"জলে ভাসছে আমাদের বাড়িঘর😢😢"
নমস্কার
জলে ভাসছে আমাদের বাড়িঘর😢😢
বন্ধুরা, কোথা থেকে শুরু করবো বুঝতে পারছি না ঠিক।আসলে সব জায়গায় বৃষ্টি হলেও আমাদের এখানে বৃষ্টির দেখা ছিল না।সবাই বৃষ্টির জন্য হা-হুতাশ করছিলো।একসময় অস্থির হয়ে আর বৃষ্টির আশা ছেড়ে দিয়ে চাষীরা তাদের নিজেদের সাব-মার্শাল মেশিন চালিয়ে ,কেউবা ছোট মেশিন দিয়ে ক্যানেল থেকে জলসেচ দিয়ে জমি চাষ করে নিয়েছে।এমনকি আমরাও টাকা খরচ করে মেশিন দিয়ে জল সেচ দিয়ে নিয়েছিলাম।যাইহোক তারপর এই দুইথেকে তিনদিন একটু বৃষ্টির দেখা মেলে।ততদিনে অনেকের জমি রোপন প্রায় শেষের পথে।
গতকাল আমাদের এখানে সারাদিন প্রায় ভালোই বৃষ্টি হয়েছে।আমি হ্যাংআউট শেষ করে প্রায় 11 টা থেকে 11.30 টা নাগাদ ঘুমাতে চলে যাই।তখন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি আর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে সেটাও ধারণার বাইরে ছিল।আসলে যখন আমি ঘুমাতে যাই তখন বৃষ্টি হচ্ছিলো কিন্তু আমাদের বারান্দায় তেমন কোনো জল জমার সম্ভাবনা দেখিনি।কিন্তু আমার পোষ্য একটি বিড়াল মিনি আমার কাছেই থাকে রাতে।সে রাতে মাত্র একবার ওঠে আমার সঙ্গে।কিন্তু গতদিন তো বারবার উঠে ছটফট করছিলো যেটা ও আগে কখনো করিনি।কিন্তু আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না,ও কি সংকেত দিতে চাইছে!
আমার বাবা রাত প্রায় 1.30 টার দিকে যখন ঘুম থেকে ওঠে,তখন খাট থেকে নিচে পা দিতেই দেখে এক বিঘেত পরিমাণ জল বারান্দায় ঢুকে পড়েছে।সঙ্গে সঙ্গে বাবা আমাদের ডাক দেয় তখন বুঝতে পারলাম মিনি বারবার কেন ছটফট করে আমাকে তুলতে চাইছিলো।তারপর আমরা সবাই উঠে পড়ি, দাদা দাঁড়াতে পারছিলো না।কারন এই দুই থেকে তিনদিন দাদার জ্বর হয়েছে।তাই ও শুয়ে পড়লো একটু সাহায্য করে।মাটি ভিজে ততক্ষনে ধানের মাচা নিচে বসতে শুরু করেছে।তাই মা, বাবা ধানের বস্তা সরিয়ে মাচার নীচে ইট দিয়ে দিলো আরো কয়েকটি করে।আর আমি টুকটাক নিচের জিনিস খাটের বিছানা গুছিয়ে উপরে তুলে রাখলাম।ততক্ষনে রান্নাঘরে জল ঢুকে হাড়ি-পাতিল ভাসছে।চুলায় জল উঠে গিয়েছে।মাটির ঘরে খুবই সমস্যা এই সময়ে ,দেখতে দেখতে জল বেশি হতে শুরু করেছে।উঠান আর ঘরের মধ্যে জল সমানে চলে গিয়েছে।
(প্রকান্ড ফসলের মাঠ জলে একাকার)
আমরা সবাই অপেক্ষা করছি জল কমে যাওয়ার।এইভাবে ঘরের জিনিস গুছাতে গুছাতে সকাল হয়ে গেল।ভোরের দিকে কোনোরকম আমি একটু ঝিমটি দিয়ে নিলাম,তারপর সকালে উঠে দেখলাম আমাদের পুকুর, বাড়িঘর, ক্ষেত, পাশের ক্যানেল আর চারিদিকে প্রকান্ড ফসলের মাঠ জলে একাকার হয়ে গিয়েছে।মানুষের রোপন করা ফসল জলের নীচে ভাসছে।চারিদিকে এতটাই জল হয়েছে মনে হচ্ছে সমুদ্র ।আর আমাদের সবজি ক্ষেত জলের নীচে ডুবে গিয়েছে, পুকুর ডুবে গিয়ে সব মাছ বের হয়ে গিয়েছে😢😢.
ঘরের বারান্দায় জলের সঙ্গে পোকামাকড় আসা শুরু করেছে।আসলে বৃষ্টির জন্য এই বন্যা হয়নি।হঠাৎ করেই দামোদর নদীর বাঁধ খুলে দেওয়ার ফলে সেই জল হু হু করে ঢুকে পড়েছে চারিদিকে।আর আমাদের ক্যানেলে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা থাকায় সরতে বেশ দেরিও হয়ে গিয়েছে।কচুরিপানা চারিদিকে ভাসতে ভাসতে ফসলের মাঠে চলে গিয়েছে, এক সমুদ্রের মতো দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে।এমন অভিজ্ঞতার স্বীকার আমরা এই প্রথমবারের মতো হয়েছি,যদিও আগেও এক বছর এমন হয়েছিলো।তবে বারান্দায় হালকা জল উঠে নেমে গিয়েছিলো কিন্তু এইবার জলে ভাসছে পুরো ঘরবাড়ি।রীতিমতো বন্যার সৃষ্টি হয়েছে বলা যায়,সাধারণত এমন দৃশ্য আমরা ইউটিউবে দেখে থাকি আজ প্রথমবার সম্মুখীন হলাম।এখন আমরা সবাই অপেক্ষায় রয়েছি জল সরে যাওয়ার, কারন রাতের ক্ষতিগুলি তো পূরণ হওয়ার নয়।এমন পরিস্থিতিতে অনেকের অনেক রকম ক্ষতি হবে তাই এখন ভগবান-ই একমাত্র ভরসা।আপনারাও সবাই প্রে করবেন যাতে দ্রুত জল কমে যায়।।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thanks.
হঠাৎ করে এরকম বন্যা হলে দুর্ভোগের আর শেষ থাকে না। আপনার দাদার তো অনেক কষ্ট হচ্ছে জ্বরের জন্য । সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি যেনো তাড়াতাড়ি বন্যার জল কমে যায় এবং আপনারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।
আসলেই দাদা,হঠাৎ এভাবে রাত্রে বন্যা হয়ে যাবে আমরা আশায় করিনি।
কি দেখছি দিদি এতো জল আর জল।মহাবিপদে আছেন। একদমই ঘরের ভীতরে জল মেনে নেয়া যায় না।পশুরা বিপদ বুঝতে পারে সেজন্য ছটপট করে বিপদের সংকেত দিয়েছে। খুব সাবধানে থাকতে হবে বন্যায় বিষাক্ত পোকামাকড়ের ঘরবসতি করে মানুষের বাড়ি ঘরে।সাপখোপের অত্যাচার হয়।কি বলবো ভাষা নেই দিদি।সাবধানে থাকবেন। সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই বিহিত করবেন।
হ্যাঁ আপু,মহাবিপদে আছি।ধন্যবাদ, আপনার সুন্দর পরামর্শের জন্য।
দেখে তো খুবই খারাপ লাগলো আপু খুবই বাজে অবস্থা আপনাদের। ওদিকে হঠাৎ করে এমন পানি ওঠার কারণটা কি আপু? আর এতদিন তো বৃষ্টি হয়নি মনে হয়। তবে আমাদের এদিকে একটানা বৃষ্টি হওয়ার কারণে সব জায়গায় ডুবে গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যেগুলো নিচু জায়গা আছে বৃষ্টি হওয়ার কারণে নিচের জায়গা গুলো তলিয়ে গেছে। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল যাতে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে খুব দ্রুত।
আপু,দামোদর নদীর অতিরিক্ত জল সরানোর জন্য বাঁধ খুলে দিয়েছে তার ফলেই এমন অবস্থা।আপু, কারণটা অবশ্য আমি ভিতরে লিখেছিলাম।যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
পোস্ট পড়ার প্রথমে আমারও এটাই মনে হচ্ছিল যে, একদিনের বৃষ্টিতে এত পরিমাণ জল কি করে হতে পারে! পরে তো বুঝতে পারলাম যে, দামোদর নদীর বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে জন্য এরকম বন্যা হল😭। তবে ফসলের মাঠ, তোমাদের বাড়িঘর এবং তোমাদের সবজি ক্ষেত দেখে বোঝা যাচ্ছে খুবই খারাপ অবস্থা ওদিকে। যাই হোক, এই পরিস্থিতিতে কিন্তু বিষাক্ত পোকামাকড় এবং সাপ জলের ভেতর থাকতে পারে। আর যেহেতু ঘরের ভিতর জল উঠে গেছে তাই একটু সাবধানে থাকবে বোন। সব কিছু আগের মতো স্বাভাবিক হোক, এই প্রার্থনা করি।
খুবই খারাপ অবস্থা দাদা,জল এখন একটু কমে গিয়েছে ঘর আর উঠান থেকে।তোমার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো, অনেক ধন্যবাদ দাদা।