বোনকে মেসে রাখতে যাওয়া||মেস লাইফ শুরু
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি।
আজ সকাল থেকেই ব্যস্ত।প্রথমত ৩ তারিখ বোর্ড এর পরীক্ষা।এই পরীক্ষা এত ঝামেলার যে গত দুই বছর থেকে ঠিক আয়ত্ব করতে পারছিনা।তাই প্রচুর ব্যস্ত।তার উপর আবার টিউশন। এই সব কিছুর চাপের ভেতর খুব কষ্টে নিজের জীবন টা বাচিয়ে রেখেছি।
যাই হোক এত ব্যস্ততার ভিড়েও দায়িত্ব কিন্তু আটকে নেই বাড়ির বড় ছেলে, তাই প্রায় সব ধরনের কাজই করতে হয়।যত ব্যস্ততাই থাক, যত পরীক্ষাই থাক দায়িত্ব থেকে দূরে থাকার কোন উপায় নাই।
বোনের মাধ্যমিক পরীক্ষা সবে শেষ হল।আমি অলস মানুষ তাই উপদেশ দিলাম কয়েকদিন রেস্ট নিতে।কিন্তু সে কিছুতেই মানবে না। তার কথা সে এখনই টিউশন শুরু করবে।আর এলাকায় কোন মতেই সে থাকবে না।
ফলাফল তাকে মেসে রাখতে হবে।এটা নেহাৎ ভাল খবর, পড়াশোনার আগ্রহ থাকা ভাল।অনেকেই মনে করতে পারেন আমি না করতেছি কেন।কারন হল সব ঝড় ঝাপটা যাবে আমার উপর দিয়ে। কয়েকদিন আগে মেস খুজতে এসেছিলাম।সেই পরীক্ষা দেওয়ার পর খালি পেটে প্রায় ২কিমি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে মেস খোজা।
তারপর আবার এখন এটা মেসের সিজন না।কারন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়নি।ফলে প্রায় সব মেস ভর্তি।আর পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত কোন মেসই খালি হবে না।তাই সেদিন পছন্দের মেস থেকে নাম্বার নিয়ে বাসায় যাই।এরপর যোগাযোগ করতে করতে শেষে একটি মেসে ছিট পাওয়া গেল।
আমার বোন আর ওর এক বান্ধবী দুইজন থাকবে।পাশাপাশি দুই রুমে আপাতত সিট।এরপর উচ্চমাধ্যমিক শেষ হলে তারপর দুইজন কে একরুমে দেওয়া হবে।ওদের মেসে ওঠার কথা ছিল গত রবিবার কিন্তু সেটা পিছিয়ে আজকে আনা হয়।
গতকাল থেকেই বাধাছাদা চলছিল।আমিও ওকে খোচাচ্ছিলাম। কারন ও মায়ের হাতের রান্না তেই ভুল বের করে,সে মেসে গিয়ে কিভাবে খাবে।আর তাছাড়া ও আমার রুমের সারাদিন থাকে সেই সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।এই নিয়ে মাঝে মাঝে ওর সাথে ঝগড়াও হত।আমি ওকে বলছিলাম অবশেষে আমার রুম ফাকা হল। এখন থেকে একটু শান্তিতে থাকা যাবে।
যদিও এগুলা বলছিলাম মুখে,কিন্তু খুব খারাপ লাগছিল।কারন ও ছিল আমার বেস্টফ্রেন্ড এর মত।মন খারাপ থেকে মজার ঘটনা সব আগে ওর সাথেই শেয়ার করতাম।একটা কবিতা বা গল্প লিখলে ও হত প্রথম পাঠক।ওর থেকে মতামত নিয়েই সেগুলো তে পরিবর্তন করতাম। এছাড়া খুনশুটি তো আছেই। আজ থেকে সেগুলো আর হবে না।
মন খারাপের মাঝেই আজ সকালে সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।বিন্দুর বান্ধবীর বাবা সিএনজি রিজার্ভ করে রেখেছিল।ফলে একটু সুবিধা হল মালপত্র বারবার ওঠানো নামানো করা লাগবে না।এরপর সব গুছিয়ে তুলে নিয়ে রওনা দিলাম।এক ঘন্টার মাঝেই পৌছে গেলাম একদম মেসের সামনে।
তারপর সেই পাচতলায় মালপত্র ওঠানো নামানো করতে করতে জীবন শেষ।মালপত্র সব ওঠানো শেষ করার পর একটু বিশ্রাম নিয়ে রুম মেট দের সাথে ওদের পরিচয় করিয়ে দিলাম।এর মাঝেই আঙ্কেল সবার জন্য নাস্তা নিয়ে আসলেন।এরপর সবাই মিলে নাস্তা করতে করতে পরিচয় পর্ব সারা গেল। তারপর মেস ম্যানেজার আসলে তার সাথেও কথা বললাম। এরপর উনার উপর সব দায়িত্ব বুঝে দিয়ে,ওদের রুম মেটদের ওদের জান মালের দায়িত্ব দিয়ে চলে আসলাম।আমিও বগুড়াতে থাকি,তাই ওর অত সমস্যা হবে না।বিপদে আপদে আমি আছিই।এছাড়াও অনেক উপদেশ দিলাম কিভাবে চলাফেরা করতে হবে।কি কি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
এরপর চলে আসলাম।যদিও অনেক খারাপ লাগছে, কিন্তু তারপরেও ওর ভালর জন্যই ওকে বাইরে রাখা।সবাই প্রার্থনা করবেন ওর জন্য যাতে ওর ভবিষ্যত জীবন সুন্দর হয়।
OR
আপনার বোন তো তাহলে পড়ালেখার ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। তাই সেই সময় নষ্ট করতে চায় না সেজন্যই চাইতেছে এখনই টিউশনি শুরু করতে। আর আপনি তাকে ম্যাস লাইফে আসার জন্য সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আপনার বোনের ভবিষ্যৎ সফল হোক।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের করার জন্য।
আহারে বাড়ির বড় ছেলে হলে কি ঝামেলা।বস্তা নিয়েও টানাটানি করতে হয়🤣।মজা করলাম।যাই হোক ভাই বোনের সম্পর্ক মত মধুর আর কি হয়।ছোট বেলায় আমার ভাই ও আমাকে খুব রাগাতো সারাক্ষণ লেগে থাকতাম,এখন ডাক্তারি পেশার জন্য পোস্টিং সেই রাজশাহীতে।খুব মিস করি।যে দিন বাড়ি আসবে সেই দিন আমাদের আনন্দ শেষ হয় না।কখনও আমরা দুই ভাই বোন মিলে ঘুড়তে যাই। ভালো থাকুক পৃথিবীর ভাই বোনের সম্পর্ক। আপনার বোনের জন্য শুভ কামনা রইলো। ধন্যবাদ
কি আর করা যাবে। বড় ভাই হয়ে যখন আসছি তখন তো টানা লাগবেই।ধন্যবাদ আপু আপনার জন্যও অনেক শুভ কামনা রইল।
লেখাপড়ার জন্য তো অবশ্যই বাহিরে যেতে হবে। তবে আপনি বেশ বড় দায়িত্ব পালন করলেন। ছোট ভাই বোনদের এভাবেই সহযোগিতা করা উচিত। সাময়িক একটু খারাপ লাগারই কথা। কারণ সব সময় বাসায় পাশে থাকতো। আপদে বিপদে বিভিন্ন খুনসুটি তার সঙ্গে শেয়ার করা যেত। কি আর করা সাময়িক একটু কষ্ট হবেই। ছোট দিদির জন্য অনেক অনেক আশীর্বাদ রইল।
ধন্যবাদ দাদা।আপনার জন্যও রইল প্রার্থনা।
একজন দায়িত্ববান বড় ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন আপনি। জেনে খুবই ভালো লাগলো তবে এটা ঠিক যে বাহিরে মায়ের হাতের রান্না খেতে পারবে না। যাইহোক ভাই বোনের ভালোবাসা এবং খুনসুটি সবসময় এভাবেই থাকুক, এটাই কামনা করছি।
ধন্যবাদ আপু।আপনার দোয়া কবুল হোক।
ভাইয়ের দায়িত্ব অনেক। আপনি খুব সুন্দর ভাবে ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করলেন পড়ে খুব ভাল লাগলো। বোনের জন্য রইলো অনেক শুভকামনা। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু এমন সুন্দর মন্তব্যের জন্য।আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল।
যাক বোনটা অন্তত আপনার মত অলস হয়নি। আমি যখন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে উঠি, তারপর প্রায় দেড় মাস এর মত রেস্ট নিয়েছিলাম, আর পড়াশোনা শিখে তুলে দিয়েছিলাম। তবে বোনের প্রতি ভাইয়ের যে দায়িত্ব সেটা আপনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন এবং আশা করি ভবিষ্যতেও করবেন।
আমি তো ফার্স্ট ইয়ারের ৬মাস যাবার পর বই কিনেছিলাম।হাহাহা।বড় ভাইদের দায়িত্ব কখনো শেষ হয়না।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনাদের ভাই বোনের সম্পর্ক দেখছি বেশ মধুর।তবে এদিকে দিয়ে আপনিও অনেক লাকি,ছোট বোন আছে বলে কথা।আর হ্যা আপনার বোন কিন্তু আপনার মত অলস না হাহা☺️।
হ্যা ভাইয়া ও আমার মত অলস না।অনেক লাকি এরকম একটি ছোট বোন পেয়ে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
সত্যি বাড়ির বড় ছেলে বলে কথা, আসলে বড় ছেলেদের দায়িত্বটা অনেক থাকে। আসলে মেসের জীবন কেমন আমার জানা নেই। সত্যিই কখনো মেসে থাকি নাই তো। আসলে আপনার বোন আপনার মতো অলস নয় জেনে অনেক ভালো লাগল। আর ভাই বেনের খুনশুটি লাগা স্বাভাবিক। এখন বুঝা যাবে যে ভাই বোনের খুনশুটি কতো প্রয়োজন। বেঁচে থাকুক ভাই বোনের এই সম্পর্ক আজীবন। আপনার বোনের জন্য শুভকামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।আপনার জন্যও রইল শুভ কামনা।
বাড়ির বড় ছেলেদের দায়িত্ব একটু বেশি হয়।বড় ভাইয়ের দায়িত্ব ঠিকঠাক মতো পালন করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো।আপনার বোন বুদ্ধিমতী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।ছোট ভাই বোন গুলো বাসায় না থাকলে খারাপই লাগে।আপনার বোন ও আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবার আন্টি।আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল।