লোকজ উৎসব ২০২৩ এর প্রথম পর্ব।।
আসসালামুআলাইকু/ নমস্কার/ আদাব।
নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের সাথে।
হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আপনাদের সাথে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। এই পোষ্টের মাধ্যমে বাংলার হারিয়ে যাওয়া অনেক ঐতিহ্য দেখতে পারবেন। চলুন শুরু করি।
বন্ধুরা আপনারা জানেন যে আমি গত মাসে অফিস ট্যুরের মাধ্যমে সোনারগাঁও জাদুঘর ভ্রমন করেছিলাম। তবে সবার সাথে যাওয়ার কিছু দিন আগে আমি আর আমার এক কলিগ প্রাথমিক পরিদর্শনের জন্য গিয়েছিলাম। আমরা যে দিন পরিদর্শন করেছি এর আগের দিন ঐখানের ঐতিহ্য লোকজ উৎসব ২০২৩ শুরু হয়। সেই লোকজ উৎসবে বাংলার অনেক হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। এখন তো সব কিছু মেশিনের সাহায্যে করা হয়ে থাকে। আগে সব কিছু হাতে তৈরী করা হতো। এই উৎসবের মধ্যে নিজের হাতে তৈরী করে সব কিছু বিক্রয় করা হয়। আর সেই সব দৃশ্যই ফটাগ্রাফির মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
মেলাটি সত্যিই অনেক সুন্দর। আমি মনে করি প্রতি জেলাতে এমন লোকজ উৎসব করা দরকার। তাহলে বাংলা হারিয়ে যাওয়া অনেক ঐতিহ্য আমরা দেখতে পারবো। এখানে এমন এমন জিনিষ দেখেছি যা আগে আমি কখনো দেখি নাই।
লোকজ উৎসবে প্রবেশের প্রথম দিক দিয়ে এভাবেই দর্শনার্থীদের বরণ করা হয়। রাস্তায় বিভিন্ন কালাকের কাপড় দিয়ে ফানুস তৈরী করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
বিশাল বড় এরিয়া নিয়ে মেলাটা বসেছে। সব মিলিয়ে কম পক্ষে পাচঁ থেকে সাতশো দোকান হবে। প্রত্যেকটা দোকানে আলাদা আলাদ পন্য বিক্রয় করতেছে। এটি হলো মেলার প্রথম দিন তাই মেলাতে মানুষ একটু কম দেখা যাচ্ছে।
এখানে বিভিন্ন ডিজাইনের মাটির পাতিল বিক্রয় করা হয়। বিভিন্ন কালারের রং দিয়ে পাতিল গুলো সাজানো হয়েছে। এখানে হারিয়ে যাওয়া একটি ঐতিহ্য হলো পাট দিয়ে বানানো ছিকা। আগে গ্রামের মধ্যে এই জিনিষটা দেখা যেত। আধুনিকের ছোয়াঁয় ছিকা আর এখন দেখা যায় না।
এখানে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য হাতে তৈরী দেওয়ালিকা বা ওয়ালমেট দেখা যায়। আগে বিভিন্ন বাড়ির দেওয়ালে এগুলো দেখা যেত। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে এসব হাতে তৈরী দেওয়ালিকা বা ওয়ালমেট।
এখানে দেখা যায় সুতা দিয়ে তৈরী শীতের বিভিন্ন চাদর। সব কিছুই হাতে তৈরী করা হয়। আপনি বললে ঐখানেই তারা হাতে তৈরী করে দিবে। চাদর ছাড়াও রয়েছে ব্যাগ,টুপি, পা পুশ, শাড়ি সহ আরো অনেক কিছু।
এখানে দেখা যায় সুতা দিয়ে হাতে তৈরী বিভিন্ন হাত পাখা। আগে যখন বিদ্যু ছিল না,ইলেক্ট্রনিক পাখা ছিল না তখন এসব হাত পাখার অনেক কদর ছিল। পাখা গুলো সাইজ অনুযায়ী ৫০/১০০/২০০ টাকা বিক্রয় করা হয়। এগুলো মূলত ঢাকার ঐতিহ্য। এই হাত পাখা গুলোও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে।
এখানে দেখা যায় কাঠের তৈরী বিভিন্ন আসবাবপত্র। এখানে রয়েছে কাঠের প্লেট,কাঠের আয়না,কাঠের চিরনি,কাঠের পিড়িঁ,কাঠের চামচ,কাঠের ওয়ালমেট সহ আরো অনেক জিনিষ পত্র।
উপরে দেখেছেন সুতা দিয়ে তৈরী হাত পাখা। এখানে দেখতে পাচ্ছি গাছের চামড়া বা বাকল দিয়ে তৈরী হাত পাখা। এই পাখা গুলো যে গাছ দিয়ে বানানো হয় সে গাছ গুলোর নাম হলো মুর্তা গাছ। এই হাত পাখা গুলো চট্রগামে বেশি দেখা যায়।
তাদের আসল পন্য হলো বাশের বাশিঁ। এই জিনিষটা গ্রামগঞ্জে আগে প্রচুর দেখা যেত। রাখাল ছেলেরা মাঠে গরু নিয়ে যাওয়ার সময় সাথে করে বাশের বাশিঁ নিয়ে যেত। গাছের নিচে বসে বাশিঁ বাজাতো। কত মানুষ এই বাশিঁর সুরের প্রেমে পরে জাত কুল হারিয়েছে তার কোন হিসাব নেই।
বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই। কেমন হলো আজকের পোষ্ট অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফির নিচে বর্ণনা দিতে হচ্ছে। যার কারনে বেশি ফটো শেয়ার করতে পারলাম না। প্রতি পর্বে বারোটা করে ফটো শেয়ার করবো। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। আবার দেখা নতুন কোন বিষয়ের আপডেট নিয়ে।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
উৎসবের নাম | লোকজ উৎসব |
স্থান | সোনারগাঁও,নারায়নগঞ্জ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ভাই, বর্তমান সময়ে এরকম লোকজ উৎসব খুব একটা চোখে পড়ে না। তাই আপনার পোস্টে লোকজ উৎসবের মেলা দেখে খুব ভালো লাগলো। আর এই উৎসবে দেখছি বিভিন্ন ধরনের দোকানগুলো তাদের হাতে তৈরি জিনিস নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছে। বিশেষ করে বিভিন্ন রকমের কারু কাজ করে হাত পাখা তৈরি করেছে যা এখন আর পাওয়া যায় না। এছাড়াও অন্যান্য দোকানের জিনিস গুলোও দৃষ্টি আকর্ষণ করার মত। লোকজ উৎসব ২০২৩ খুব সুন্দর বর্ণনার মাধ্যমে ও সুন্দর ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
জী ভাইয়া আমিও এমন লোকজ উৎসব আর দেখি নাই। এটাই প্রথম দেখলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যিই লোকজ উৎসবের জিনিসপত্র দেখে একেবারে মুগ্ধ হলাম। পাট দিয়ে বানানো ছিকা সেটা তো বহু আগের কথা। যেন নতুন করে মনে পড়ল। মাটির জিনিসপত্র গুলো এত সুন্দর কি বলবো। বিশেষ করে প্রত্যেকটা জিনিস হাতে তৈরি করা এটা দেখেই ভালো লাগলো। হাতে তৈরি কাপড়ের পাখাগুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আর কাঠের খুব সুন্দর সুন্দর জিনিসপত্র দেখতে পেলাম। সব মিলিয়ে যেন পুরনো দিনে ফিরে এসেছি। উৎসব দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আমার তো যেতে ইচ্ছে করছে। আমাদের এদিকে এরকম মেলা দেখা যায় না।
জী আপু আমার আম্মু আগে ছিকা বানাইতো। এখন পাটও নাই ছিকাও নাই। ধন্যবাদ আপু।
প্রতিটা জিনিসই দেখার মত ।মাটির তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের হাড়ি পাতিল ,সুতায় তৈরি বিভিন্ন ধরনের শীতের চাদর, সুতার তৈরি হাতপাখা ,কাঠের তৈরি বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন ডিজাইনের মাছ, প্লেট ,জাস্ট চোখ জুড়ানো। আমার তো ইচ্ছে করছে এই লোকজ মেলায় গিয়ে ঘোরাঘুরি করে এসব ঐতিহ্যবাহী জিনিসগুলো ক্রয় করতে। ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই মেলা সব জায়গায় হওয়া দরকার।
