কৃষি খাতে কৃষকদের সফলতা ও কৃষি খাতের ভবিষ্যৎ

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।

Source

বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ, যেখানে দেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সমাজজীবনের সঙ্গে কৃষি নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। যুগের পর যুগ ধরে কৃষক সমাজ নিরলস পরিশ্রম করে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে। কৃষকদের এই পরিশ্রম, তাঁদের উদ্ভাবনী চিন্তা এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাই আজকের কৃষিখাতে সফলতার ভিত্তি তৈরি করেছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই কৃষি খাতে কৃষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি খাতে কৃষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার মূলে রয়েছে কৃষকদের সফলতা। এখন অন্যান্য সব খাতের তুলনায় কৃষি খাতে একটু বেশি সফলতা।

বিগত এক দু'দশকে কৃষি খাতে এক বিপ্লব ঘটেছে। উচ্চফলনশীল জাতের ফসল, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে সচেতনতা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং কৃষি গবেষণার অগ্রগতির ফলে কৃষকেরা আগের তুলনায় অনেক বেশি উৎপাদন করতে পারছেন। এক সময় যেখানে একটি মৌসুমেই ফসল হতো, এখন অনেক জায়গায় বছরে তিনবার পর্যন্ত ফসল চাষ হচ্ছে। অনেক কৃষক এখন শুধু ধান বা গম নয়, শাকসবজি, ফলমূল, মাছ চাষ এমনকি গরু-মুরগি পালন মিলিয়ে বহুমুখী কৃষি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

কৃষি খাতে নারীদের অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ঘরের আঙিনা থেকে শুরু করে খেত পর্যন্ত, নারীর অবদান আজ দৃশ্যমান। অন্যদিকে, শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মও এখন কৃষিকে পেশা হিসেবে নিচ্ছেন, যেটি কৃষি খাতে এক নতুন গতিশীলতা এনেছে। তারা আধুনিক প্রযুক্তি, ড্রোন, স্মার্ট অ্যাপ ও অনলাইন মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করে কৃষিকে আরও লাভজনক ও টেকসই করতে ভূমিকা রাখছেন। কৃষি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার করার জন্য কৃষক অনেক বেশি লাভবান হতে পারছেন। ভবিষ্যতে এটি আরো বিল্পব ঘটবে।

তবে কৃষি খাতের এই অগ্রযাত্রা চ্যালেঞ্জহীন নয়। জলবায়ু পরিবর্তন, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, খরার প্রকোপ, বন্যা, মাটির উর্বরতা হ্রাস এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কৃষকদের জন্য নতুন নতুন সমস্যা তৈরি করছে। কিছু কিছু সময় প্রকৃতি এমন রুপ ধারণ করে, তখন কৃষকদের ফসলের মাঠে অনেক ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়। যদিও সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি কার্ড, ভর্তুকি, কৃষি ঋণ, কৃষি তথ্য সেবা কেন্দ্র ইত্যাদির মাধ্যমে তবুও মাঠপর্যায়ে এসব সুবিধার কার্যকারিতা আরও জোরদার করা জরুরি।এসব সুবিধা সামান্য কিছু কৃষক পেয়ে থাকেন।

ভবিষ্যতে কৃষি খাতকে আরও সফল ও টেকসই করতে হলে গবেষণাভিত্তিক পরিকল্পনা, কৃষিপণ্যের সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সুযোগ বৃদ্ধি। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের পথ প্রশস্ত করা। একই সঙ্গে কৃষকদের সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তাঁরা চাষাবাদে উৎসাহ পান এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। বিশেষ করে যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষকদের ক্ষতি হয়ে যায়, তখন অনেক কৃষক কৃষি খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন।এই বিষয়ে অতি সত্তর আমাদের দেশের সরকার কে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

সবশেষে বলা যায়, কৃষি খাতের ভবিষ্যৎ অনেক আশাবাদী, যদি আমরা এখন থেকেই সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। । কৃষককে সম্মান দিয়ে, তার সমস্যা শুনে, বাস্তবমুখী সমাধান দিয়ে আমরাই গড়ে তুলতে পারি টেকসই ও উন্নত কৃষির ভবিষ্যৎ। উন্নত কৃষি আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ। যখন একটি কৃষি খাতে অনেক দূরে এগিয়ে যাবে, তখন একটি দেশ ও এগিয়ে যাবে।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।