জেনারেল রাইটিং পোস্ট || স্বার্থের দুনিয়ায় কেউ কারো আপন নয়
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। এই পোস্টের টপিক হচ্ছে,স্বার্থের দুনিয়ায় কেউ কারো আপন নয়। আসলে দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে, ততই যেনো মানুষের মায়া মমতা কমে যাচ্ছে। অর্থাৎ মানুষের প্রতি মানুষের মায়া মমতা নেই বললেই চলে। আত্মীয় স্বজন,বন্ধু বান্ধব,পাড়া প্রতিবেশী থেকে শুরু করে, পরিবারের মানুষদের জন্যও তেমন মায়া মমতা নেই। সেজন্য কারো বিপদে কাউকে পাওয়া যায় না এখন। কিন্তু একটা সময় দেখা যেতো,শুধু পরিবারের সদস্য না,বরং প্রায় সবাই মানুষের বিপদে ঝাপিয়ে পড়তো। আর এখন বিপদে ঝাপিয়ে পড়ার কথা বাদ-ই দিলাম, বরং একে অপরের ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লাগে বেশিরভাগ মানুষ। এমনকি পরিবারের সদস্যরাও ক্ষতি করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত হয়ে থাকে।
যাইহোক মূল কথায় ফেরা যাক, বেশ কয়েক বছর আগে আমাদের পাশের মহল্লার একটি পরিবারে,খুবই বাজে একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনা ঘটার পর থেকে, পরিবারটা একেবারে তছনছ হয়ে যায়। সেই ছেলের নাম ছিলো ওমর। তার পরিবারে তার ওয়াইফ,ছোট্ট একটি সন্তান এবং তার মা ছিলো। অর্থাৎ তাদের সংসারে মাত্র ৪ জন সদস্য। বলতে গেলে একেবারে সুখী একটি পরিবার। তো ওমর তার ওয়াইফকে ভীষণ ভালোবাসতো। ওমর মূলত ব্যবসা করতো তাদের মহল্লায়। ওমরের ওয়াইফ যেটা বলতো,ওমর সবসময় সেটা শোনার চেষ্টা করতো এবং তার ওয়াইফের সকল ইচ্ছা পূরণ করার চেষ্টা করতো। কিন্তু ওমরের মা এই ব্যাপারটা ভালোভাবে নিতো না। ওমরের মায়ের কাছে মনে হতো,ওমর তার ওয়াইফকে বেশি প্রাধান্য দেয় তার মায়ের চেয়ে। আর সেজন্য ওমরের মা মনে মনে হিংসা করতো ওমরের ওয়াইফকে।
তবে ওমর কিন্তু তার মায়ের যথেষ্ট খোঁজ খবর নিতো সবসময়। তবুও ওমরের মা মনে মনে হিংসা পোষণ করতো এবং এক পর্যায়ে ওমরের সংসার ভাঙ্গার চেষ্টা শুরু করলো। ওমরের মা বিভিন্ন ধরনের তাবিজ এনে,ঘরের বিভিন্ন জায়গায় রেখে দিতো। যাতে করে ওমর তার বউকে পছন্দ না করে অর্থাৎ ঘৃণা করা শুরু করে। তো এক পর্যায়ে ওমর তার বউকে একেবারে সহ্য করতে পারতো না। এরপর সে অন্য মহিলার পাল্লায় পড়ে গেলো। পরবর্তীতে ওমর সেই মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে এবং সেই মহিলার সাথে সংসার করতে শুরু করে। যদিও সেই মহিলার বাড়ি ছিলো অনেক দূরে। তো ওমর তার প্রথম স্ত্রী এবং সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয় না। তাছাড়া ওমর তার বাসায়ও আসে না তার স্ত্রী এবং সন্তানকে দেখতে। ওমরের মা গত বছর মারা গিয়েছে।
কিন্তু ওমরের সংসারটা একেবারে তছনছ করে দিয়েছে। কিছুদিন আগে শুনলাম ওমরের দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে সন্তান হয়েছে এবং ওমর নাকি বিদেশে চলে গিয়েছে। আর এদিকে ওমরের প্রথম স্ত্রী এবং সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছে,ওমরের প্রথম স্ত্রীর দুই ভাই। ওমরের প্রথম স্ত্রী সত্যিই খুব ভালো মানুষ। সে এখনও সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে ওমরের বাসায় বসবাস করছে। যাইহোক ওমরের মায়ের জন্য ওমরের স্ত্রী এবং সন্তান বেশ কষ্টে জীবনযাপন করছে। তাদের