কষ্টের ফল হাতে না পেলেও আছে সার্থকতা।
আজ - সোমবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি আমাদের স্কুলের ফুল বাগান তৈরির পেছনের কিছু কথা নিয়ে। হয়তো এই তথ্যগুলো আপনার জীবনে অন্য কোন এক বিশেষ কারণের উৎসাহ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই চলুন মনোযোগ সহকারে পড়ি।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
ফুলের ফটোগ্রাফি
কথায় আছে কষ্ট করলে ক্রীষ্ট মেলে। তবে অনেকের কষ্টের ফল হয়ে ওঠে না। আবার অনেকের রয়েছে কষ্ট না করেও ফল পেয়ে থাকে। যাই হোক সেই বিষয়ে আপনাদের মাঝে বাড়তি কিছু বলবো না। শুধু অনেকগুলো ফুলের ফটোগ্রাফের মধ্য দিয়ে আপনাদের মাঝে কিছু বিশেষ তথ্য তুলে ধরতে চাই। কিছুদিন আগে আমি আর মুস্তাফিজুরের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় স্কুল গার্ডেনে ১৫০ টি শীতকালীন ফুল গাছ লাগানোর জায়গা করছিলাম। আমাদের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিল। তবে যাই হোক উদ্যোগটা আমার আর মুস্তাফিজুরের। এমনকি সর্বপ্রথম স্কুলের সুন্দর একটি ফুলের বাগান তৈরি করতে হবে এর উদ্যোগ আমি আর মোস্তাফিজম নিয়েছিলাম আজ থেকে ছয় মাস আগে। যে জায়গাটা ফুলের বাগান করেছি অবশ্যই এই জায়গাটা খুবই ভয়ানক স্থান ছিল একসময়। অনেকে নাকি বিষাক্ত সাপ দেখেছিল এই জায়গাতে তাই আসতো না, বন বেঁধে থাকতো। এ কথা সত্য আমরা সকলে মিলে অনেক ঝোড় জঙ্গল সাফ করেছি এই স্থান থেকে। ছাত্র-ছাত্রীরাও এদিকে তেমন অস্ত্র না। পূর্বে সেই দিনগুলো স্মরণ করলে কেমন জানি মনের মধ্যে শিউরে ওঠে। আসলেই তো সত্য কথা, কতই না জঙ্গল ছিল এবং মাটি ছিল উচা নিচা। তবে যাই হোক প্রথমে আমি আর মোস্তাফিজুর কোদাল ধরেছিলাম একদিকে জঙ্গল সাফ করতে হবে আর অন্যদিকে মাটির সমান করতে হবে। ফুলের গাছ লাগানো বলে কথা। প্রথম যখন আমি আর মুস্তাফিজুর কাজ করতাম অনেকেই হাসাহাসি করত এবং বলতো অসম্ভব ব্যাপার এখানে ফুলের বাগান তৈরি করা কি যায়, নিচে আছে অনেক ইট খোয়া। আমরা প্রথমে সাফ করেছিলাম জঙ্গলগুলো। এরপরে উঁচা স্থানগুলো সমান করার চেষ্টা করেছিলাম। এরপরে নির্দিষ্ট স্থান মাটি দিয়ে নিচের ইট গুলো বের করে দিয়েছিলাম। সমস্ত কাজগুলো একবারও হয়নি মাঝেমধ্যে করেছি। একবার দুইটা লেবার নিয়েছিলাম এই কাজগুলো করিয়ে নেওয়ার জন্য কিন্তু তারা খুবই ফাঁকি দিয়েছিল। এর পাশাপাশি লেবাররা খুব কম সময় কাজ করতো যা গ্রহণযোগ্য নয়। তার পরবর্তীতে আমি আর মুস্তাফিজুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কোনোপ্রকার লেবার নেওয়া হবে না আমরা দুজন মিট করব কাজ হয়তো একদিনে পারবোনা চেষ্টা করব মাঝেমধ্যে সুন্দর একটা পর্যায়ে নিয়ে আসার। তাইতো ৬ মাসের একটু একটু করে এত সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছি। যেহেতু মাঠের মানুষের মতো আমরা কখনোই পারবোনা। তবে মাসে দু-একবার কুদাল ধরলে কি আসে যায়। এমন সুন্দর আকাঙ্ক্ষা ছিল আমাদের মনে। প্রথম যখন ফুলের গাছ লাগিয়েছিলাম অনেকে অনেক রকম কথা বলতো। তবে আমরা দুজন হাল ছেড়ে দেয়নি। এদিকে পরিষ্কার কমিটির দায়িত্ব রয়েছে তারা স্বেচ্ছায় কাজ করতে চায় না স্কুলের বিভিন্ন বিষয়ে এক একটি স্যারের উপর দায়িত্ব দেওয়া আছে। আমি আর মুস্তাফিজুর যেমন অনলাইন সংক্রান্ত কাজ করে থাকি। যাইহোক পরিষ্কার কমিটিকে আমরাই পরিচালনা করে থাকি পাশাপাশি নিজেরাও নিজের উদ্যোগ করতে হয়। নিজেরা বেশি মাথা ঘামায় বলেই তো এত সুন্দর একটি বাগানে রূপদান করতে পেরেছি। এদিকে নতুন বছল সামনে। কোথায় আছে মেঘ না চাইতে বৃষ্টি। অন্যান্য প্রাইমারি স্কুলে ফাইনাল পরীক্ষা চলছে এদিকে আমাদের স্কুলে ফাইনাল পরীক্ষা এখনো শুরু করা হয়নি কিন্তু অন্যান্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আমাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য ফর্ম উঠেছে চলছে এবং ভাইভা দিচ্ছে। যেহেতু আমাদের সিট সংখ্যা খুবই কম,প্রত্যেক শ্রেণীতে মাত্র কুড়িজন নিতে পারব। যাই হোক সেই সমস্ত স্টুডেন্ট এবং অভিভাবকরা এসে এই ফুল গাছগুলোর সাথে সেলফি ফটো উঠে চলছে প্রতিনিয়ত মাঝেমধ্যে গল্প করলেও দেখছি ভালো সুনাম করছে আমাদের। যে সমস্ত শিক্ষক মন্ডলী ফুল গাছের বাগান তৈরি করাতে বিরূপ মত পোষণ করেছিল আজ তারা বুঝতে পারছে সত্যি স্কুলটাতে আজ বিশাল একটা মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে ফুল গাছের বাগানের জন্য। নতুন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা অফিস বা শ্রেনীর কক্ষে যতোটুক দাঁড়াচ্ছে বা না দাঁড়াচ্ছে তার চেয়ে বেশি ফটো উঠানো নিয়ে ব্যস্ত। অনেকেই দিচ্ছে নানান ধরনের উৎসাহ। তবে এখনো আশা আছে আরো ফুলের গাছ লাগাবো। তাই আমি আজকে আপনাদের মাঝে ফুল নিয়ে বেশি কথা না বলে বিশেষ তথ্যগুলোই উপস্থাপন করলাম। কারণ এই তথ্যগুলো হয়তো আপনাদের মনের মধ্যে যেকোনো মুহূর্তে বিশেষ কোনো কাজে আগ্রহ সৃষ্টি করতে উৎসব প্রদান করবে। আর এভাবেই তার ফল পাওয়া যাবে এক সময়। হয়তো আমি ফুল ফুটানো কে কষ্টের ফল হিসেবে ধরছি না বরং দশ জনের মনে আনন্দ যোগাতে পেরেছি এই ফুলের বাগান তৈরি করে, এটাই বড় ফল বা বড় কিছু পাওয়া।
|
---|
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্ট, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
যখন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় তখন হয়তো বা অন্যদের কাছে এটি হাস্যকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই উদ্যোগে সফলতা লাভ করলে ভালোই লাগে তখন। আপনি আর মুস্তাফিজ ভাইয়া যে এরকম উদ্যোগ গ্রহণ করে ফুলের বাগান করেছেন কিন্তু অন্যদের কাছে হাস্যকর মনে হলো।তাদের কাছে হাস্যকর ছিল,কিন্তু এখন তারাই মনে মনে ভাবছে আপনারা ভালো কাজ করেছেন।এত কষ্ট করে এত সুন্দর একটি বাগান তৈরি করতে পেরেছেন এটাই তো সবচেয়ে বড় কথা। এতে স্কুলের পরিবেশটাও সুন্দর হল পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়ে গেল।
নতুন বছরে নতুন নতুন অনেক ছেলে-মেয়ে ভর্তি হচ্ছে তাই পরিবেশটা যদি এভাবে সুন্দর করা হয় সকলের কাছে ভালো লাগবে
পৃথিবীতে দুটি জিনিস রয়েছে একটি হচ্ছে কষ্টের মাধ্যমে ফল উপভোগ করা আরেকটি হচ্ছে ভাগ্যের মাধ্যমে কোন কিছু পাওয়া। তবে কষ্টের মধ্যে অর্জিত ফলের স্বাদ অনেক বেশী হয়ে থাকে। আপনার স্কুলের বাগানটি অনেক চমৎকার ছিল। সেই সাথে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভালো ছিল।
একদম ঠিক বলেছেন আপু।
পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা কারো কোন উদ্দেগ নিলে মানুষ দেখলে হাসি ঠাট্টা ,তামাশা করে। অনেকে সেটা দেখে ভেঙ্গে পড়ে ,আবার অনেকেই ভেঙে না পড়ে নিজের মনকে শক্ত করে, এগিয়ে চলে এবং অবশেষে সাফল্য অর্জন করে। অবশেষে তখন সাফল্য পেলে মনে হয় যেন জীবন সার্থক হয়েছে। যেমন আপনার মোস্তাফিজ ভাইয়ের কথাই বলছি। শুভকামনা রইল তার জন্য।
বিশেষ করে বাংলাদেশে এমন হাসি ঠাট্টা করা মানুষ বেশি।
এটা আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন কষ্ট করেছি বলেই আজকে কষ্টের ফলাফল পেতে শুরু করেছি। আশা করি এ বছরের শীতে প্রচুর পরিমাণে ফুল ফুটবে আমাদের এই স্কুলের বাগানে। একই সাথে অনেক মৌমাছির আনাগোনা দেখতে পাবো পুরো স্কুল জুড়ে।
অলরেডি অনেক ফুল ফোটা শুরু হয়ে গেছে।
আপনারা উদ্যোগ গ্রহণ করে ফুলের বাগান করেছেন এইটা জেনে সত্যি খুব ভালো লাগলো। আমাদের সমাজে যে কোনো কাজ করার পূর্বে অনেকে অনেক কথা বলে থাকে তাদের কথা কান না দিয়ে নিজের লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্য সামনের দিকে অগ্রসর হওয়াটাই অনেক উত্তম। আসলে কষ্টের ফল কখনো বৃথা যায় না। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিল। ফুল গুলো দেখতে বেশ চমৎকার লাগছে। এত চমৎকার পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
এখন আরো চমৎকার হয়ে গেছে ভাই বিভিন্ন প্রকার ফুল ফুটে।
আপনারা মুস্তাফিজুর ভাইয়ের উদ্যোগটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। স্কুলে ফুলের বাগান বানানোর প্রচেষ্টা সত্যিই দুঃসাধ্য ছিল আপনাদের জন্য ।অবশেষে আপনারা সফল হয়েছেন আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো আসলে কোন কাজের শুরুতে অনেক প্রতিবন্ধকতা আসে সব কিছু পেরিয়ে যখন সার্থক হওয়া যায় তখনই অন্যরকম আনন্দ পাওয়া যায়। যাই হোক অন্যরা নিরুৎসাহিত ছিল যারা তারা তো এখন বুঝতে পারছে ব্যাপারটা এটিই বড় কথা। ভালো ছিল।
আমাদের দুজনার উদ্দেশ্য মনোরম পরিবেশ তৈরি করা
আপনি সুন্দর একটি উদ্যোগ গ্রহণ করলেন তা সফল হলেন। আপনি এবং মোস্তাফিজ ভাই উদ্যোগ নিলেন স্কুলের সামনে কিছু ফুলের বাগান করবেন। আপনি লিখেছেন জায়গাটি আগে খুব ভয়ঙ্কর ছিল। ওখানে বিষাক্ত সাপ ছিল শুনে আমারও ভয় লাগলো। প্রথমে যেই লোক গুলো শুনে হাসাহাসি করল তারা এখন বলবে আপনারাই সফল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এরকম ফুলের বাগান থাকলে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনেক ভালো লাগে পরিবেশ অনেক সুন্দর হয়। আপনার ফটোগ্রাফি দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল গাছ লাগিয়েছেন। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক প্রকার ফুল ফুটেছে আমাদের বাগানে।