জেনারেল রাইটিং পোস্ট || বিপদ যেন পিছু ছাড়ছে না

in আমার বাংলা ব্লগ20 days ago

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।



প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। এই পোস্টের টপিক হচ্ছে,বিপদ যেন পিছু ছাড়ছে না। আপনারা অনেকেই জানেন যে, ১৪ই এপ্রিল ২০২৫ দুপুর ১টা বাজে আমার যমজ ছেলের জন্ম হয়। সিজারের মাধ্যমেই সন্তান দুটির জন্ম হয়। তবে ডেলিভারি সময়ের অনেক আগেই অর্থাৎ ৮ মাসের আগেই তাদের জন্ম হয়। তাই দুই বেবির ওজন তুলনামূলকভাবে কম এসেছে। ১ বেবির ওজন এসেছিল ২,০৬০ গ্রাম এবং আরেক বেবির ওজন এসেছিল ১,৭৮০ গ্রাম। তাছাড়া একজনের ঠান্ডার সমস্যাও ছিলো। তাই বাধ্য হয়ে ২ জনকে এনআইসিইউ তে রাখতে হয়েছিল সপ্তাহ খানেক। তো এনআইসিইউ থেকে ২১ তারিখে বাসায় আসার পর বাচ্চা দুটি আলহামদুলিল্লাহ ভালোই ছিলো।


student-6976999_1280.jpg

Source


কিন্তু ৪/৫ দিন ধরে আমার ছোট বেবির শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছে। তাই আমার বাসার পাশে থাকা দ্যা বারাকা হসপিটালে গেলাম। তো সেই ডক্টর এক্সরে করে দেখলো শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেশ ভালোই রয়েছে। তাছাড়া ইনফেকশন হয়ে গিয়েছে। তারপর তিনি বললো যেহেতু বাচ্চার ওজন একেবারে কম,তাই এখনই ইনজেকশন দিতে চাচ্ছি না। তো তিনি এন্টিবায়োটিক সহ কিছু ঔষধ দিলেন। আর বললেন সমস্যা বেশি মনে হলে সরাসরি সেই হসপিটালে চলে যেতে। তাহলে ইনজেকশন পুশ করতে হবে। আর সমস্যা না হলে তিনদিন ঔষধ খেয়ে, সিবিসি টেস্ট করে রিপোর্ট নিয়ে উনার সাথে দেখা করতে। তো পরের দিন সকালে দেখলাম শ্বাসকষ্ট বেশি। তাই সাথে সাথে হসপিটালে নিয়ে গেলাম। কিন্তু ডক্টর তো বিকেলে আসবে, তাই ডিউটি ডক্টর বললো ইমার্জেন্সি তে যোগাযোগ করতে। ইমার্জেন্সি তে গিয়ে দেখলাম ডক্টর ওটি তে রয়েছে।


তাই আর সেখানে ডক্টর না দেখিয়ে, রাস্তার অপর পাশে অবস্থিত মা হসপিটালে চলে গিয়েছিলাম। সেখানকার শিশু বিশেষজ্ঞ ডক্টর সাজেস্ট করলো সাথে সাথে ইনজেকশন পুশ করার জন্য। তিনি বললেন প্রতিদিন দুইবার করে ইনজেকশন দিতে হবে অর্থাৎ সকালে এবং রাতে। তো একবার ইনজেকশন দেওয়ার পরেই তো বাচ্চা সারারাত ঘুমাতে পারেনি ব্যথায়। তাই ভাবলাম অন্য ডক্টর দেখাবো। গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ গত পরশুদিন সকালে সিরিয়াল দিয়ে চাষাড়া তে অবস্থিত পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে গেলাম সিনিয়র ডক্টর দেখাতে। তিনি শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং আমাদের নারায়ণগঞ্জে একসময় বেশ সুনাম ছিলো উনার। কিন্তু তিনি ইদানিং বার্ধক্যজনিত সমস্যার কারণে, সেভাবে রোগী দেখতে পারছেন না। তাছাড়া তিনি এমনিতেও নাকি অসুস্থ থাকেন। তাই ২,০০০ টাকা ভিজিট দিয়ে উনাকে দেখানোর পর,আমার কাছে মনে হলো উনি নিজেই অনেক অসুস্থ।


তাই উনার প্রেসক্রিপশন ফলো না করে,আমি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পাশে থাকা মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডক্টরের কাছে নিয়ে গেলাম আমার বাচ্চাকে। সেই ডাক্তারকে বেশ ভালোই মনে হলো। তাছাড়া সেই ডক্টরের বেশ সুনাম রয়েছে। তো পরবর্তীতে আমার দুই বাচ্চাকেই দেখালাম সেখানে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি উনার কাছেই বাচ্চাদের দেখাবো। উনি বললেন বাচ্চার যেহেতু শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তাই এন্টিবায়োটিক ঔষধ দিলেন এবং নেবুলাইজারে গ্যাস দিতে বললেন। তাছাড়া উনি বললেন, বাচ্চাদের ওজন ৫ কেজি হওয়ার আগে, কোনোভাবেই ইনজেকশন দেওয়া ঠিক হবে না। তবে তিনি ইকো কালার ডপলার টেস্ট করে রিপোর্ট দেখাতে বললেন। তারপর সেদিনের মতো বাসায় চলে আসলাম। কিন্তু সেদিন রাত ১টার দিকে বাচ্চার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।


