বর্তমানে চিকিৎসা একটি ব্যবসা।

in আমার বাংলা ব্লগlast month


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17404499912896156559658905217029.jpg



সোর্স



আগেকার সময় আমরা চিকিৎসক অর্থাৎ ডাক্তারকে দ্বিতীয় ভগবান বলে গণ্য করতাম। আর আগেকার ডাক্তারেরা তুলনামূলক অনেকটাই সৎ ছিলেন এবং তার কর্তব্য নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করতেন। তার সাথে এমনও দেখা যেত যে যেসব ব্যক্তি আর্থিক দিক থেকে অনেক বেশি দুর্বল তাদেরকে কোন টাকা ছাড়াই চিকিৎসা করে দিতেন এমনকি ওষুধপত্র ফ্রিতে দিয়ে দিতেন। এর থেকেই বোঝা যেত যে আগেকার সময় ডাক্তারদের লক্ষ্যই ছিল মানব সেবা করা এবং মানুষকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা। তবে এখনকার সমাজে এসব জিনিস দেখতেই পাওয়া যায় না। কারণ এখন চিকিৎসা ব্যবস্থা হয়ে গেছে একটা ব্যবসা অর্থাৎ অর্থ উপার্জনের একটি উপায়। আর এই অর্থ উপার্জনের জন্য কিছু কিছু ডাক্তার মানুষকে সুস্থ করা তো দূরে থাক সুস্থ মানুষকেও বিভিন্ন রোগের কথা বলে অসুস্থ করে ফেলছে। আর সেই জন্য মানুষ ডাক্তারের নাম শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। কারণ তারা বুঝতেই পারছে না যে তাদের শারীরিক কোন সমস্যা হলে কোথায় কোন ডাক্তারের কাছে যাবে এবং কোন ডাক্তারের কাছে যাবে না। কোন ডাক্তার তাকে ভালোভাবে চিকিৎসা করবে এবং কোন ডাক্তার শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য চেষ্টায় থাকবে এবং ভালোমতো চিকিৎসা না করে উল্টো আরো অসুস্থ করে দেবে।


আসলে আমরা বিগত বছর গুলিতে এইসব ব্যাপারে অনেক বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি যে ডাক্তারের অবহেলাতে অনেক রোগীর প্রাণ গেছে। অনেক পরিবার তার প্রিয় মানুষকে হারিয়েছে। আর তারপরে যদিও সেই ডাক্তারের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় তবুও সে ক্ষমতার বলে শাস্তির হাত থেকে বেঁচে যাবে কিন্তু আমরা আমাদের প্রিয় মানুষকে কখনোই ফিরে পাবো না। আর কিছু কিছু সময় তো দেখা যায় কিছু কিছু ডাক্তার শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্য মৃত মানুষকেও আটকে রেখে দেয় আর যতক্ষণ না চিকিৎসার পুরো টাকাটা হাসপাতালে বা নার্সিংহোমে না দেওয়া হয় ততক্ষণ সেই মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবারের কাছে দেওয়া হয় না। এছাড়াও সাধারণ মানুষ ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা অথবা বড় কোন শারীরিক সমস্যায় যেসব ওষুধ প্রতিনিয়ত খেয়ে চলেছে সেইসব ওষুধ যে নষ্ট হওয়ার মেয়াদ উত্তীর্ণ করেছে কিনা সেটাও বোঝা খুবই কষ্টকর। কারণ বর্তমান সময়ে এমন অনেক জায়গা তৈরি হয়েছে যেখানে ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও আরো এক দু বছর বাড়িয়ে ওষুধে সাল এবং বিভিন্ন রকমের তথ্য দেওয়া হয়ে থাকে। একটি বিশেষ জাতীয় তরলের সাহায্যে এই ওষুধের উত্তীর্ণ মেয়াদ এবং বিভিন্ন রকমের তথ্য সহজেই মুছে ফেলা যায় এবং পুনরায় সেটা লেখাও যায়। তাই আমরা কখনো বুঝতেও পারি না যে আমরা মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেয়ে চলেছি নাকি সঠিক ওষুধ খাচ্ছি।