জী আপু লোকজ উৎসবটা ধারুন লেগেছে আমার কাছে। জীবনে যা দেখি নাই তা দেখেছি। ধন্যবাদ আপু।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে লোকজ উৎসবের মেলার পোস্ট করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে নতুন নতুন কিছু জিনিস দেখতে পেলাম যেগুলো আমি আগে কখনো দেখেছিলাম না। আমি সুতা দিয়ে হাত পাখা তৈরি দেখেছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন সাইজের পাখা বিভিন্ন দামে বিক্রয় করা হচ্ছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। কুষ্টিয়া মেলা হচ্ছে কিন্তু লোকজ মেলা নয় সেটি হচ্ছে বাণিজ্য মেলা। সেখানেও এরকম জিনিসপত্র দেখেছিলাম অনেক।
ভাইয়া বিভিন্ন মেলার মধ্যে গেলে বিভিন্ন জিনিষ দেখা যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
লোকজ উৎসবে সবসময় হাতের তৈরি জিনিস গুলো পাওয়া যায়। আপনি এই উৎসবটি পরিদর্শন করার জন্য নিজেই এবং আপনার কলিগ সহ গিয়েছেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে কতটা জাকজমকপূর্ণ হয়েছে। সেখানে দেখছি প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস উঠেছে। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য।
জী আপু লোকজ উৎসবে আমি এই প্রথম গিয়েছিলাম। অনেক ভাল লেগেছে ঘুরে। ধন্যবাদ আপু।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
বর্তমান সময়ে লোকজ উৎসব খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না ভাইয়া। আর এই উৎসবে হাতের তৈরি বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যায়। মাটির তৈরি জিনিস গুলো এবং সুতো দিয়ে হাত পাখাগুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি উৎসব আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জী আপু এসব উৎসবে দেলে হারানো ঐতিহ্য দেখা যায়। ধন্যবাদ আপু।
ভাইয়া বর্তমান সময়ে এই লোকজ উৎসব নেই বলেই চলে। আপনি ঠিক বলেছেন প্রতি জেলাতে আমাদের একটা করে লোকজ উৎসব থাকা দরকার। আসলে আপনার পোস্টের মাধ্যমে পুরানো ঐতিহ্য গুলো দেখতে পেলাম। এগুলো এখন বিলুপ্ত প্রায়, মোটে ও দেখা যায় না বলেই চলে।বিশেষ করে হাত পাখা, সুতার পাখা ও বাশের বাশিঁ অসাধারণ ছিল ফটোগ্রাফি গুলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
জী আপু লোকজ উৎসব হাতে গুনা কয় টা হয়। আমি এই প্রথম দেখেছিলাম। ধন্যবাদ আপু।
আমাদের দেশ অতীতে শীল্পে অনেক সমৃদ্ধ ছিল।কিন্তু কালের বিবর্তনে আমরা তা হারিয়ে ফেলছি।আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম অনেক কিছুই দেখবে না।তাদের এসবের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এমন লোকজ মেলার বিকল্প নেই।অনেক ভাল লাগল আপনার পোস্ট টি। অনেক তথ্যবহুল ছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া ঠিক বলেছেন। আমাদের পরবর্তি প্রজন্মের জন্য লোকজ মেলার দরকার আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।