অন্নের অপমান।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
মা অন্নপূর্ণা দেবী আমাদের এই অন্ন প্রদান করে থাকেন। আর এই অন্ন দিয়েই আমরা আমাদের ক্ষুধা নিবারণ করি। কিন্তু এই অন্নের যদি অপমান করা হয় তাহলে মা অন্নপূর্ণা দেবী রুষ্ট হন। পৃথিবীতে সকলে এত অর্থ উপার্জন করছে এবং এত কষ্ট করে চলেছে নিজের ক্ষুধা নিবারণের জন্য। এই ক্ষুধা নিবারণের কাজটি যদি সঠিকভাবে না করা হয় এবং খাবার অনিষ্ট করা হয় তখনই অন্নপূর্ণা দেবী তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। আমরা অনেক সময় দেখতে পারি অনেক মানুষ এমন আছেন যারা রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে গিয়ে অনেক বেশি অর্ডার করেন এবং অল্প একটু কিছু খেয়ে বাকি খাবার নষ্ট করে ফেলে এতে অন্নের অপমান হয়। আমাদের সবার উচিত আমরা যেটুকু পরিমাণ খেতে পারি সেইটুকু পরিমাণ রেস্টুরেন্টে গিয়ে অর্ডার দেওয়া। আমরা আর্থিকভাবে খুব বেশি সচ্ছল আছি বলে টাকা পয়সা এভাবে নষ্ট করা বা লোক দেখানো মোটেও শোভনীয় নয়।
অনেকে আবার দেখা যায় সংসারে ঝগড়া ঝামেলা করে সেই রাগ খাবারের উপর দেখায় অর্থাৎ খাবার ছুড়ে ফেলা বা খেতে বসে না খেয়ে খাবার ফেলে উঠে যাওয়া এতে অন্নের অপমান হয়। দেখা যায় অনেক সংসারে দিন আনে দিন খায় পরিস্থিতি অথচ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি হলে না খেয়ে থাকে এবং রান্না খাবার নষ্ট করে। আবার অনেক সময় খাবার সময় ঝগড়া অশান্তি হলে খাবার ছুড়ে ফেলে বা খাবার না খেয়ে খাবারে জল ঢেলে দেয়। অনেকে আবার দেখা যায় খাবার খাওয়ার সময় খাবার চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে খায় এবং থালার পাশেও পড়ে থাকে। এইসব আচরনও এক প্রকার অন্নের অপমান।এইসব সংসারে দেবী অন্নপূর্ণা কখনোই বসবাস করেন না এবং মুখ ফিরিয়ে নেন। সেই জন্য এইসব সংসারে কখনোই অর্থের অভাব এবং অন্নের অভাব যেতেই চায়না। অনেক পরিবার এমনও আছে যারা আর্থিক দিক থেকে সচ্ছল থাকা সত্ত্বেও এই অন্নের অপমান করায় ধীরে ধীরে আর্থিক দিক থেকে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
আমরা জানি সম্মান দিলে সম্মান পাওয়া যায় তেমনি অন্নের সম্মান করলে দেবী অন্নপূর্ণা খুশি হয়। এবং যে পরিবারের মানুষ অন্নের সম্মান করে দেবী অন্নপূর্ণা সেই পরিবারকে কখনোই অন্নের অভাব দেন না। আমরা যেমন কর্ম করবো তেমনি ফল আমরা পাব তাই আমরা যখন অন্নের অপমান করবো অন্ন নষ্ট করব এবং ফেলে দেবো পরবর্তী সময়ে আমরা আমাদের সেই কর্মের ফল অবশ্যই পাব। অর্থাৎ আমরা প্রচন্ড খিদে পেলেও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারি যেখানে আমাদের ক্ষুধা নিবারণের কোন উপায় থাকবে না এবং আমরা খিদের জন্য প্রচুর কষ্ট পাব। আমার মনে হয় এটা যেমন আমাদের কর্মফল তেমনই দেবী অন্নপূর্ণার দেওয়া আমাদের ওপর শাস্তি। সেইজন্য হয়তো ছোটবেলায় আমার মা বলতো যে, খাবার নষ্ট করলে ভগবান শাস্তি দেয়।
তাই আমরা যদি ভালোভাবে সুস্থ ভাবে বাঁচতে চাই তাহলে অন্নের অপমান করা আমাদের মোটেও উচিত হবে না। সংসারে ঝগড়া অশান্তি যাই হোক খাবার ফেলা বা নষ্ট করা মোটেও উচিত নয়। কারণ এই খাবার আমাদের সংসারে যোগান দেওয়ার জন্য অনেক কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করতে হয়। আর এই কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করে সেই অর্থ দিয়ে নিয়ে আসা সব কিছু যদি নষ্ট করা হয় তবে মা লক্ষ্মী ও অসন্তুষ্ট হয়ে পড়বে। আর সেই কারণেই সংসারে কখনো কোন উন্নতি হতে পারবে না। একদিকে কিছু মানুষ অন্নের অপমান করে অন্যদিকে কিছু মানুষ দেখা যায় সেই অন্যের জন্য কষ্ট পায় এবং সামান্য কিছু খাবারের জন্য মানুষের কাছে হাত পেতে বেড়ায়। পেটের ক্ষুধায় কষ্টে তারা ঠিকমতো রাতে ঘুমাতেও পারে না। অন্নের অভাবে কিছু মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যায়। তাই আমাদের কখনোই অন্নের অপমান করা উচিত নয়।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।