জীবনটা কিন্তু এমন হওয়ার কথা ছিলো না। আসলে আপন মানুষেরা চাইলে ক্ষতি করতে পারে খুব সহজেই। কারণ আমরা তাদেরকে মন থেকে বিশ্বাস করি এবং সেই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে তারা আমাদের ক্ষতি করতে পারে। পরিশেষে একটা কথাই বলতে চাই,বর্তমানে চারিদিকে স্বার্থপর মানুষের ছড়াছড়ি। তাই সবসময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত আমাদের। নয়তো সুন্দর জীবনটা নরকে পরিণত হতে বেশি সময় লাগবে না।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S24 Ultra |
তারিখ | ৩০.৬.২০২৫ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
ডেইলি টাস্ক স্ক্রিনশট এবং লিংক:
https://x.com/mohin3242127/status/1939393372998996244?t=GNuEb5vBF4z-D1AOOX3OVw&s=19
https://x.com/mohin3242127/status/1939567513970569236?t=x4cVabVUtkboQLSuEhP_zA&s=19
https://x.com/mohin3242127/status/1939568909834932291?t=_CSfeCGYelUFSA3J3dakzQ&s=19
https://x.com/mohin3242127/status/1939569471569698983?t=Be_98qq-AzBkX3b6MiZSyw&s=19
https://x.com/mohin3242127/status/1939570693513117803?t=e4g7VPPfyKm7NlIz5EctbQ&s=19
X-promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার পোস্ট পড়ে ওমর এর জন্য অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ওমরের মার এমন কাজ করা কখনো উচিত হয়নি।একজন মা তার সন্তানের সংসারে সুখ দেখলে আনন্দ পাওয়া উচিত। আর ওমরের মা করছে তার উল্টো। যদিও বর্তমান অনেক শাশুড়ী এমন ধরনের কাজ করেন।যাইহোক এই ধরনের কাজ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে সব সময়।
আসলে বর্তমানে এই ধরনের ঘটনা গুলো বেশি শোনা যাচ্ছে। পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই স্বার্থের দুনিয়ায় কেউ কারো আপন নয়। স্বার্থের জন্য সবাই সবকিছু করতে পারে।যেমনটা ওমরের ক্ষেত্রে হয়েছিল। দিনশেষে যাদের আমরা আপন করে নেই তারাই কিন্তু আমাদের ক্ষতি করে বসে। বাস্তব কিছু কথা তুলে ধরেছেন ভাইয়া। পড়ে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়ার সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই পোস্ট করার সার্থকতা আপু। ওমরের চেয়ে ওমরের প্রথম স্ত্রী এবং সন্তানের বেশি ক্ষতি হয়েছে। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাইয়া স্বার্থের দুনিয়া কেউ কারো আপন নয়। আর এই স্বার্থের দুনিয়াতে মানুষ চেনা খুব কষ্টকর। যেমন ওমর তার প্রথম ওয়াইফ কে চিনতে পারে নাই। আর বর্তমানে ওমরের মায়ের মত অনেক মহিলা আছে। যারা ভালো কিছু সহ করতে পারে না। তবে আপনার পোস্ট পড়ে বাস্তব অনেক কথা মনে পড়ে গেল।
ওমরের প্রথম স্ত্রী খুবই ভালো। কিন্তু ওমরের মায়ের কারণে তার সংসার তছনছ হয়ে যায়। এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
স্বার্থের দুনিয়ায় কেউ কারো আপন নয় এবং আপন হতে ও চায় না কেউ। আসলে এই পৃথিবীতে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। মানুষ শুধু মাত্র নিজেকে সুখী রাখার জন্য চারদিকে ছোটাছুটি করছে, কেউ সুখী হতে পারছেন আবার অনেকেই পারছেন না।
সুখ নামের মরীচিকার পিছনে ছুটতে ছুটতে আমরা আসলে ক্লান্ত হয়ে যাই। কিন্তু প্রকৃত সুখ ধরা দেয় না। ধন্যবাদ আপনাকে।