প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। এই পোস্টের টপিক হচ্ছে,কিছু কিছু মা বাবার ভুলের মাশুল সন্তানদেরকে দিতে হয়। মা বাবা প্রতিটি সন্তানকে প্রচুর ভালোবাসে,সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু অনেক সময় তারা বড় ধরনের ভুল করে ফেলে। যা পরবর্তীতে অনেক সন্তানদেরকে চরম ভোগান্তির মধ্যে ফেলে দেয়। যাইহোক মূল কথায় ফেরা যাক,আমার এক ফ্রেন্ড প্রায় ৭/৮ বছর বিদেশে ছিলো এবং সে মোটামুটি ভালোই বেতন পেতো। সে যা ইনকাম করতো,তার পুরোটাই তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিতো। কারণ তার বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছে। তার একটা বড় ভাই এবং ২ বোন রয়েছে। তাদের বাসায় আগে টিনশেড বিল্ডিং করা ছিলো।

অর্থাৎ ফ্রেন্ডের বাবা মৃত্যুর অনেক আগেই বাড়িটা তৈরি করেছিল। তো অনেক পুরনো বাড়ি বলে,ফ্রেন্ডের মা বললো বাড়িটা ভেঙে, ফাউন্ডেশন দিয়ে বিল্ডিং তৈরি করবে। ফাউন্ডেশন দিয়ে একতলা কমপ্লিট করতে প্রচুর টাকা লেগেছিল। এরমধ্যে প্রায় ৯০% টাকা আমার ফ্রেন্ড দিয়েছে এবং ১০% টাকা ফ্রেন্ডের বড় ভাই দিয়েছিল। পরবর্তীতে আমার ফ্রেন্ড একটি জমি কিনতে প্রায় ২৫ লাখ টাকা পাঠায় তার মায়ের কাছে। সেই জমিটা তার মা,আমার ফ্রেন্ড এবং ফ্রেন্ডের বড় ভাইয়ের নামে কিনে। যা সত্যিই খুব খারাপ হয়েছে। মোটামুটি আরও ২ বছর পর, আমার ফ্রেন্ড একটি মার্কেটে দোকান ক্রয় করতে, প্রায় ৩০ লাখ টাকা পাঠায় তার মায়ের কাছে। এবারও ফ্রেন্ডের মা একই কাজ করেছে। অর্থাৎ ফ্রেন্ডের মা উনার দুই ছেলের নামে দোকানটি ক্রয় করেছে। কিন্তু টাকা দিয়েছে শুধুমাত্র আমার ফ্রেন্ড।

আসলে আমার ফ্রেন্ড তার মায়ের মুখের উপর কিছু বলতে পারে না। আর সেজন্যই তার সাথে এমনটা হয়েছে। তো আমার ফ্রেন্ড দেশে চলে আসার পর বিয়ে করলো এবং তার কাছে যে অবশিষ্ট টাকা ছিলো, প্রায় সব শেষ। বেশ কয়েক বছর আগে দেশে আসলেও,সে তেমন কিছু করতে পারছে না দেশে। তাছাড়া হাতে টাকা পয়সা একেবারে নেই বললেই চলে। সে প্রথমে চেয়েছিল জমিটা বিক্রি করতে। কিন্তু তার বড় ভাই জমিটা বিক্রি করবে না। যেহেতু তাদের দুই ভাইয়ের নামে জমিটা কেনা হয়েছে, তাই কিছু করার ছিলো না ফ্রেন্ডের। কিন্তু তার বড় ভাই বলেছে দোকান বিক্রি করে ফেলতে। কারণ সেই মার্কেট ততোটা জমজমাট না। তাই সে বাধ্য হয়ে দোকানটা বিক্রি করে দিয়েছে। যদিও সেই টাকা তারা দুই ভাই নিয়েছে। সে এখন ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ইউরোপ যেতে যদি দেরী হয়ে যায়, তাহলে তো ধীরে ধীরে ক্যাশ টাকা গুলো নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ যেহেতু সে বেকার।

তাহলে পরবর্তীতে সে আরও ভোগান্তির মধ্যে পড়ে যাবে। পরবর্তীতে চাইলে সে জমিটাও বিক্রি করতে পারবে না। সুতরাং যা করার, দোকান বিক্রির টাকা দিয়েই করতে হবে। সবমিলিয়ে সে প্রচুর দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে। আর তার কারণ হচ্ছে তার মা। আসলে তার মায়ের উচিত ছিলো, জমি এবং দোকানটা ফ্রেন্ডের নামে কেনার। কারণ সম্পূর্ণ টাকা তো আমার ফ্রেন্ড দিয়েছে। কিন্তু উনার ভুলের কারণে আমার ফ্রেন্ডকে চরম ভোগান্তির পড়তে হয়েছে। তাই প্রতিটি মা বাবার উচিত বুঝেশুনে কাজ করা। কারণ এক সন্তান কষ্ট করে ইনকাম করবে এবং সেই টাকা দিয়ে সম্পদ কিনে সব সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দিবে, এটা মোটেই উচিত নয়। তাছাড়া যারা বিদেশে থাকে,একমাত্র তারাই বুঝে বিদেশে গিয়ে টাকা ইনকাম করতে কতোটা কষ্ট হয়। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি।