চারিদিকে সব আপন মানুষ, তবে প্রত্যেকে নিজ স্বার্থ পর্যন্ত সীমা'ব'দ্ধ 😊।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো ,"' চারিদিকে সব আপন মানুষ, তবে প্রত্যেকে নিজ স্বার্থ পর্যন্ত সীমা'ব'দ্ধ 😊"'।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

জীবন বড় অদ্ভুত এক যাত্রা। পথে দেখা হয় অগণিত মুখ, অনেকে হয় “আপন”, অনেকে আবার শুধু পরিচিতির সীমায় আবদ্ধ থাকে। তবে আজকের এই লেখায় আমরা একটু গভীরভাবে ভাবব এমন একটি বিষয় নিয়ে, যা প্রায় প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে কখনো না কখনো কাঁটা হয়ে বিঁধেছে “সবাই আপন, কিন্তু প্রত্যেকেই নিজের স্বার্থ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।”এই বাক্যটি প্রথম শুনলে একটু হতাশাজনক মনে হলেও, বাস্তব জীবনে এর প্রতিফলন আমরা বারবার লক্ষ্য করি। শৈশব থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত, আমরা একেকটি সম্পর্কে আবদ্ধ হই । বন্ধু, পরিবার, সহকর্মী কিংবা প্রতিবেশী। প্রথম দিকে সব সম্পর্কই নির্মল ও নিঃস্বার্থ বলে মনে হয়। কিন্তু সময়ের স্রোতে ধীরে ধীরে সেই সম্পর্কের আসল চেহারা ধরা পড়ে।

প্রতিটি সম্পর্কই শুরু হয় ভালোবাসা, আন্তরিকতা ও বিশ্বাস দিয়ে। ছোটবেলায় বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা চকোলেট, মা-বাবার কাছে আবদার করা খেলনা কিংবা ভাইবোনের সঙ্গে নিরীহ ঝগড়া।সবই ছিল অকৃত্রিম, স্বার্থহীন ভালোবাসার চিহ্ন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্ক গুলোর রঙ বদলাতে থাকে। তখন আর সম্পর্কের ভিত্তি শুধু আবেগে দাঁড়িয়ে থাকে না, বরং স্বার্থ সেখানে আস্তে আস্তে জায়গা করে নেয়।স্বার্থ মানেই কিন্তু খারাপ কিছু নয়। প্রত্যেক মানুষই নিজের প্রয়োজন, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। সমস্যা হয় তখনই, যখন কোনো মানুষ সম্পর্কের পর্দার আড়ালে নিজের স্বার্থসিদ্ধির খেলায় মেতে ওঠে ।এবং প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আপন জনকেই অবহেলা করতে দ্বিধা করে না।তবে বিষয় গুলো একেবারে নেতিবাচকভাবে দেখার কিছু নেই। মানুষ জন্মগত ভাবে নিজের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেয় ,এটা প্রাকৃতিক।

আমি একটা বাস্তব উদাহরণ দিই ,কেউ অসুস্থ হলে সবাই দেখতে আসে, যতক্ষণ না তারা বুঝতে পারে এতে তাদের আর লাভ নেই। কেউ বিপদে পড়লে সবাই সহানুভূতি জানায়, যতক্ষণ না তাদের সাহায্য করার প্রয়োজন পড়ে। এই দ্বিচারিতা আমাদের সমাজে একেবারেই নতুন নয়।

আমরা অনেকেই হয়তো এমন অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছি, যখন বিপদের সময় খুব কাছের কেউ পাশে থাকেনি। অথচ ভালো সময়ে তারাই আমাদের চারপাশে ঘুরে বেড়াত। অনেক সময় দেখা যায়, যাকে আমরা নিজের চেয়েও বেশি আপন ভেবেছিলাম, সে-ই সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয়। তখনই বুঝি, ভালোবাসা আর স্বার্থ একই সরল রেখায় হাঁটে না।

এই পৃথিবীতে সত্যিকারের আপন খুব কমই পাওয়া যায়, যাদের ভালোবাসা শর্তহীন। তারা আমাদের জীবনের আশীর্বাদ। তাদের সংখ্যা হয়তো হাতে গোনা, কিন্তু তাদের উপস্থিতি মনকে শান্তি দেয়। অন্যদিকে যারা স্বার্থের জন্য কাছে আসে, তাদেরও দায়ী না করে কেবল একটা পাঠ হিসেবে গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। প্রতিটি সম্পর্ক আমাদের কিছু না কিছু শিক্ষা দেয় কে আপন, কে দূর, কে সময়ের বন্ধু আর কে বিপদের।

তবে কি সবাই স্বার্থপর না, মোটেও না। এই লেখার উদ্দেশ্য কারো প্রতি সন্দেহ বা বিষোদ্গার সৃষ্টি করা নয়। বরং একটি সতর্কতা, একটি উপলব্ধির জায়গা তৈরি করা। আমরা যেন সম্পর্ককে কেবল আবেগ দিয়ে না মাপি, বরং বুঝে নিতে পারি কার আন্তরিকতা কতখানি গভীর, আর কারটা শুধু প্রয়োজনের উপর দাঁড়িয়ে আছে।

সবাই নিজের মতো করে জীবন বেছে নেয়। তাই আমরা যেন কাউকে দোষ না দিয়ে নিজেদের সম্পর্ককে আরও সচেতনভাবে গড়ে তুলি। নিজের ভালোবাসা, সাহায্য বা আন্তরিকতা যেন এমন হয়, যা কিছু পাওয়ার জন্য নয় ।বরং দেয়ার আনন্দে ভরা।

সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কিছু কৌশল ,

• আশা কমান, শ্রদ্ধা বাড়ানো।
• স্বার্থ দেখে দুঃখ না পেয়ে, নিজের অবস্থান বুঝে চলা।
• অপ্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে, পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা।
• নিঃস্বার্থ সম্পর্ক যত্ন করে রক্ষা করা ,এগুলোই জীবনের আসল রত্ন।

জীবন চলার পথে সবাই আমাদের আপন হতে পারে, কিন্তু সবাই চিরস্থায়ী আপন হয় না। কিছু মানুষ প্রয়োজন ফুরালেই দুর্লভ হয়ে যায়।আবার কিছু মানুষ প্রয়োজন ছাড়াও পাশে থাকে। তাই নিজেকে কখনোই অন্যের ব্যবহারের ভিত্তিতে বিচার করবেন না। আপনি কার জন্য কী করেছেন, সেটাই আপনার মানবিক পরিচয়। অন্যরা কী করল না করল, সেটা তাদের চরিত্রের পরিচয়।তাই হ্যাঁ, চারিদিকে সব আপন মানুষ।কিন্তু প্রত্যেকেই নিজ স্বার্থ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।তবে আমরা যারা নিঃস্বার্থ হতে পারি, তাদের মধ্যেই সত্যিকারের মানুষ বাস করে।যারা স্বার্থের সীমা ছাড়িয়ে আপনতা দিতে জানে। সেটাই জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।