আসলে বর্তমান সময়ে মানুষ তার মনুষত্ব ভুলে চলেছে তাই কখনো তারা এটা মনেই করে না যে তাদের কিছু খারাপ কর্মের জন্য বহু মানুষের বিভিন্ন রকমের বিপদ হতে পারে এমনকি প্রাণহানিও ঘটতে পারে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে যেহেতু অনেক সহজে অনেক বেশি পরিমাণ অল্প উপার্জন করা যায় তাই কিছু অসৎ ব্যক্তিও জালিয়াতির মাধ্যমে চিকিৎসক হয়ে উঠছে এবং মানুষের প্রতিনিয়ত ক্ষতি করে যাচ্ছে। আর এইসব ব্যক্তির কারণেই অনেক ভালো সৎ চিকিৎসক প্রতিনিয়ত অসৎ এবং খারাপ চিকিৎসকের তালিকায় পড়ে যাচ্ছে। কারণ একজন অসৎ চিকিৎসক যখন কোন রোগীর ভুল চিকিৎসা করছে তখন সেই রোগী দ্বিতীয় কোন ভালো সৎ চিকিৎসককেও বিশ্বাস করে উঠতে ভয় পায়। আর বর্তমান সময়ে পড়াশোনা এত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে যে একটি ডাক্তার যে সঠিক ভাবে পড়াশোনা করে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করে একটি ভালো ডাক্তার তৈরি হবে এমনটা হওয়াও অনেক বেশি কষ্টকর। কারণ বর্তমানে অর্থের মাধ্যমে অসম্ভব জিনিস ও সম্ভব করা যাচ্ছে। তাই অল্প বিদ্যা এবং অল্পজ্ঞানেই কিছু কিছু ডাক্তার মানুষের ভুল চিকিৎসা করতে দ্বিধাবোধ করছে না যার ফলে ঘটে যাচ্ছে বিভিন্ন রকমের দুর্ঘটনা।


আসলে বর্তমান সময়ে ডাক্তার হওয়ার মানেটাই বদলে গেছে। আগেকার সময়ে মানুষ মানব সেবার জন্য ডাক্তার হতে চাইলেও বর্তমান সময়ে মানুষ একটি মোটা অর্থ উপার্জনের প্রক্রিয়া হিসেবে এই ডাক্তারি প্রফেশনকে বেছে নেয়। তাই অনেক সময় দেখা যায় কোন দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগী অথবা কোন মুমূর্ষ রোগী চিকিৎসার জন্য গেলে সবার আগে বলা হয় কাউন্টারে গিয়ে টাকা জমা দিতে, এবং তারপরে রোগী দেখা হয়। আমাদের সমাজ যেদিকে যেভাবে এগোচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে দিন যত যাবে মানুষের মনুষত্ব ততটাই কমতে থাকবে। আর তার সাথে অর্থ উপার্জনের জন্য মানুষ চরমতম খারাপ কাজ করতেও দ্বিধাবোধ হয়তো করবে না। তাই আমাদের যদি বাঁচতে হয় এবং সমাজকে ভালো দিকে নিয়ে যেতে হয় তাহলে আমাদের নিজেদেরকেও ভালো হতে হবে এবং সমাজ কেও ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। আর তার সাথে অনেক বেশি পড়াশোনা করে এবং পারিপার্শ্বিক দিক থেকে অনেক জ্ঞান অর্জন করতে থাকতে হবে। কারণ একমাত্র বিদ্যা, বুদ্ধি এবং জ্ঞানই পারে আমাদেরকে এবং আমাদের সমাজকে উন্নতির শিখরে তুলতে।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Sort:  
 last month 

চমৎকার বিশ্লেষণ' বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন, যা সত্যিই চিন্তার বিষয়। চিকিৎসা পেশা যখন ব্যবসায় পরিণত হয়, তখন সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়। সৎ ও মানবিক চিকিৎসকদের কদর যেন কমে না যায়, সেটাই এখন সবচেয়ে জরুরি। সচেতনতা বাড়ানো ও নৈতিকতা বজায় রাখাই পারে এই অবস্থা পরিবর্তন হতো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি বিষয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last month 

আসলে বর্তমান সবাই সর্বপ্রথম আগে টাকা কে মুল্যায়ন করছে।এক সময় আমাদের সমাজে চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল টাকা বিহীন। কিন্তু বর্তমান সময়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা হয়েছে একদম ব্যবসার মতোই। এখন টাকা ছাড়া রোগীর সেবা তো দুরের কথা, রোগীর হাত পর্যন্ত ধরে না ডাক্তার রা।

 last month 

1000031510.jpg

1000031509.jpg

1000031508.jpg

 last month 

একদম ঠিক বলেছেন আপু। আগেকার সময়ের ডাক্তারদের সবাই দ্বিতীয় বিধাতা মনে করত। কিন্তু বর্তমান সময় ডাক্তারের কাছে যেতে ভয় লাগে। কারণ কোন ডাক্তার কেমন হয় আর কেমন ওষুধ দেয় কিভাবে সুস্থতা পাবে সেটাই অনেক চিন্তার বিষয় হয়ে যায়। মানুষ অসুস্থতায় যদি একবার পড়ে তাহলে সে অসুস্থতা থেকে ফিরতে পারে না। অসুস্থতা নিয়েই তাকে চলতে হয়। কারণ ডাক্তাররা অনেক সময় সুস্থতা থাকলেও অসুস্থ হবার জন্য ওষুধ চালিয়ে নিতে বলে। ডাক্তারি এখন একটা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে এজন্যই সবাই এখন ডাক্তারের নাম শুনলে আতঙ্কে ওঠে।