সমাজে অনেক মানুষ আছে যারা নীরবে সংগ্রাম করে, কিন্তু তাদের গল্প কেউ শোনে না। আজ আমি এমন এক বেকার অবহেলিত ছেলের গল্প বলব, যে প্রতিনিয়ত লড়াই করছে শুধু একটু সম্মান আর স্বাধীনভাবে বাঁচার জন্য। রিপন জন্মেছিল একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা সরকারি চাকরি করতেন, মা গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই রিপন পড়াশোনায় মোটামুটি ভালো ছিল, কিন্তু পরিবারের আর্থিক অনটন আর চাপের কারণে তার স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে।

কলেজে ভর্তি হওয়ার পর রিপন বুঝতে পারল, সে যা পড়ছে তাঁতে তাঁর আগ্রহ নেই। কিন্তু পরিবারের চাপে সে বিজ্ঞান বিভাগেই থেকে গেল। ফলাফল? একের পর এক পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলল সে।ডিগ্রি শেষ করে রিপন চাকরির খোঁজে নামল। কিন্তু প্রতিবারই সে ব্যর্থ হলো—কখনো অভিজ্ঞতার অভাবে, কখনো বা "কানেকশন" না থাকায়। মাসের পর মাস কেটে গেল, কিন্তু কাজের কোনো সন্ধান মিলল না।পরিবারও ধীরে ধীরে হতাশ হতে লাগল। প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনের কথায় তাঁর মন ভেঙে যেত।

এতো বড় হয়েছে, এখনও কিছু করল না? ওর বন্ধু তো ভালো চাকরি পেয়েছে, ও কী করছে? রিপন নিজেকে একা মনে করত। রাতের অন্ধকারে কেঁদে কেঁদে সে ভাবত—আমি কি সত্যিই ব্যর্থ? বেকারত্ব শুধু অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি করে না, এটি মানসিকভাবে একজন মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। রিপন ধীরে ধীরে হতাশা আর উদ্বেগে ডুবে গেল।সে সামাজিক গেদারিং এ যাওয়া বন্ধ করে দিল।ফেসবুক খুললে সবার সাফল্যের পোস্ট দেখে তাঁর নিজের জীবনটা ওয়ার্থলেছ মনে হত।রাত জেগে সে ইন্টারনেটে চাকরির জন্য আবেদন করত, কিন্তু কোনো সাড়া পেত না।

একদিন এক বন্ধুর পরামর্শে রিপন অনলাইন স্কিল ডেভেলপমেন্টের দিকে ঝুঁকল। সে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে শুরু করল, গ্রাফিক ডিজাইন আর কন্টেন্ট রাইটিংয়ে হাতেখড়ি নিল। প্রথমদিকে আয় ছিল নগণ্য, কিন্তু হাল না ছেড়ে সে চেষ্টা চালিয়ে গেল।ধীরে ধীরে তাঁর কাজের মান অনেক ভালো, ক্লায়েন্টরা সন্তুষ্ট হতে লাগল। এক বছর পর রিপনের মাসিক আয় আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেল। রিপনের গল্প থেকে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিজন নিতে পারি।
১. সময় নষ্ট করো না: বেকার থাকা মানেই জীবন শেষ না। এই সময়টা স্কিল ডেভেলপমেন্টে ব্যবহার করো।
২. সমাজের কথা বেশি গুরুত্ব দিও না: লোকে যা-ই বলুক, তোমার যাত্রাটা শুধু তোমার।
৩. ছোট থেকেই শুরু করো: ধৈর্য্য রাখো, সাফল্য একদিন আসবেই।

রিপনের গল্প অনেক বেকার যুবকের গল্প। আমাদের সমাজে এমন অসংখ্য তরুণ-তরুণী আছে যারা হতাশায় ডুবে আছে। তাদের একটু সহানুভূতি, একটু উৎসাহ দিলে হয়তো তাদের জীবন বদলে যেতে পারে।

আপনার চারপাশে কেউ যদি এমন সংগ্রাম করে, তাহলে একটু পাশে দাঁড়ান—এটাই পারে তার জীবন বদলে দিতে।

আমার বাংলা ব্লগের ভাইয়া ও আপুদের সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন ব্লগে।

আল্লাহ্ হাফেজ

ক্যামেরা পরিচিতি

Device	Motorola g34 5g
Camera	52 MP
County	Bangladesh
Location	Rangpur, Bangladesh

আমার নাম মোঃ আবু বকর (সিদ্দিক) ।আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক।আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা।আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর কারমাইকেল কলেজ এর(IHC)ডিপার্টমেন্ট থেকে অনার্স করতেছি।আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। সবথেকে বড় পরিচয় আমি "আমার বাংলা ব্লগ"কমিউনিটির একজন সদস্য।আমি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি।বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে আমার।পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। আমার সব থেকে বড় ইচ্ছা আমি একজন উদ্যোক্তা হব।আমি মনে করি ধৈর্য,পরিশ্রম, বিশ্বস্ততা এগুলো সফল হতে সম্মুখ ভূমিকা পালন করে। ধন্যবাদ।

Vote@bangla.witness as witness

Or

Set@rme as your proxy

আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য সবাইকে অসংখ্য "ধন্যবাদ।