মাছ চাষের অভিজ্ঞতা||তাং:-০১/১০/২০২২ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
মাছের চাষ আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে আমাদের এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুষেরা সরাসরি মাছ চাষের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমি ব্যক্তিগতভাবে বর্তমানে ছয়টি পুকুরে মাছের চাষাবাদ করতেছি। আমার ছয়টি পুকুরের মধ্য থেকে আজকে আমি একটি পুকুরের মাছ চাষের অভিজ্ঞতা আপনাদের নিকট উপস্থাপন করছি। আমি দীর্ঘদিন মাছ চাষের সাথে যুক্ত রয়েছি। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মাছ চাষের পদ্ধতি অনেক পরিবর্তন করতে হচ্ছে আমাকে। আজ থেকে সাত আট বছর পূর্বে মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে আমি মাছের খাবার হিসেবে সাধারণত সরিষার খৈল এবং ধানের গুড়া ব্যবহার করতাম। পাশাপাশি পুকুরে পরিমাণ মতো ইউরিয়া এবং ফসফেট সার প্রয়োগ করতাম। এরকম পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে বেশ মোটামুটি ভালো পরিমাণ মাছ উৎপাদন হতো। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বর্তমানে মাছ চাষের পদ্ধতি দারুন ভাবে পরিবর্তন হয়েছে এবং মাছ চাষের ক্ষেত্রে অতি চমৎকার কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছি।
বর্তমানে মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে প্রথমেই পুকুরে মাছের খাবার প্রয়োগ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা নির্বাচন করে নিতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, পুকুরের নির্দিষ্ট জায়গা থেকে মাছের খাবার দেওয়ার জন্য সকালে একটি নির্দিষ্ট সময় নির্বাচন করতে হচ্ছে এবং বিকেলে মাছে খাবার দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্বাচন করতে হচ্ছে। প্রতিদিন মাছের পুকুরের নির্দিষ্ট স্থান থেকে নির্দিষ্ট সময়ে দুইবেলা করে খাবার প্রয়োগ করা হচ্ছে।
পূর্বের সনাতন পদ্ধতিতে মাছের চাষ করলে মাছের সেই কাঙ্খিত বৃদ্ধি হচ্ছে না। তাই মাছ চাষের ক্ষেত্রে মাছের খাবারের পরিবর্তন করতে হচ্ছে বর্তমান সময়ে। এখন মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করছি বিভিন্ন কোম্পানির রেডিমেড খাবার। বিভিন্ন কোম্পানির রেডিমেড খাবার গুলো দুই ধরনের পাওয়া যায় একটা হচ্ছে ডোবা খাবার আর অপরটি হচ্ছে ভাসমান খাবার। তবে আমি মাছ চাষের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করেছি ভাসমান খাবার প্রয়োগ করলে মাছের বৃদ্ধি বেশি হয় এবং মাছ চাষের ক্ষেত্রে খাবারের অপচয় কম হয়। কেননা ডোবা খাবার দিলে আমি দেখতে পারবো না যে, মাছ কি পরিমান খাবার খেলো বা কি পরিমাণ খাবার আরো দেওয়া লাগবে। কিন্তু ভাসমান খাবার পুকুরে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে খুব ভালোভাবেই অনুমান করতে পারছি যে, মাছের কি পরিমাণ খাবার প্রয়োজন।
বন্ধুগণ, আপনারা উপরের ছবিতে লক্ষ্য করছেন যে এগুলো হল মাছের ভাসমান খাবার। এ খাবার গুলো দেখতে অনেকটা ছোলার মতো। এই খাবারগুলো খুবই দামি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এক কেজি খাবারের মূল্য হল ৬৩ টাকা। যাহোক, এই ভাসমান খাবারগুলো পুকুরে প্রয়োগ করার সাথে সাথে মাছ এক জায়গায় জমাট বেঁধে কাড়াকাড়ি করে খেতে শুরু করে। প্রায় সব ধরনের মাছ ভাসমান খাবার খায়। বিশেষ করে পাঙ্গাস মাছ, তেলাপিয়া মাছ, রুই-মৃগেল মাছ, জাপানি মাছ, গ্লাস কার্প মাছ এবং সরপুটি মাছ ভাসমান খাবার খেতে খুবই পছন্দ করে।
মাছ চাষের ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে ভাসমান খাবারের ব্যবহারটা সত্যিই অনেক সুবিধা জনক এবং লাভজনক। শুধু তাই নয়, মাছের ভাসমান খাবার প্রয়োগের সময়টা অনেকটা বিনোদনের মধ্যে থাকা হয়ে যায়। কেননা খাবার প্রয়োগ করার সাথে সাথে পানির উপরে ভেসে মাছগুলোর কাড়াকাড়ি করে খাবার খাওয়ার দৃশ্যটা দেখার আনন্দই অন্যরকম। মাছগুলোকে যত আস্তে আস্তে খাবার দেওয়া যাবে তত বেশি আনন্দ উপভোগ করা যাবে। বন্ধুগণ, চলুন আমার পুকুরের পাঙ্গাস মাছের খাবার খাওয়ার ছোট্ট একটি ভিডিও দেখে আসি।
বন্ধুগণ, মাছ চাষের ক্ষেত্রে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করছি। বর্তমান সময়ে মাছ চাষের ক্ষেত্রে ভাসমান খাবার ব্যবহারের অভিজ্ঞতাটা আমাকে দারুন ভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।
টুইটার লিংক
আমার নানুভাইও মাছ চাষ করেন।তাই এই বিষয়গুলো মোটামুটি জানা ছিল।তবে আবার অনেক নতুন নতুন জিনিস ও শিখলাম।যেমন ভাসমান খাবারে মাছ দ্রুত বাড়ে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর তথ্যবহুল একটি পোস্ট করার জন্য।
কখনো মাছ চাষ করি নাই তাই এই সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। তবে আপনার মাছ চাষ থেকে অনেক ধারণা পেলাম। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে মাছের জন্য খাবার যখনই পানিতে ফেলেছেন তখনই সব মা মাছ একসঙ্গে হয়ে এসেছে। এই দৃশ্যটি দেখতে অনেক ভালো লেগেছে।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল