ভিক্ষুক।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ আমি আমাদের দেশের ভিক্ষুক সম্পর্কে আমার কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png
সোর্স



বর্তমান সময়ে সারা পৃথিবীতে অন্যতম একটি বড় সমস্যা হলো ভিক্ষুক। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজকর্মে বাইরে চলাফেরা করতে হয়। এই চলার টাইমে আমরা রাস্তাঘাটে বিভিন্ন বয়সের ভিক্ষুক দেখতে পাই। যারা দিনের পর দিন ভিক্ষা করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। এদের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক ভিক্ষুকদের সংখ্যা তুলনামূলক হারে বেশি। এর প্রধান কারণ হলো দেশে সুষ্ঠু শিক্ষার অভাব অথবা চাকরির অভাব অথবা কাজের অভাব। এই তিনটি সমস্যার কারণে আমাদের দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।



এছাড়াও ভিক্ষার মাধ্যমে বিনা পরিশ্রমে প্রচুর টাকাও ইনকাম করা যায় কিন্তু। বর্তমানে রাস্তাঘাটে চলতে গেলে ভিক্ষুকদের এক টাকা দুই টাকা দিলে তাদের একটু রাগ হয়। কারণ তাদের চাহিদা আরো বেড়ে গেছে। কিছু কিছু পূর্ণবয়স্ক পুরুষ মহিলা যারা এই ভিক্ষাবৃত্তির পথ গ্রহণ করেছে। এসব ব্যক্তিরা চাইলে বাইরে থেকে কর্ম করে অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু অলসতা এবং বেশি টাকার লোভে তারা ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করে।

এছাড়াও আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশে গরিব লোকেদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে প্রচুর বেশি। আমাদের এই পৃথিবীতে একশ্রেণীর লোক আছে যারা শুধুমাত্র অর্থের জন্য নানা দুর্নীতি মূলক কাজ করে থাকে। বর্তমান সময়ে চাকরির বাজার খুবই কঠিন। একটা ভালো চাকরির আশায় বহু ছেলে-মেয়ে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে। কিন্তু একতল অসাধু ব্যক্তির ফলে এসব চাকরি যোগ্য ছাত্রছাত্রীরা পায় না। যাদের বাবার প্রচুর টাকা রয়েছে তারাই পায়। এর ফলে এসব গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা চাকরির অভাবে অনেকে ছোটখাটো কাজ করে। এছাড়াও কেউ কি আবার ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করে।



বর্তমান সময় সারা বিশ্বের সবথেকে বড় সমস্যা হল এই ভিক্ষুক সমস্যা। আসলে বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে আমাদের দেশে এই ভিক্ষুক সমস্যার প্রধান কারণ হলো গরিব, বেকার, পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাব, সুষ্ঠু ঘরের অভাব, টাকার অভাবে তাদের মেয়েদের বিয়ে দেওয়া, বিভিন্ন ধরনের কঠিন রোগ। এগুলোই এই সমস্যা সৃষ্টির জন্য প্রধান কারণ।

আসলে এই ভিক্ষুকদের বেশিরভাগই বিভিন্ন শহর এলাকায় দেখা যায়। আসলেই ভিক্ষুকরা সারাদিনে বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করে বেড়ায়। এইসব ভিক্ষুকদের ভিতরে বেশিরভাগ ভিক্ষুক তাদের জীবন জীবিকা চালানোর জন্য ভিক্ষা করে থাকে। আবার কিছু কিছু ভিক্ষুক আছে যারা ভিক্ষা করে নেশা জাতীয় দ্রব্য কেনে। আবার কিছু কিছু ব্যক্তি আছে যারা তাদের সন্তান এবং স্ত্রীকে ভিক্ষা করার জন্য জোর করে বাইরে পাঠায়। আবার কিছু অলস শ্রেণীর লোক আছে যারা কর্ম না করে শুধুমাত্র ভিক্ষা করে জীবন চালাতে চাই। আসলে এইসব ব্যক্তিরা সমাজে ঘৃণিত।



বর্তমান সময়ে কিছু কিছু ভিক্ষুকদের আমরা রাস্তাঘাটের দেখতে পাই যারা চলাফেরা করতে অক্ষম। সারাদিন তারা স্টেশন বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ড বিভিন্ন মার্কেটে ভিক্ষা করে থাকে। সকাল হতেই তাদের নির্দিষ্ট জায়গা দেখা যায়। আবার সন্ধ্যার পর অর্থাৎ একটু রাত হলেই তারা আবার কোথাও হারিয়ে যায়। আসলে সংসারের এই বেকার লোকগুলোকে অর্থাৎ যারা হাঁটতে চলতে পারেনা কথা বলতে পারে না তাদের পরিবারের লোকজন ভিক্ষাবৃত্তি করার জন্য তাদের এই নির্দিষ্ট স্থানে রেখে যায় এবং রাতে এসে পুনরায় নিয়ে যায়। তারা সারাদিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ভিক্ষা করে। কখনো কি ভেবে দেখেছেন মানুষ কতটা নিষ্ঠুর।

বর্তমান সময়ে ট্রেনে ভ্রমণ করা খুব দুর্লভ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি পকেটে ১০০ টাকা নিয়ে ট্রেনে উঠলে কয়েক স্টেশনের ভিতরেই এত ভিক্ষুক আসবে যে আপনি এক টাকা করে দিচ্ছেন লাগলে আপনার টাকা কয়েক মিনিটের ভিতরে শেষ হয়ে যাবে। এদের মধ্যে কেউ রয়েছে দৃষ্টিহীন আবার কেউ রয়েছে প্রতিবন্ধী। আরেকটি নতুন ভিক্ষার সিস্টেম হচ্ছে ডক্টরের প্রেস্ক্রিপশন দেখিয়ে ভিক্ষা চাওয়া। আমি তো অবাক যে একজন ভদ্রমহিলা প্রায় আট-দশ বছর ধরে ভিক্ষা করছেন কারণ তার স্বামীর ক্যান্সার হয়েছে। আমরা সবাই জানি যে ক্যান্সারের রোগী বেশি দিন বাঁচতে পারেন না। কিন্তু এই মহিলা তার স্বামীর নাম দিয়ে প্রায় আট-দশ বছর ভিক্ষা করছেন। এই মহিলা চাইলে বাইরে গিয়ে কর্ম করে ইনকাম করতে পারে। কিন্তু অলসতার কারণে তিনি ভিক্ষাবৃত্তিকে গ্রহণ করেছেন।

আরেকটি ঘটনা হলো আসলে এটা কিন্তু সত্যি ঘটনা। আমার বাড়ি থেকে কয়েকটা বাড়ি পর একজন ভিক্ষুক থাকেন। অবশ্য তিনি পূর্ণবয়স্ক অবস্থায় একটা রোগে তার চোখ খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু ওই ব্যক্তি প্রতিদিন তার স্ত্রীকে নিয়ে খুব ভোরে ভিক্ষা করতে বের হন এবং দুপুরের পর পর আবার পুনরায় বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু বাড়িতে আসার সময় উনি প্রায় প্রতিদিন দুই বোতল মদ কিনে নিয়ে আসে। আসলে ছোটবেলা থেকে দেখছি তো। বাড়িতে মদ কিনে এনে মদ খেয়ে বাড়িতে সব সময় ঝামেলা অশান্তি করেন। আসলে লোকটি খুব অসভ্য প্রকৃতির একটি লোক। আর এইসব লোকের কারণে সমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আসলে উনি অন্ধ লোক এটা ঠিক। আর এর জন্য উনি ভিক্ষাও করেন তাও ঠিক আছে। কিন্তু ভিক্ষা করে তার টাকা দিয়ে প্রতিদিন মদ খান এটা কেউই পছন্দ করেন না।



আর এর ফলে আমি কর্ম সক্ষম ব্যক্তিদের দেখলে তাদের কখনোই ভিক্ষা দেই না। এছাড়াও ট্রেনে আমরা অনেক প্রতিবন্ধী, দৃষ্টিহীন ব্যক্তিদের দেখতে পাই যারা ট্রেনে বাদাম, কলম, বই, খাতা বিক্রি করেন। আসলে তারা তাদের এই শারীরিক সমস্যাকে কখনোই প্রাধান্য দেয় না। তারা সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায়। তাই আমি তাদের দেখলে তাদের কাছ থেকে কিছু না কিছু জিনিস অবশ্যই কি। আমার মত প্রায় সবাই তাদের কাছ থেকে জিনিসপত্র বেশি করে কিনেন।



আসলে আমাদের দেশের সরকার গরীব শ্রেণীর লোকেদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করেছেন। এই রেশন প্রতিমাসেই সরকার বিনামূল্যে দিয়ে থাকে। কিন্তু এর শর্তেও এই ভিক্ষুক শ্রেণীর লোকের সংখ্যা কন্ট্রোলে আনা যাচ্ছে না। আর এর ফলে দেশের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কিছু কিছু ব্যক্তি যারা তাদের পরিচয় গোপন করে এই ভিক্ষাবৃত্তি করে থাকেন। ভিক্ষাবৃত্তি করতে করতে তারা বিভিন্ন অরাজকতামূলক কাজ করে থাকেন। আর তাই আমাদের সবার উচিত সরকারের হাতে হাত মিলিয়ে দেশের এই ভিক্ষুক শ্রেণীর লোকেদের সাহায্য করে বিভিন্ন কাজে লিপ্ত করা।


আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।

11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। কিন্তু আমার রাষ্ট্রীয় ভাষা হলো হিন্দী। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 2 years ago 

আসলে যে সমস্ত মানুষগুলো প্রচন্ড রোদ বৃষ্টির মধ্যে অক্ষম মানুষগুলোকে দিয়ে ভিক্ষা করিয়ে নেয় তারা মানুষ নামের অমানুষ। আমরা আমাদের চলার পথে এবং আমাদের হাট বাজারে অসংখ্য পরিমাণে ভিক্ষুক দেখতে পায়। সরকার যদি ভিক্ষুকদের জন্য যথার্থ এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করত তাহলে ভিক্ষুকদের জন্য খুবই কল্যাণকর হতো। দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

এইসব ভিক্ষুকদের সংখ্যা প্রায় সব দেশে রয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রশাসনও কোন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনা।