পুষ্টিকর খাবার।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আমরা একটু খেয়াল করলে দেখতে পারবো আগেকার সময়ে মানুষ বেশিরভাগ বার্ধক্য জনিত কারণে মারা যেত। আগেকার মানুষের আয়ু ছিল অনেক বেশি, তবে দিন যত যাচ্ছে প্রতিনিয়ত গড় আয়ু কমতে থাকছে। এর কারণ হলো আমাদের খাওয়া-দাওয়া এবং জীবনযাপন। আগেকার সময় দেখা যায় আমাদের দাদু এবং তার পূর্বপুরুষেরা অনেক বছর অব্দি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করেছে। তাদের কম বয়সে ছিল না কোন হাঁট ব্যথা, কোমর ব্যথা না ছিল পেটে ব্যথা। সেই সময় তারা যেসব খাবার খেত সেই সব খাবারই ছিল পুষ্টিতে ভরা। সেই সময় খাবারে এত পরিমাণ ভেজাল মেশানো হতো না। তারা মোটামুটি যেসব খাবার খেত তার সবই ছিল খাঁটি। আর সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটা সেটা হল তারা কখনোই বাইরের ভাজাপোড়া খারাপ খাবার খাওয়া পছন্দ করত না। যদি কোন কিছু মুখরোচক খাবার খাওয়ার ইচ্ছা করতো তাহলে তারা বাড়িতেই সেটা তৈরি করে খেত। কিন্তু বর্তমান সময় আমাদের জীবনযাপন অনেকটাই বদলে গেছে। আমাদের খাবারে আগেকার তুলনায় অনেক বেশি ভেজাল। বর্তমান সময়ের খাঁটি খাবার পাওয়া অসম্ভব। তাই আমাদের শরীরেও কম বয়স থেকেই হাঁটু ব্যথা, কোমর ব্যথা, এবং পেটে ব্যথা দেখা যায়। বাজারে সবজি থেকে শুরু করে চাল, ডাল এমনকি জলে এখন বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল মেশানো হয়।
চারিদিকে এত বেশি ভেজাল খাবার হয়ে গেছে যে তার মধ্যে পুষ্টিকর খাবার কোনটি সেটা বেছে নেওয়া অনেক বেশি কষ্টকর। আর বর্তমানে আমরা যেভাবে নিজেই নিজের শরীরের ক্ষতি করি সেটা আর বলার কথা নয়। আমরা জানি যে বাইরের খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর তবুও জেনেশুনে বুঝে আমরা সেই বাইরের খাবারটাই প্রতিনিয়ত খেয়ে চলেছি শুধুমাত্র আমাদের মুখরোচক সুস্বাদু খাবার খেতে ভালো লাগে সেই জন্য। কিন্তু এই খাবার প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরে গিয়ে আমাদের যে কতটা পরিমাণ ক্ষতি করে চলেছে সেটা আমরা নিজেরাও কখনো চিন্তাও করি না। শুধুমাত্র বাইরের খাবারই যে আমাদের শরীরের ক্ষতি করে এমনটা নয়। ঘরে তৈরি করা অনেক বেশি মসলাদার এবং অনেক বেশি শুকনো লঙ্কা দিয়ে তৈরি করা খাবারও আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। আর এই সব খাবারের জন্য আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের অসুবিধা সৃষ্টি হয়। আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি অর্গান অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং অর্গানের কাজ ব্যাহত হয়। যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যারামের সৃষ্টি হতে থাকে।
খাদ্য আমাদের শরীরকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে আর সেই খাদ্যই যদি আমরা সঠিকভাবে না খাই এবং খারাপ খাবার খাই তাহলে শরীরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না এবং আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আমরা দীর্ঘ সময়ে বেঁচে থাকি এই খাদ্যের ওপরই নির্ভর করে। খাদ্য আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে তাই আমরা দীর্ঘ বছর বেঁচে থাকি এবং সঠিকভাবে কাজকর্ম করতে পারি। আমরা যদি খাদ্য গ্রহণ করা শুধুমাত্র কয়েক ঘন্টার জন্য বন্ধ করে দিই তাহলেই বুঝতে পারব আমাদের শরীর কতটা নির্ভরশীল এই খাদ্যের উপর। আমরা যদি ১০-১৫ ঘন্টা খাদ্য গ্রহণ না করে থাকি তাহলেই আমাদের মাথা ঘোরানো শুরু হয়ে যাবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে যাবে সময়ের সাথে সাথে আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আমরা লক্ষ্য করতে পারি। তাই খাদ্য যখন আমাদের শরীরের জন্য এতটাই প্রয়োজনীয় একটা জিনিস তাহলে আমাদের অবশ্যই আমাদের শরীরের প্রয়োজনএর দিকে খেয়াল করা উচিত এবং আমাদের শরীরের প্রয়োজন অর্থাৎ খাদ্য সঠিক পরিমাণে এবং সঠিকভাবে গ্রহণ করা উচিত। কারন অনেক সময় আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলি সেটাও আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতি করে।
আসলে প্রত্যেকটা জিনিসের যেমন একটি সঠিক পরিমাণ আছে এবং কোন জিনিসই অতিরিক্ত ভালো নয় তেমন খাদ্য আমাদের শরীরের জন্য অতিরিক্ত ভালো নয় নির্দিষ্ট পরিমাণ মতোই আমাদের খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। বাইরের এই অপুষ্টিকর এবং ভাজাপোড়া অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে আমাদের সব সময় দূরে থাকা উচিত। কারণ এতে আমাদের কোলেস্ট্রল বেড়ে যেতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। তাই আমরা সবসময় চেষ্টা করব বাড়িতে তৈরি করে পুষ্টিকর এবং সুস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করার। ফল এবং সবজি প্রতিদিন আমাদের খাওয়া উচিত। ফল এবং সবজিতে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি উপকরণ উপস্থিত। আমাদের শরীর সুস্থ থাকার জন্য ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন, জিংক, ইত্যাদি সব উপকরণ এই ফল এবং সবজির মাধ্যমেই পেয়ে থাকি যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই অযথা আজেবাজে অপ্রয়োজনীয় ক্ষতিকর খারাপ খাবার না খেয়ে আমাদের সব সময় পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং সুন্দরভাবে সুস্থভাবে বাঁচতে হবে। আগেকার মানুষের মতো আমরা এখন তেমন পুষ্টিকর এবং ভালো খাবার পাই না তবু আমাদের চেষ্টা করতে হবে বর্তমানে যে সব খাবার প্রস্তুত আছে তা থেকেই বেছে প্রতিনিয়ত পুষ্টিকর এবং ভালো খাবার খাওয়ার। তাহলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে রোগ ব্যারাম দূরে থাকবে এবং আমরা দীর্ঘ বছর অব্দি সুস্থভাবে বাঁচতে পারব।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
দারুন লিখেছেন আপু ভীষণ ভালো লাগলো। খাদ্য খেয়ে আমরা বেঁচে থাকি আর সেই খাদ্য যদি আমরা সঠিক এবং নিরাপদ ভাবে না খায় তাহলে বেঁচে থাকাই মুশকিল। তবে বাজারে বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ খাবারই ভেজাল এবং কেমিক্যাল মেশানো থাকে। তাই সতর্কতার সাথে নিরাপদ খাবার গুলো বেছে নেওয়া মুশকিল। আপনি খুব সুন্দর ভাবে প্রতিটি বিষয় তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপু।