বৈশাখী মেলায় ঘোরাঘুরি।
হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি @purnima14 বাংলাদেশী,
আজ- ১৪ ই,এপ্রিল, সোমবার, ২০২৫ খ্রিঃ।
কভার ফটো
কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।আমি আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করে থাকি। আজ আপনাদের সাথে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করতে চলেছি। তার আগে প্রথমেই সবাইকে জানাই শুভ নববর্ষ। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুকে নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আজ বাংলা নববর্ষ। নববর্ষ হলো বাঙালির সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বৈশাখী মেলায় ঘোরাঘুরি করার মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।
পহেলা বৈশাখ দিনটি হল বাংলা মাসের প্রথম দিন। বৈশাখ মাস দিয়েই বাংলা মাসের শুরু। বাংলা মাসের এই প্রথম দিনটি পহেলা বৈশাখ এবং নববর্ষ নামে পরিচিত। বাঙালি এই দিনটি খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করে থাকে। এই দিনটি বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। শুধু বাংলাদেশ নয় যেখানে যেখানে বাঙালি রয়েছে সেখানে দিনটি জাঁকজমক এর সাথে পালন করা হয়। আসুন সকলে মিলে পুরাতন বছরকে ভুলে নতুন করে বছর শুরু করি। পুরাতন বছরের সাথে সাথে সকল দুঃখ মুছে ফেলি। পুরাতনকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছর বরণ করার আনন্দ উৎসবে অর্থাৎ বৈশাখী মেলায় আমি এবং বোন অংশ নিয়েছিলাম। বৈশাখী মেলা উপলক্ষে বাঙালি বিভিন্ন ধরনের আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। সকালবেলায় পান্তা ইলিশ খাওয়া, সারাদিন ভর বিভিন্ন ধরনের আয়োজন অনুষ্ঠান, আর বিকেল বেলায় মেলায় ঘোরাঘুরি। বাঙালি আয়োজনে যেন কোন ত্রুটি রাখেনি।
কয়েক দিনের জন্য বোন আমার কাছে বেড়াতে এসেছে। মাঝেমধ্যেই আমার কাছে বেড়াতে আসে। কয়েকদিনের জন্য কলেজ বন্ধ আছে সেজন্য এসেছে। পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমার কোন প্ল্যান ছিল না। যেহেতু বোন এসেছে সেজন্যই বের হওয়া। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বাঙালির ঐতিহ্য ধরে রাতে অনেক কিছু রান্না করেছিলাম। শুধু বাঙালির প্রিয় ইলিশ মাছটাই বাদ পড়ে গিয়েছিল। কারণ ফ্রিজে ইলিশ মাছ আনা ছিল না। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে পান্তা ভাত, আলু ভর্তা, ডাউন ভর্তা, বেগুনি, কুমড়ানি, রুই মাছ ভাজি,পেঁয়াজ, লঙ্কা। এই খাবারগুলা আয়োজন করেছিলাম। তারপরে আমি প্রাইভেট থেকে ফিরে এসে বোনের সাথে বসে খাওয়া দাওয়া করলাম। মাঝে মাঝে এরকম বাঙালিয়ানা হলে মন্দ হয় না। তবে এত কিছু আয়োজন বৈশাখ উপলক্ষে পড়েছিলাম।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বোন বলল সে মেলায় যাবে। তারপর আমরা কিছু সময় রেস্ট নিলাম। তারপর ঠিক করলাম মেলায় যাব। সেই মতো আস্তে আস্তে দুজন মিলে রেডি হয়ে নিলাম। রেডি হতে হতে প্রায় পাঁচটা বেজে গেল। শরীরটা বিশেষ ভালো লাগছিল না। একদম যেতে ইচ্ছে করছিল না। কিন্তু ছোট বোন এসেছে তাকে না নিয়ে গেলে মন খারাপ হবে সেজন্য আমার যাওয়া। আগে আমার এরকম মেলায় ঘুরতে বেশ ভালো লাগতো। এখন খেয়াল করে দেখি কোন কিছুই আর ভালো লাগেনা। ঘোরাঘুরি অত পছন্দ করতাম আমি। এখন ইচ্ছাই করে না। মনে হয় আমি অনেক বড় হয়ে গেছি। তা যাই হোক।
আমরা দুজন মিলে পাঁচটার দিকে একটা রিকশা করে কুষ্টিয়া ডিসি কোর্ট বৈশাখী মেলা প্রাঙ্গণে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখে মেলা বেশ জাঁকজমকপূর্ণ।এখানে প্রত্যেক বছর বৈশাখী মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের আচার অনুষ্ঠান হয়ে। সকালবেলায় তো বিভিন্ন স্কুল প্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সবাই শোভাযাত্রা নিয়ে এখানে আসে। তারপর নাচ গান বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। আমার অবশ্য সকালে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে বিকেলের থেকে সকালবেলায় বেশি মজা হয়। অনেক মানুষের ভিড় জমে। মুহূর্তগুলো দারুণ হয়।
আমরা মেলাতে প্রবেশ করে দেখলাম অনেক লোকজন সেখানে। চারিদিকে শুধু লোক আর লোক। অনেকদিন পর এরকম লোক ভর্তি বৈশাখী মেলা পেলাম। আমি আর বোন দুজন মিলে হাঁটতে থাকলাম। হাঁটতে হাঁটতে মেলা ঘুরতে থাকলাম। চারিদিকে মানুষজন এত দারুণ সেজেছে সকলের মধ্যেই বাঙালিয়ানা। দেখতে চমৎকার লাগছিল। আমরা নরমাল ভাবেই গিয়েছিলাম।
চারিদিকে দেখছিলাম অনেক ধরনের দোকান পাট এসেছে। বিভিন্ন ধরনের খেলনা এসেছে। নানা ধরনের জিনিস দেখতে পেলাম। তারপর হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়লো একটা ভাইয়ার দিকে। ভাইয়া যারা চাইছে তাদের মুখে চমৎকারভাবে বৈশাখের পেইন্টিং করে দিচ্ছেন। আমিও বোনকে করে দিতে বললাম। তারপর ভাইয়াটি বোনের মুখে সুন্দর একটি নকশা করে দিলেন। নকশাটির মধ্যে বাঙালিয়ানা ছিল। দেখতে চমৎকার লাগছিল। ভাইয়াটি নিজে মুখ ফোটে কোন টাকা চাইছিল না। যার যত টাকা ইচ্ছে সে তত দিতে পারে। ব্যাপারটা বেশ ভালো লাগলো।তারপর বোনের মুখে নাকশা অংকন করা শেষ করে তার কয়েকটা ছবি তুলে দিলাম। ছবি তোলার মত জায়গায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
তারপর আমরা দেখলাম কিছু দোকানপাট এসেছে যেখানে প্রয়োজনীয় নানান জিনিস বিক্রি হচ্ছে। আমরা সেদিকটাতে ঘুরতে গেলাম। প্রত্যেকটি দোকানে একটি একটি করে জিনিস গুলো দেখতে লাগলাম। জিনিস গুলো দেখতে অনেক ভালো লাগছিল। বোনের জন্য একটা চুড়ি পছন্দ করেছিলাম। কিন্তু সেটা বোনের হাতে না হওয়ায় সেখান থেকে চলে আসলাম। তারপর একটি খাবারে দোকান দেখতে পেলাম। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টির দোকান ছিল। সেগুলোতে অনেক ভিড় ছিল। তারপরে বোন ফাস্টফুড জাতীয় জিনিস খেতে চাইল। তার ইচ্ছামত খাবার কিনে দিয়ে খাবারের দোকান থেকে চলে আসলাম।
মেলাতে নাগরদোলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের রাইড এসেছে। সবকিছুতেই অনেক ভিড়। কোথাও যেন জায়গা নেই। এই গরমের মধ্যে সেখানে আর বেশিক্ষণ থাকতে পারছিলাম না। সেজন্য আমরা একটু ফাঁকাই চলে আসলাম। তারপর আবার মেলার মধ্যে প্রবেশ করে দোকান গুলো দেখতে থাকলাম। জিনিসপত্রের দাম খুবই বেশি চাচ্ছিল। তাই আর কিনলাম না।
একই দোকানে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কারো কাজ করা জিনিস গুলো দেখতে পেলাম। জিনিসগুলো আমার কাছে খুব ভালো লাগলো। দেখতে কিন্তু ভীষণ সুন্দর। যারা এ ধরনের শিল্প কে ভালোবাসে তারা ভালো না, বেশে থাকতে পারবে না। তারপর আমরা এভাবেই ঘোরাঘুরি করতে থাকলাম । তারপর আমাদের এক পরিচিত মানুষের সঙ্গে দেখা হলো। তার সাথে কথাবার্তা শেষ করে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম।
সন্ধ্যার একটু পরে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নি।যতসন্ধ্যা হচ্ছে মানুষ যেন আরও তত বাড়ছে। প্রত্যেক বছর এখানে সন্ধ্যার পরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় কিন্তু এবার কোন আয়োজন হবে বলে মনে হচ্ছিল না। এবার হয়তো অন্য কোথাও আয়োজন হবে। আমার আর ভালো লাগছিল না সেজন্য আর কোথাও যায়নি। ডিসি কোটের সামনে থেকে রিক্সা নিয়ে চলে আসলাম সরকারি কলেজের সামনে। সেখানে গিয়ে বোনকে নিয়ে একটু ঘোরাঘুরি করে কিছু খাবার কিনে নিয়ে রুমে চলে আসলাম। এই ছিল আমাদের বৈশাখী মেলায় ঘোরাঘুরির মুহূর্ত।
ছবির বিবরণ
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ১৪ ই এপ্রিল ২০২৫
লোকেশন:কুষ্টিয়া
প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।
আমি কে !
আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।
@purnima14


পহেলা বৈশাখ দিনটি বাংলা মাসের প্রথম দিন আর এই দিনে আমাদের বাঙ্গালীদের আনন্দের যেন কোন সীমা নেই। ছোট বড় আমরা সবাই আনন্দে মেতে থাকি। পহেলা বৈশাখে বোনের সাথে বেশ দারুন মুহূর্ত কাটিয়েছেন। অনেক কিছু আয়োজন করেছিলেন। গালে পেইন্টিং করায় দেখতে অনেক দারুন লাগছে। অনেক ধন্যবাদ আপু দারুন একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতির বিরাট একটি অংশ। বাঙালিরা এই দিন অনেক আনন্দের সাথে পালন করে থাকে। অনেকে পেইন্টিং করছিল তাই দেখে বোনের গালে করে দিয়েছিলাম। ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আরে বাহ আপনাদের ওখানে তো বেশ সুন্দর বৈশাখী মেলা হয়। আমার তো দেখেই চলে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে বোন। আপনার বোন গালিবের সুন্দর করে বৈশাখী আলপনা একে নিচ্ছেন। আর প্রতিটা ছবি এত সুন্দর তুলেছেন। এই আড়ম্বরের বৈশাখী মেলা পরে সত্যিই খুব ভালো লাগলো।
হ্যাঁ দিদি আরও অনেক জায়গায় বৈশাখী মেলা হয় বেশ জাকজমকপূর্ণ ভাবে পালন করা হয়। ছবিগুলো ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। বৈশাখী মেলায় ঘোরাঘুরি করতে আসলেই অনেক ভালো লাগে।
https://x.com/PurnimaBis34652/status/1911853759283830929?t=XKh2DGn47npPkoGKb1AiXg&s=19
https://x.com/PurnimaBis34652/status/1911854787102171277?t=9YQoSg9wHaHdRbNhpNQxZw&s=19
https://x.com/PurnimaBis34652/status/1911855344193814684?t=uuQ8zb2YaXNahpzPQLgxjQ&s=19
https://x.com/PurnimaBis34652/status/1911856036618912202?t=xgcMWofRYCKkJjTi4EIYEQ&s=19
@tipu curate
#artonsteemit
Manual Curation of TipU Curators Project
Upvoted 👌 (Mana: 4/7) Get profit votes with @tipU :)