“সততা মনুষ্যত্বের চাবিকাঠি”
মানুষ এই পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান সৃষ্টি। আমরা একে অপরের সাথে কথা বলি, হাসি-কান্না ভাগ করে নিই, ভালোবাসি, আবার কখনও ঠকাইও। কিন্তু যা আমাদের সত্যিকার মানুষ বানায়, তা হলো আমাদের মনুষ্যত্ব। আর এই মনুষ্যত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি হচ্ছে সততা। একজন মানুষ যত বড়ই হোক, যত ধনী হোক বা যত শিক্ষিত হোক না কেন, তার সততা যদি না থাকে, তাহলে সে প্রকৃত মানুষ নয়।
সততা মানে শুধু মিথ্যা না বলা নয়। সততা মানে নিজের কাজের প্রতি দায়িত্বশীল থাকা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, নিজের ভুল স্বীকার করা এবং সঠিক পথে চলার চেষ্টা করা। একটা কথা আছে না, “সততাই শ্রেষ্ঠ নীতি।” ছোটবেলা থেকে আমরা বইয়ের পাতায় এই লাইন পড়েছি। কিন্তু জীবনে এসে দেখেছি, সততার পথ সবচেয়ে কঠিন। কারণ এই পথে চলতে গেলে অনেক সময় লোভ-প্রলোভন, ভয়, এবং চাপের মুখে পড়তে হয়। তবু যে মানুষ এই পথ ছাড়ে না, সেই-ই সত্যিকারের মানুষ।অনেক সময় আমরা ভাবি, একটুখানি মিথ্যা বলে বা একটু অসৎ কাজ করে নিলে কি আর এমন হয়। কিন্তু এই সামান্য অসততা থেকেই বড়ো বড়ো অন্যায় জন্ম নেয়। যেমন ধরুন, একটা পরীক্ষায় নকল করা। হয়তো ভাবলেন, একটা প্রশ্ন দেখে লিখলেই বা কি হবে।কিন্তু সেখান থেকেই শুরু হয় অন্যায়ের পথচলা। পরে যখন জীবনের বড়ো পরীক্ষায় পড়বেন, তখনও সেই অভ্যাস থেকে বের হতে পারবেন না। তাই সততা শুধু মুখের কথা নয়, এটা প্রতিদিনের অভ্যাস।
আমরা প্রায়ই ভাবি, সমাজ এত খারাপ হয়ে গেছে, একা একা ভালো থাকলে কি হবে। কিন্তু এই একেকটা ভালো কাজই সমাজকে সুন্দর করে তোলে। একজন মানুষ সত থাকলে তার আশেপাশের দশজন মানুষ শেখে। এভাবেই একটা পরিবার, একটা মহল্লা, একটা গ্রাম, একটা দেশ গড়ে ওঠে।আজকাল আমরা চারপাশে অসততার এমন ছড়াছড়ি দেখি যে, মন খারাপ হয়ে যায়। ব্যবসায় লাভের জন্য ভেজাল, চাকরিতে ঘুষ, পরীক্ষায় নকল, কথায় মিথ্যা যেন এসব ছাড়া জীবন চলে না। অথচ যদি প্রত্যেকে নিজের জায়গা থেকে সত থাকতে পারত, তাহলে দেশটা অনেক সুন্দর হতো। আমাদের আগের দিনের বুড়োরা বলতেন, সততার ফল দেরিতে আসে, কিন্তু তা মিষ্টি হয়।এই কথাটা সত্য। হয়তো আজ কোনো লাভ হবে না, কেউ প্রশংসাও করবে না, কিন্তু একদিন এই সততার কারণেই মানুষের মনে সম্মান জুটবে।সততা শুধু ধর্মের কথা নয়, এটা মানুষের প্রতি দায়িত্ব। আমরা ভুল করি, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভুল করলে স্বীকার করা, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করা এবং নিজের কাজ সৎভাবে করা , এইগুলোই একজন মানুষের সবচেয়ে বড়ো গুণ।
একটা জীবন খুব ছোট। এই ছোট জীবনে যদি আমরা নিজের ভিতর সততা, মানবিকতা আর দায়িত্ববোধ রাখতে পারি, তাহলে মরার পরও মানুষ আমাদের নাম স্মরণ করবে। রবিউল হয়তো আজ কোথায় আছে জানি না। কিন্তু তার সেই পাঁচ টাকার গল্প আজও মনে পড়লে বুকটা গর্বে ভরে যায়। আমি চাই, আমাদের সমাজে আরও অনেক রবিউল জন্মাক, যারা ছোট্ট একটা ভাংতির জন্যও সততার পরিচয় দেবে।
আমরা যদি এই জিনিসটা নিজের জীবনে প্রয়োগ করি, তাহলে সমাজে অন্যায়, দুর্নীতি কমে যাবে। ছোট থেকে বড়ো সবাই শিখবে, সততা কিভাবে একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ বানায়। আসুন, আমরা সবাই মিলে নিজেদের জীবনে সততা ধরে রাখার চেষ্টা করি। কারণ সততাই হলো মনুষ্যত্বের চাবিকাঠি। এই চাবিটা যার হাতে, সেই-ই প্রকৃত মানুষ।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily Tasks
Comment Link:-
https://x.com/mohamad786FA/status/1918331602062684644?t=f4cBxpGHu8bVu03bRp8O9g&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1918331984046407886?t=vAOIV2xftuKRP5mlA30GNg&s=19
SS
সততা শুধু নৈতিকতা নয়, এটি আত্মবিশ্বাস ও সম্মানের ভিত্তি। সত্যবাদী মানুষই সমাজে প্রকৃত মূল্যবান হিসেবে গণ্য হয়।সততা ছাড়া মানুষের চরিত্র অসম্পূর্ণ। এটি যেমন ব্যক্তিগত জীবনে শান্তি আনে, তেমনি সামাজিক বিশ্বাসও গড়ে তোলে। ধন্যবাদ এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরার জন্য!