের খোলা বাতাসে সাধারণ খাবারও কতটা সুস্বাদু লাগতে পারে, সেটা সেদিন নতুন করে অনুভব করলাম। খাওয়ার পর শুরু হলো হাসি-আড্ডা। কারও গল্প, কারও কৌতুক, আবার কারও গান,সব মিলিয়ে পরিবেশ মুহূর্তেই প্রাণবন্ত হয়ে উঠল।

কিছুক্ষণ পর আমরা নদীতে নৌকাভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিলাম। এক মাঝিকে ভাড়া করে সবাই নৌকায় উঠলাম। নৌকা ধীরে ধীরে যখন নদীর মাঝ বরাবর এগোতে লাগল, তখন মনে হচ্ছিল আমরা যেন এক নতুন জগতে প্রবেশ করছি। ঢেউয়ের মৃদু দোলায় নৌকা দুলছিল, আর চারপাশের দৃশ্য আমাদের মনকে মোহিত করে তুলছিল। এক বন্ধু বাঁশি বাজাতে শুরু করল, আরেকজন গান ধরল,মুহূর্তেই পরিবেশ ভরে উঠল সুরের মাধুর্যে।

নৌকা ভ্রমণের পর আমরা নদীর তীরে ফিরে এসে কিছু খেলা খেললাম। লাঠিখেলা, দৌড় প্রতিযোগিতা, এমনকি পানিতে পা ভিজিয়ে ছপছপ খেলাধুলাও বাদ গেল না। আমাদের হাসি-খুশি দেখে পাশের গ্রামের কিছু বাচ্চাও যোগ দিল। তাদের নিষ্পাপ হাসি আমাদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দিল।

বিকেলের দিকে আমরা আবার সবাই একত্রে বসে দুপুরের খাবার খেলাম। গ্রামের মাটির হাঁড়িতে রান্না করা ভাত, ডাল আর ভর্তা,এত সাদামাটা খাবারও যেন অমৃতের মতো লাগছিল। খাওয়ার পর আমরা নদীর পাড়ে শুয়ে শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলাম। ভেসে চলা মেঘগুলো যেন আমাদের কল্পনাকে আরও রঙিন করে তুলছিল।

শেষ বিকেলে সূর্য যখন ধীরে ধীরে পশ্চিম আকাশে লাল হয়ে নামতে শুরু করল, তখন নদীর পানিতে পড়া আলোয় চারপাশ যেন সোনালী আভায় ঝলমল করে উঠল। সেই দৃশ্যের সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে সেই অপূর্ব মুহূর্তকে চোখে-মনে ভরে নিলাম।

অবশেষে ফেরার সময় হলো। আমরা যখন গ্রামের পথে ফিরে চলছিলাম, তখন সবার মুখেই ছিল এক অদ্ভুত প্রশান্তি। ভ্রমণ শেষে আমরা বুঝলাম, প্রকৃতির সান্নিধ্যে বন্ধুদের সাথে কাটানো সময় জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ।এই ভ্রমণ শুধু আনন্দই দেয়নি, বরং আমাদের বন্ধুত্বকে আরও গভীর করেছে। আজও সেই দিনের স্মৃতি মনে করলে মন ভরে যায়, আর মনে হয়,নদীর পাড়ে সেই আনন্দময় দিনটি সত্যিই ছিল জীবনের এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।


Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqreqo2XAMzrcrFMezsQ2JYvnkCG8natanTeTWALXvA2X1jsqXD4Nf1w7BTTxEyx7JRMmmeNnz.png

ধন্যবাদ সকলকে✨💖

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZw7HFjCLMfDJx3zXx3jXPRfJr7otFtoRfKMmN9rJzpemZGKH1sKHrmfJREqyC...9xLrN7kkzEr3nKpRPcTj6NSZrBzYGbr93rAK2CAinZaxUP2fFhka9ZrPQeMBYoU2r2avcVEfb5m3uJAqvfZ4UMDVMeWvTdncVc9TonRvS2kneML5dvyoyUQZKC.png

ফোনের বিবরণ

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণরাইটিং ✨
মডেলএম-৩১
ক্যাপচার@alif111
অবস্থানসিরাজগঞ্জ -রাজশাহী- বাংলাদেশ।

banner-abbVD-1.png

আমার পরিচয়

IMG-20240117-WA0007.jpg
আমার নাম মোঃআলিফ আহমেদ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের একজন ছাত্র। আমি ছোট বেলা থেকেই আর্ট করতে পছন্দ করি।তাই অংকন করতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই আমি সময় পেলেই বিভিন্ন চিত্র অংকন করি।বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে ও ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবি ভালো লাগে।🌼💖🌼

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল এবং আমার পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।🌹🌻

Posted using SteemX

Sort:  

🎉 Congratulations!

Your post has been upvoted by the SteemX Team! 🚀

SteemX is a modern, user-friendly and powerful platform built for the Steem community.

🔗 Visit us: www.steemx.org

✅ Support our work — Vote for our witness: bountyking5

banner.jpg