|| বন্ধুদের সাথে হ্যাংআউট ||

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

আমার গত পোস্টে আমি আমার ম্যাসেঞ্জার ট্যুরের দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করেছিলাম।কিন্তু আজকে আর ম্যাসেঞ্জার পর্ব বলবো না।পর পর একই ধরণের গল্প বললে একঘেয়ে লেগে যায়।তাই সব কিছুতেই একটু চেঞ্জ দরকার।তাই আজকে বলবো আমার একটা ছোট খাটো হ্যাংআউট এর কথা।প্রথমেই বলে রাখি এরকম হ্যাংআউট প্রায়শই হয়ে থাকে।আর বেশিরভাগ গুলোই হয় এই বন্ধুদের সাথেই।

InShot_20220822_103431451.jpg

আমি এর আগের একটি পোস্টেও আমার এই বন্ধুগুলোর কথা বলেছিলাম,যারা সেই পোস্ট পড়েছেন তারা জানেন। আর যারা পড়েন নেই তাদের জন্য আর একবার বলে দিই, ছেলেটির নাম অর্ণব আর মেয়েটির নাম স্বর্ণালী। অর্ণবের সাথে আমার পরিচয় মোটামুটি চার বছর হল, কলেজ লাইফের শুরু থেকে ওকে আমি চিনি। আর স্বর্ণালী সাথে পরিচয় আর একটু বেশি, ওই মোটামুটি বছর পাঁচেকের মত। যাইহোক আমরা তিনজন একসঙ্গে অনেক ঘোরাঘুরি করি মজা করি। তার কিছু কিছু অংশই আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিচ্ছি।

PXL_20220821_165031630.jpg

বেশ কয়েকদিন ধরেই আমরা প্ল্যান করছি, আমাদের শহরে নতুন একটি আইসক্রিম পার্লার ওপেন হয়েছে সেখানে যাওয়ার। কিন্তু বিভিন্ন কারণবশত সেখানে যাওয়া হয়ে উঠছে না। এরকম ভাবেই গতকালও আমরা প্ল্যান করি। আমরা ঠিক করি প্রথমে আমি আর অর্ণব স্বর্ণালীদের বাড়িতে যাব, সেখানে তার একটি পোষ্য আছে যার নাম কোকো। তার সাথে দেখা করব। তারপর সেখান থেকে অর্ণবের কিছু কেনাকাটি আছে সেগুলি সেরে আমরা আইসক্রিম পার্লারে যাব। তো প্ল্যান মাফিক আমরা সময়মতো বেরিয়ে পড়ি এবং সবার আগে কোকোর সাথে মিট করতে যাই। প্রসঙ্গত বলে রাখি কোকোর সাথে এটাই ছিল আমার প্রথম দেখা। প্রথমবার তার সাথে দেখা করে বেশ ভালো লাগলো। তবে খুবই দুরন্ত সে। আমাকে দেখে এক্সাইটমেন্টে বেশ কয়েকবার লাফ-ঝাপ দিল,গায়ের উপর আসলো, আদর খেলো, খেলা করলো। তার কাছে আমরা ৩০-৪৫ মিনিট মত ছিলাম। পুরো সময়টা সে ছোটাছুটি করে বেড়ালো। দুরন্ত হলেও তাকে কথা বললে সে শোনে, হ্যান্ডশেক করতে বললে হ্যান্ডশেক করে হাইফাইভ করতে বললে হাই ফাইভ দেয়। পুরো সময়টা তার কাছে বেশ মজা করে কেটেছিল আমাদের।

IMG-20220821-WA0068.jpg

IMG-20220821-WA0070.jpg

কোকোর কাছ থেকে আমরা 05:00-05:30 এর দিকে বেরিয়ে পড়ি। সেখান থেকে আমরা কেনাকাটির জন্য একটা শপিং মলে যাই। থাকে। স্বর্ণালীরা যে ফ্ল্যাটে থাকে সেই ফ্ল্যাটের একদম সাথেই আছে 'Sentrum'। তো আমরা সেখানেই যাই। সেখানে ঢুকে সবার প্রথমে অর্ণব কেনাকাটি শুরু করল। আসলে আর দু সপ্তাহ পর অর্ণব চাকরী সূত্রে পুনে চলে যাবে। গত এক বছর হল ও একটি ভালো কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছে। কোভিড, লকডাউন এসবের জন্য এতদিন ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছিল। গত মাসে ওর কোম্পানি থেকে মেইল আসে যে ওদের এখন প্রত্যেকের অফিস ওয়ার্ক করতে হবে। তো যেহেতু অর্ণব ওর অফিস পুনেতে সিলেক্ট করেছিল, তাই ওকেও সেখানে যেতে হবে। তাই সেখানে যাওয়ার জন্য কিছু ফরমাল জামা-প্যান্ট এই সমস্ত কেনাকাটি করতে গেছিল।

InShot_20220822_103049537.jpg

দু তিনটে মল ঘুরে ওর কেনাকাটি করতে এক ঘণ্টার মতো লাগলো। তারপরে আমরা জানতে পারলাম সেখানকার একটি মলে খুব সুন্দর একটি অফার চলছে।৩,৫০০ টাকার কেনাকাটি করলে আরও ৩,৫০০ টাকার জিনিস আপনি free তে পাবেন।অর্থাৎ ৭০০০ টাকার কেনাকাটিতে ৫০% ছাড়। ততক্ষণে অবশ্য অর্ণবের অধিকাংশ শপিং হয়ে গেছে। কিন্তু স্বর্ণালীর তখন অফার শুনে কেনাকাটি করার শখ জাগে। আসলে কোন মেয়ে এতো ভালো অফার হাতছাড়া করতে চায়,যখন সামনে আবার পুজো 😂। তারপরে শুরু হলো তার জন্য কেনাকাটি। অর্ণবের একার এক ঘণ্টার মধ্যে সব পছন্দ করা হয়ে গেছিল। আর স্বর্ণালী একার জন্যে আড়াই ঘণ্টা লেগেছে 🤣। কারণটা আপনাদের অনেকেরই জানা, তাই এই বিষয়ের গভীরে যাচ্ছি না। অনেক কষ্ট করে সে ৭০০০ টাকার মার্কেটিং করল। মাঝখানের সময়টা আমি আর অর্ণব ঘুরেফিরে কাটাচ্ছিলাম। তবে স্বর্ণালীকে বেশ কয়েকটি ড্রেস পছন্দ করত হেল্প করেছিলাম আমরা। যদিও আমাদের পছন্দ ছাড়া ও একটা ড্রেসও কিন্তু না😅।
InShot_20220823_072031150.jpg
যাই হোক এসব করতে করতে আমরা লক্ষ্য করলাম প্রায় রাত সাড়ে আটটা বেজে গেছে। মানে আমাদের শুরুতে যে আইসক্রিম পার্লার যাওয়ার কথা ছিল সেটি এই দিনও সম্ভব হলো না। কারণ সেখান থেকে আইসক্রিম পার্লার যেতে গেলে অনেক দেরি হয়ে যেত। একান্তই আমরা সেন্ট্রাম এর কাছেরি কয়েকটি ফাস্টফুড এর দোকান আছে সেখান থেকে নুডুলস অর্ডার করলাম এবং কোলড্রিংস অর্ডার করলাম। স্বর্ণালীদের ফ্ল্যাটের নিচেই একটি খুব সুন্দর পার্ক আছে, সেন্ট্রাম থেকে স্বর্ণালীদের ফ্ল্যাটে হেঁটে যেতে দু মিনিট লাগে।

IMG_20220822_102337.jpg

আমরা ঠিক করলাম সেই পার্কে বসেই ভোজন পর্ব সারবো। এভাবেই সেদিনের বিকেল থেকে সন্ধে অবধি ওদের সাথে খুব মজা করে কাটলো।

তো বন্ধুরা আজকে এখানেই শেষ করছি।

IMG-20220822-WA0039.jpg

PXL_20220821_181345580.jpg
Location

@samratsaha
Sort:  
 3 years ago 

আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভাল লেগেছে। এরকম হ্যাংআউট আমার খুবই পছন্দ। আপনাদের শপিংমলে ঢুকে শপিং এর মজার ঘটনাটি ভাল লেগেছে। কোকোকে দেখে মনে হচ্ছে সে খুব মিশুক। আইস্ক্রিম আমারও খুব পছন্দ। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি হ্যাংআউটের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্যে।আপনি ঠিকই ধরেছেন, কোকো আসলেই মিশুকে অনেক।ভালো থাকবেন।

 3 years ago 

তিন জনের একটি সার্কেল হলে আর কিছু লাগে না। লাইফ এমনিতেই মজা মাস্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। তবে কোকোকে দেখে অনেক ভাল লাগলো। আইসিক্রিমের কথা বলে শুরু করে নডুলস দিয়ে শেষ করলেন। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ঠিক বলছেন ভাইয়া।তিনজনের পরিপূর্ণ সার্কেল খুবই ভালো হয়।আইসক্রিমের কথা কি আর বলবো বলুন,কপালে না থাকলে যা হয় আর কি।

 3 years ago 

আপনার পোস্ট পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো। এমন হ্যাংআউট আমার খুবই পছন্দ। সবচাইতে আমার বেশি ভালো লেগেছে আপনার পোষা কুকুরটিকে দেখে মনে হচ্ছে অনেক শান্ত সৃষ্ট এবং ভদ্র প্রকৃতির ডগি। ছোটবেলায় আমি অনেক কুকুরছানা কে লালন পালন করতাম।আমার পেছে তারা ছুটে চলে আসতো আমার দেখা পেলে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

পোষ্য টি আমার নয়,আমার বন্ধুর দিদির।তবে হ্যাঁ সে ভদ্র অবশ্যই কিন্তু শান্ত মোটেই নয়।নিজের মানুষদের কে দেখলে তাকে আর শান্ত রাখা যায়না।

 3 years ago 

ভাই তোমার এই বান্ধবীর নাম তো আগে বলনি, বললে তো ওর সাথে আমি নিজেও একটু শপিং করে আসতাম 🤪। পরেরবার যেন মিস না হয় মনে রেখো। কোকো কে দেখে অনেক কথাই মনে পরছিল 😅। তবে মানুষ কোকোর চাইতে এই কোকো হাজার গুণ সভ্য জাতি। 😉

 3 years ago 

বান্ধবী দেখেই ওমনি না 😂।
মানুষদের সাথে এদের তুলনাই চলে না দাদা।এদের থেকে মানুষের অনেক কিছু শেখার আছে।