কথা বলার প্রয়োজনীয়তা।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
কথা বলা একটা সুন্দর ক্ষমতা যে ক্ষমতা ভগবান সবাইকেই দিয়েছে। কিন্তু আমাদের এই কথা বলার ভাষা এক একজনের এক এক রকম। পশু পাখির কথা বলার ভাষা এক রকম, আমাদের মানুষের কথা বলার ভাষা আর একরকম। আবার দেখা যায় মানুষের বসবাসের জায়গার ওপর ভিত্তি করে কথা বলার ভাষাও আলাদা আলাদা হয়। কিছু মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে কিছু মানুষ ইংরেজিতে কথা বলে কিছু মানুষ তামিল ভাষায় কথা বলে আবার কিছু মানুষ হিন্দীতে কথা বলে। এই পৃথিবীতে কথা বলার জন্য অনেক ভাষা আছে যা গুনে শেষ করা যাবে না। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষা আবার আমাদের এই ভারতবর্ষেই অনেকগুলি ভাষা আছে যার ব্যবহার করে আমরা প্রতিটা মানুষ অন্য মানুষের সাথে কথা বলি। এই কথা বলাটা খুবই প্রয়োজনীয় একটা বিষয়। কথার মাধ্যমে আমাদের মনের ভাব বিনিময় হয়। কথার মাধ্যমে আমাদের প্রয়োজন আমরা অপরজনকে বোঝাতে সক্ষম হই।
অনেক সময় দেখা যায় আমাদের মনে কারোর উপর অভিমান জমে থাকে বা অনেক সময় কারোর কোন কাজ অপছন্দ হলে আমাদের রাগ হয়, এইসব রাগ-অভিমান নিমেষে মিটিয়ে দেওয়া যায় কথা বলার মাধ্যমে। দুজনেই ঠান্ডা মাথায় কথা বলে একে অপরের সমস্যা একে অপরকে বলে নিমেষে রাগ-অভিমান মিটিয়ে ফেলা যায়। অর্থাৎ কথা বলার মাধ্যমে অনেক সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। অনেক সময় সন্তান অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে চলতে থাকে আর সেই সমস্যার মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসার কোন উপায় তারা খুঁজে পায় না। সেই সময় তারা যদি মন খুলে তার সমস্যার কথা, তাদের বাবা-মাকে বলতে পারে তাহলে তারা সে সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। কারণ বাবা-মা তাদের থেকে অনেক বেশি অভিজ্ঞ আর সন্তানের কিসে ভালো হয় সেটা বাবা-মা জানে তাই সবসময় বাবা-মার সাথে সব কথা শেয়ার করা খুবই প্রয়োজন। আর তেমনি বাবা মায়ের উচিত সন্তানের সাথে সব সময় নিজের মনের কথা শেয়ার করে বন্ধুসুলভ আচরণ করা তাহলে সন্তান তাদের মনের কথা বলতে দ্বিধাবোধ করেনা।
অনেক সময় দেখা যায় আমাদের মনে পাহাড় সমান কষ্ট জমে যায়। আর এই কষ্ট আমরা না পারি কান্না করে কমাতে আর না পারি সহ্য করতে। তখন যদি কারো সাথে কথা বলে সেই কষ্টগুলো শেয়ার করা যায় তাহলে মনটা অনেক হালকা অনুভব হয়। তবে অবশ্যই নিজের কষ্ট কাউকে বলার আগে ভেবে নিতে হবে যে সে তোমার বিশ্বস্ত ব্যক্তি কিনা। তোমার কথা শুনে সে উপহাস করবে না তোমার কথা শুনে তোমাকে সঠিক উপদেশ দেবে। অনেকে আবার কারোর কষ্টের কথা শুনে সেটা আবার অন্য কাউকে বলে দেয় এবং সেটাকে বিকৃতভাবে ছড়াতে থাকে সেক্ষেত্রে কষ্ট কমার থেকে আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তাই কোন বিশ্বস্ত ব্যক্তি ছাড়া নিজের মনের কথা বলা কখনোই উচিত নয়। অপাত্রে ঘি ঢালার মত যে তোমার কষ্ট বা তোমার মনের কথা বুঝবে না তাকে নিজের মনের কথা না বলাই ভালো। কারণ হয়তো সে তোমার মনের কথা শুনে বা তোমার অসময়ের সুযোগ নিয়ে সে তোমার কোন ক্ষতি করে দিতে পারে।
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অনেক সময় কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়ে যায়। অনেক সময় এই ভুল বোঝাবুঝির কারণে অনেকটা দূরত্ব বেড়ে যায় দুজনের মাঝখানে। আর সেই দূরত্ব মেটানো সম্ভব শুধুমাত্র একে অপরকে নিজের সমস্যার কথা শেয়ার করে। আর তারা একে অপরকে যদি নিজের মনের কথা বলে দিতে পারে তাহলে বেশিরভাগ সময়ে এই ভুল বোঝাবুঝি মিটে যায় এবং তারা আগের মতই একসাথে সুখে শান্তিতে থাকতে পারে। শুধু স্বামী স্ত্রীর মধ্যেই ভুল বোঝাবুঝি হয় এমনটা নয় প্রত্যেকটা রিলেশন এর মধ্যেই ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে তাই প্রত্যেকটা রিলেশন ভালো রাখার জন্য তাদের নিজের সমস্যা সম্পর্কে কথা বলা উচিত এবং নিজের মনের কথা সুন্দরভাবে শেয়ার করা উচিত। তাহলে জীবনের অর্ধেক সমস্যা সমাধান হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ কথা বলা প্রত্যেকটা রিলেশনেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই আমাদের উচিত আমাদের প্রিয় মানুষের সাথে অনেকটা বেশি সময় কাটানো এবং মন খুলে কথা বলা।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।