তাই সাথে সাথে গাড়ি বের করে ঢাকা শ্যামলী তে অবস্থিত শিশু হসপিটালে চলে গেলাম। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর ভালো কোনো সমাধান না পেয়ে, ভোরবেলা বাসায় চলে এসেছিলাম। গতকালকে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ইকো কালার ডপলার টেস্ট করে, আজকে ডক্টরকে রিপোর্ট দেখালাম। ডক্টর বললো রিপোর্ট আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে। তবে শ্বাসকষ্টের সমস্যার এখনো সমাধান হয়নি। ডক্টর বললো ৫ দিন এন্টিবায়োটিক খেলে আশা করি ঠিক হয়ে যাবে এবং আগামী মঙ্গলবার ডক্টর বলেছে উনার কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আসলে বাচ্চাদের অসুখ বিসুখ হলে মাথা ঠিক থাকে না। কয়েকদিন ধরে ঘুম খাওয়া দাওয়া কিছুই হচ্ছে না ঠিকমতো। প্রতিদিন হসপিটালে যেতে হচ্ছে। তাই কমিউনিটির কাজও সেভাবে করতে পারছি না। আপনারা সবাই আমার টুইন ছেলের জন্য বেশি বেশি দোয়া করবেন। যাতে করে তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে।



2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

পোস্টের বিবরণ

ক্যাটাগরিজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরি@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy S24 Ultra
তারিখ১০.৫.২০২৫
লোকেশননারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328CzpX9QvbjSPXbrW8KqUMMwTrRCn3xcSQ6EA6R67TcD5gLnqAWu8W41xe41azymkyM19LEXr548bkstuK4YE8RXJKQJWbxQ1hVAD.gif

আমার পরিচয়

IMG-20240212-WA0036.jpg

🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr67352Jpu6E5J43D5L7yhn5d5CrcpnTvTLcF5db3ftZK7V9GzsAkLjb3PriF27x53soS8yKq9EnT1Gez2W6L2XUZu7jXnMduxdzGd4QzpYoozSDTPz3jUEkZ8x9rPrFry12vk2pkpsukTxq2kgJhF2zDYwrV.png

cyxkEVqiiLy2ofdgrJNxeZC3WCHPBwR7MjUDzY4kBNr81RRg3nBstm6z4qmufGsvFT24rqXwtpQD564XVCvACqesd3KULjLw7vQPhCNBNpraDPBk9z8jqn3ncuykugzMhQ2.png

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PxWHDWW9CETD5B5Jw9Q6ERAnD25KhyHKAX53jBLJKQRtPJf1WFG3aJd6PXbp2rpTXdWPxnRnq65CqtM8PawHiD5knScnfCbWvcVRuFVv1rtwzsXe59AixEGDGYZT2EWzPMzrWjWrbujcJd79Q1Sjs2X.gif

puss_mini_banner2.png

PUSS COIN: BUY/SELL

Sort:  
 20 days ago 

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 20 days ago 

বাচ্চাদের অসুস্থতার কথা শুনে খুবই খারাপ লাগলো ভাইয়া। আসলে এরকম পরিস্থিতিতে নিজেকে ঠিক রাখা অনেক মুশকিল। দোয়া করি বাচ্চারা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে।

 20 days ago 

আসলেই আপু এসব পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 20 days ago 

সৃষ্টিকর্তা আপনার যমজ ছেলেদের জন্য সবকিছু সহজ করে দিন। অকালপ্রসূত শিশুদের যত্ন নেওয়া সত্যিই অনেক কষ্টকর ও মানসিকভাবে ক্লান্তিকর কাজ, বিশেষ করে যখন তারা অসুস্থ থাকে। আপনার ধৈর্য, চেষ্টা ও দায়িত্ববোধ সত্যিই অনুকরণীয়। ইনশাআল্লাহ, খুব শিগগিরই আপনার বাচ্চারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। আপনি ও আপনার পরিবার অনেক বেশি দোয়ার হকদার। আমরা সবাই তাদের জন্য দোয়া করছি। সৃষ্টিকর্তা হেফাজত করুন।

 20 days ago 

আমিন। বেশ ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 18 days ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে একটু খারাপ লাগলো ভাই।আসলেই সন্তানের কিছু হলে পিতা মাতা তখন ঠিক থাকে না পাগল হয়ে যায়।তবে আপনি আপনার বাচ্চাকে ঠিক করার জন্য যে ভাবে দৌড়াদৌড়ি করছেন এটা আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক।যাই হোক আপনার দুটো বাচ্চার জন্য আমার মন প্রান থেকে দোয়া রইল এবং খুব শীঘ্রই আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে সুস্থতা দান করবেন। ধন্যবাদ ভাই আমাদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 18 days ago 

সন্তান দুটি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে গেলেই মনটা শান্ত হবে ভাই। আমিন। এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।