প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গঃ পর্ব ২৬ || আপনি কি ইউটিউবার? আমাকে প্রশ্ন || My Experience with a boy [10% @shy-fox]
ভূমিকাঃ
মাঝে মাঝে আমাদের চারপাশের জীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ, সৌন্দর্য্য ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হয় যেসব লিখার বিষয়বস্তুকে কোন নির্দিষ্ট গন্ডীর মধ্যে ফেলা যায় না। এরকম বিষয়বস্তুগুলোকে নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি একটি সিরিজ লিখছি যার নাম দিয়েছি প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ
যেখানে কোন বিষয় বা প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাক্তিগত মতামত ও পর্যালোচনা করে থাকি। এই লিখার বিষয়গুলো হচ্ছে ব্যাক্তিগত শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির সমন্বয়। পড়ে দেখুন, আশা করি ভাল লাগবে।
পর্ব ২৬ : এক ছোট ছেলের সাথে আমার অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে আমার ভাবনা
মাঝে মাঝে জীবনের কিছু কিছু ঘটনা এবং মুহূর্ত আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দেয় এবং আমাদেরকে অনেক কিছু ভাবতে অনুপ্রাণিত করে। আমাদের জীবনে অনেকগুলো সময় কেটে গিয়েছে এবং সবগুলো সময় হচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টা এবং মাসের সমষ্টি। কিন্তু এই বিশাল সময়ের মধ্যে অনেক কিছুই আমাদের মনে থাকেনা তবে বেশ কিছু জিনিস আছে যেগুলো আমাদের হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছে এবং আমরা দীর্ঘদিন মনে রাখতে চাই।
আজকে হঠাৎ করে একটা বিষয় আমাকে খুব নাড়া দিয়েছে। বিকেলবেলা আমি নামাজের জন্য মসজিদের দিকে যাচ্ছিলাম তখন পেছন থেকে হঠাৎ একটি ছেলেকে দেখতে পেলাম। সাত আট বছর বয়স হবে। ছেলেটি আমার সাথে কিছুক্ষণ হাঁটতে থাকল এবং হঠাৎ করে আমাকে ডাকলো এবং জিজ্ঞেস করল, আপনি কি ইউটিউবার?
Source: Image by Bessi from Pixabay
আমি বললাম, এরকম প্রশ্ন করছ কেন? তখন সে উত্তর দিল, সে নাকি মোবাইলে ইউটিউবে আমাকে দেখেছে। আমি তখন বললাম, হ্যাঁ আমি ইউটিউবার। তবে তুমি ইউটিউবে কি দেখো? তোমার সেখানে কি কাজ? সে একটু ইতস্তত বোধ করল এবং মনে হয় লজ্জা পেল। পরে বলল অনেক কিছুই দেখি। তার উত্তর শুনে বুঝলাম সে খুব ছোট হলেও পরিবার থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার অনুমতি আছে অথবা তার বাবা-মায়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। ইউটিউব নিয়মিতই হয়তোবা দেখে থাকে। আশ্চর্যের বিষয় হল, সে ইউটিউবার শব্দটিও জানে। ইউটিউব-ই নয় কেবল, যারা ভিডিও বানায় তাদেরকে যে ইউটিউবার বলে এটাও জানে। ইন্টারেস্টিং।
বাচ্চারা সচরাচর কার্টুন এবং বাচ্চাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখে থাকে যেমন গল্প, কৌতুক, বিভিন্ন হাসির ভিডিও ইত্যাদি। আমি শিক্ষামূলক কনটেন্ট তৈরি করি যেটা কিনা আবার ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যার। তার কাছে আমার ভিডিও-র সাজেশন কখনোই আসাটা স্বাভাবিক ব্যাপার না। হয়তোবা কোন এক সময় হঠাৎ চলে এসেছে এবং সে আমার চেহারা দেখে মনে রেখেছে। আর আমাকে মসজিদে যাওয়ার সময় দেখেই এই কথা জিজ্ঞাসা করে ফেলেছে।
বিষয়টি আমার কাছে একটু অন্য রকম লেগেছে যে, এত ছোট একটি বাচ্চা সে আমাকে মোবাইলে দেখেছে আবার এসে আমাকে সেই কথা বলছে। এখানে তার একটা ক্রিয়েটিভিটির ব্যাপার রয়েছে। আবার অন্যদিকে আরেকটি বিষয় খুব চিন্তার যে, এত ছোট বাচ্চার হাতে আমরা মোবাইল ফোনটা কেন তুলে দিয়েছি! প্রথমে আমার কাছে বিষয়টা একটু পুলকিত মনে হলেও পরবর্তীতে যখন আমি এই ছেলের কথা ভাবছিলাম তখন ভাবছিলাম তার তো এখন পড়াশুনায় মনোযোগ দেওয়ার কথা। যদিও আমি জানিনা সে কতটা সময় মোবাইল ফোনে ব্যয় করে। তারপরও অনুমান করে মনে হচ্ছে যে, এই বয়সে অন্তত মোবাইল ফোনটা হাতে নেওয়াটা উচিত নয়।
Source: Image by Tymon Oziemblewski from Pixabay
আরেকটি বিষয় আমাকে খুব পুলকিত করেছে সেটা হচ্ছে, অনেকেই হয়তোবা আমাদের দেশে ইউটিউব চালায় কিংবা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইউটিউব দেখে। হয়তোবা কোন এক সময় আমাকে নোটিফিকেশনে দেখতে পাবে এবং পরবর্তীতে রাস্তায় দেখা হলে এরকম বলবে। এটা একটা অন্যরকম অনুভূতি। আমি যদিও আমার ইউটিউব চ্যানেলটি শুধু চালিয়ে থাকি শিক্ষামূলক কনটেন্ট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের কে উপকার করার জন্য। তারপরও এটি হয়তোবা অন্যভাবে একটা প্রচারের মাধ্যম হয়ে যাচ্ছে।
প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেল আমি আমার ইউটিউব চ্যানেলটি চালাচ্ছে এবং আট হাজারের উপরে সাবস্ক্রাইবার রয়েছে আর অনেকেই অনেক রকম মন্তব্য করে এবং আরও বেশি পরিমাণে ভিডিও দেয়ার কথা বলে কিন্তু পরিবার সংসার চাকরি সবকিছু মিলিয়ে খুব বেশি ভিডিও তৈরি করা যেমন সম্ভব হয়না তেমনি অনেক সময় নিয়ে ভালো এডিটিং করে ভিডিও তৈরি করাটাও সম্ভব হয় না।
তারপরও আমি চেষ্টা করি শিক্ষামূলক কনটেন্ট গুলো অন্তত আপলোড করে রাখতে যাতে করে পরবর্তীতে যদি কেউ এই বিষয়গুলো শিখতে চায় বা ভালো টিউটিরিয়াল পেতে চায় তাহলে যাতে সহজেই পেয়ে যায়। হয়তো আজকে কেউ উপকৃত হবে না কিন্তু ভবিষ্যতে কারো প্রয়োজন হতে পারে। এখান থেকে উপকৃত হতে পারে। এই মন-মানসিকতা এবং চিন্তাধারা নিয়েই চ্যানেল চালু করা। আজকের ঘটনার মত এরকম ঘটনা মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই আমাদের ব্রেইনে ক্লিক করে ও অনেক কিছু ভাবায়। তেমন কিছু ভাবনা শেয়ার করলাম। অনেক ধন্যবাদ
আপনি কী ইউটিউবার???
কনটেন্টটা বেশ শিক্ষনীয় ছিল ভাই। এই ছেলেটা হয়তো অন্য বাচ্চাদের থেকে আলাদা। এ হয়তো সবসময় কার্টুন নিয়ে পড়ে থাকে না।তবে এই ছেলের বেশ ভালো জানাশোনা আছে বলতে হবে।
আপনার ইউটিউব চ্যনেল চালানোর উদ্দেশ্যে টা মহৎ। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট ছিল।।
অনেক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য
সুন্দর কথা বলেছেন ভাই, বাচ্চাটির দারুন ক্রিয়েটিভিটি থাকলেও আসলে এই বয়সে হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেয়া ঠিক না। হ্যা জ্ঞান আহরনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কন্টেন্ট কাজে দেয় কিন্ত সময় টা আসলে একটু বেশিই নষ্ট করেই, কাজের জন্য একটা ভিডিও দেখতে গেলে অকাজের ৫ টা ভিডিও দেখি।
আর আপনার ইউটিউব কন্টেন্টগুলো খুবই ভাল ছিলো যা আমাদের শিক্ষনীয় বিষয় বলা চলে। এগিয়ে যান ভাই এভাবেই শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে।