বর্তমানে ভিক্ষা একটি পেশা।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17416090645855338962011835070115.jpg



সোর্স



ছোটবেলায় আমরা দেখেছি মানুষ যখন খুবই অসহায় পরিস্থিতিতে পড়ে যায় অথবা শারীরিক অবস্থা এমন হয়ে যায় যে সে কোন কর্ম করে অর্থ উপার্জন করতে পারে না তখন সেইসব মানুষ ভিক্ষা করে। কিন্তু বর্তমানে ভিক্ষা একটি পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের চারপাশে অনেক ক্রাইম হতে দেখা যায় যেখানে ছোট ছোট বাচ্চাদের শরীর বিকলাঙ্গ করে অথবা শারীরিক বিভিন্ন ক্ষতি করে তাদের জোর করে ভিক্ষা চাইতে বাধ্য করা হয়। আমরা মানুষ আমাদের মনের মধ্যে একটা খারাপ লাগা কাজ করে এইসব বাচ্চাদের দেখলে আর সেই জন্যই আমরা বিনা দ্বিধায় এসব বাচ্চাদের আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করার চেষ্টা করে থাকি। যার ফলে দেখা যায় এইসব ক্রাইম এবং ছোট শিশু বাচ্চাদের উপর অত্যাচার দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এছাড়া অনেক সুস্থ মানুষ আছে যারা শারীরিক পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জনে অলসতা করে। অর্থাৎ এইসব মানুষ পরিশ্রমে প্রচুর পরিমাণে ভয় পায়। তাই তারা কখনোই কোন কাজ করতে চায় না অথচ মনে করে বসে বসে কিভাবে ভালো অর্থ উপার্জন করা যায় আর দেখা যায় এইসব মানুষই নিজের মান সম্মান সব ত্যাগ করে ভিক্ষার পথ অবলম্বন করে থাকে।


আসলেই কিছু কিছু মানুষের মান সম্মান বোধ থাকে না তারা নিজেদের অতটাও ভালোবাসে না তাই তারা নোংরার মধ্যে বসে থেকে নিজের মান সম্মান ত্যাগ করে ভিক্ষা করতে বসে যায়। আমাদের পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ সেই মানুষের মধ্যে যদি কমপক্ষে ৫-৬ হাজার মানুষ ১ টাকা করে দেয় তাও প্রতিদিন একজন ভিক্ষুকের বিনা পরিশ্রমে বেশ মোটা টাকা উপার্জন হতে পারে। বিনা ইনভেস্টমেন্টে ভালো টাকা উপার্জন করার জন্য অনেকেই স্বেচ্ছায় এইসব ভিক্ষার পথ বেছে নেয়। আবার আমাদের চারিপাশে দেখা যায় কিছু কিছু ট্রান্সজেন্ডার মানুষ অর্থাৎ না পুরুষ আর নাই মহিলা হয় তারা কিন্তু চাইলেই ভালো সৎ পথে কিছু ভালো কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ট্রান্সজেন্ডার নিজে পরিশ্রম না করে অন্য মানুষদের সামনে হাত পেতে ভিক্ষা নিয়েই নিজের সংসার চালায়। ট্রেনে, বাসে, রাস্তায় যেখানেই দেখা যায় এইসব ট্রান্সজেন্ডার মানুষগুলো সুন্দর করে সেজেগুজে ভিক্ষা করতে চলে আসে। আর আমরাও স্বেচ্ছায় এদের ভিক্ষা দিয়ে থাকি কারণ ছোটবেলা থেকে শুনেছি যে এদের অভিশাপ নাকি অনেক বেশি কার্যকরী হয়। তাই এরা যখনই মানুষের কাছে অর্থ সাহায্য চায় তখনই প্রায় মানুষই নির্দ্বিধায় নিজের সমর্থ্য অনুযায়ী অর্থ দিয়ে থাকে। যদিও এদের মধ্যে সবাই সমান নয়, বর্তমানে দেখা যায় অনেক ট্রান্সজেন্ডার মানুষই পড়াশোনা করে ভালো কর্মের দ্বারা অর্থ উপার্জন করে থাকে।


বর্তমান সময়ে অসহায় মানুষদের তুলনায় দেখা যায় ইচ্ছাকৃত নিজের শরীরের ক্ষতি করে অসহায় হওয়ার নাটক করেই বেশিরভাগ মানুষ ভিক্ষা করে থাকে। তবে এইসব মানুষের কাছে অর্থের কোন মূল্য থাকে না এরা যেখানে সেখানে অযথাই অর্থ অপচয় করে থাকে। সবাই অবশ্য এই একই দলে পড়ে না, কিছুদিন আগে একটা ইউটিউব ভিডিওতে দেখছিলাম একটি লোক ভিক্ষা করেই নিজের তিন তালা বাংলো বাড়ি বানিয়েছে। এবং সেখানে সে অনেক ভালো এলাহী ভাবেই বসবাস করে থাকে। তবে বাড়ি দেখলে কোনভাবেই বোঝা যাবে না যে এটি একজন ভিক্ষুকের বাড়ি, আর এই বাড়িটি ভিক্ষা করে সেই অর্থের দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। আসলে যারা ভিক্ষা করে তারা প্রতিদিন কম করে চার-পাঁচ হাজার অর্থ উপার্জন না করে বাড়িতে ফেরেনা আসলে ভিক্ষা করতে গেলে তাদের প্রতিদিন বেশ ভালো অর্থ উপার্জন হয়ে যায়। যার ফলে মাসে একটা মোটা অর্থ তারা পেয়ে থাকে এবং এদের সংসার চালাতে কোনই সমস্যা হয় না। আসলে একটা চাকরিজীবী মানুষের থেকেও অনেক ভালো অর্থ উপার্জন করে থাকে যারা ভিক্ষা করে। এই ভিক্ষুকরা যখন আমাদের কাছে আসে ভিক্ষা চাইতে তখন যদি এদের বলা হয় যে ভালো করে পড়াশোনা করতে অথবা দোকানে নিয়ে গিয়ে খাওয়ানোর কথা তখন তারা বলেই বসে যে আমার পড়াশোনার দরকার নেই এবং দোকানে গিয়েও খায় না।


এদের শুধুমাত্র উদ্দেশ্য থাকে অর্থ উপার্জন করার। দিন যত যাচ্ছে আমাদের চারপাশের পরিবেশ অনেকটাই খারাপ হয়ে যাচ্ছে এই ভিক্ষুকদের জন্য। কারণ আমরা পরিশ্রম করে অনেক কষ্টে যে অর্থ উপার্জন করি, সেই অর্থ বিনা পরিশ্রমে তারা উপার্জন করে চলেছে। এছাড়াও পরিবেশের অনেক বেশি ক্ষতি করে চলেছে। পড়াশোনা না করার ফলে জ্ঞান বুদ্ধি না থাকায় এসব মানুষ প্রতিনিয়ত ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলেছে। তবে আমাদের ভিক্ষা দেওয়াটা যে একদম ভুল সেটা কিন্তু নয়। অনেক মানুষ আছে যারা প্রকৃতপক্ষে অসহায় আবার অনেকে আছে যাদের সন্তান বৃদ্ধ মা-বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এমন কিছু বয়স্ক মানুষ আছে যারা ভিক্ষা করেই এবং মানুষের দেওয়া খাবার খেয়েই প্রাণ বাঁচায় তাদেরকে অবশ্যই প্রতিনিয়ত আমাদের সাহায্য করা উচিত। রাস্তার পাশে দেখা যায় অনেক মানুষ রাতে ঘুমিয়ে থাকে এদের না থাকে কোন বাসস্থান না থাকে কোন কিছু কর্ম করার ক্ষমতা। তাদেরকে অবশ্যই আমাদের সাহায্য করতে হবে নয়তো তারা অনাহারে মারা যেতে পারে। তবে মানুষকে সাহায্য করার আগে অবশ্যই আমাদের বুঝে শুনে সাহায্য করতে হবে যে, সে প্রকৃতপক্ষে অসহায় নাকি ভিক্ষা করা তার পেশা। এইসব ভিক্ষা জাতীয় খারাপ কাজকে কখনোই প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না নয়তো আমাদের সমাজ ধীরে ধীরে অবনতির দিকে এগিয়ে যাবে।



আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Sort:  
 2 months ago 

1000033752.jpg

1000033751.jpg

1000033750.jpg

 2 months ago 

আপনি একদম ঠিক বলেছেন আপু। বর্তমান সময়ে এমন কিছু সাধু ব্যক্তি রয়েছে যারা বিভিন্ন ধরনের ভান ধরে ভিক্ষা করে। বিশেষ করে শহর এলাকার মধ্যে গেলেই দেখা যায় এমন হাজারো ভিক্ষুক। তারা মাস শেষে বড় একটি এমাউন্টের টাকা উপার্জন করছে এই ভিক্ষার মাধ্যমে।

 2 months ago 

আসলে ভিক্ষাবৃত্তি একসময় সত্যিকারের অসহায় মানুষের শেষ অবলম্বন ছিল, কিন্তু এখন এটি অনেকের জন্য পেশা হয়ে গেছে। অনেকেই বিনা পরিশ্রমে টাকা উপার্জনের সহজ পথ হিসেবে ভিক্ষাকে বেছে নিচ্ছে, যা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে প্রকৃত অসহায় ও বৃদ্ধদের অবশ্যই সাহায্য করা উচিত, যেন তারা অভুক্ত না থাকে। আমাদের সচেতন হয়ে বুঝে-শুনে দান করা দরকার, যাতে মিথ্যা অসহায়দের প্রশ্রয় না দেওয়া হয়।আর মিথ্যা অসহায়দের প্রশ্রয় আমি এটা একদমই পছন্দ করি না। ধন্যবাদ দারুণ একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।

 2 months ago 

এই ভিক্ষাবৃত্তি পেশাটির মধ্যে অদ্ভুত রকমের কিছু জিনিস আছে। কিছু মানুষকে ইচ্ছা করে জোরপূর্বক ভিক্ষুতে পরিণত করা হয়। আবার অনেকের স্বভাবে ভিক্ষা করেন। যেমন আমাদের এখানে একজন মানুষ আছেন তিনি সরকারি চাকরি করে রিটায়ার করেছেন। কিন্তু বর্তমানে মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করেন। এই ধরনের মানুষরা আসলে সমাজকে দূষিত করছে। এই ভিক্ষাবৃত্তি পেশাটি বর্তমানে বিভিন্নভাবে এক মানুষ ঠকানো পেশায় পরিবর্তিত হয়েছে।।

 2 months ago 

আজকাল অনেকেই সহজ পথে অর্থ উপার্জন করতে ভিক্ষা বেছে নিচ্ছে, যা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে যাদের সত্যিকারভাবে সাহায্যের প্রয়োজন, তাদের সাহায্য করা উচিত। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো খুবই জরুরি, যেন মিথ্যা অসহায়দের প্রশ্রয় না দেওয়া হয়। অনেক ভালো একটি বিষয় তুলে ধরেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে।