সততার মূল্য নেই
আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।
বর্তমান যেখানেই যাই না কেন দুর্নীতি,স্বজনপ্রীতি এগুলোর বাইরে যেন কিছুই নেই।কর্মস্থল,স্কুল ,কলেজ সবজায়গায় এই সমস্যাটি বিরাজমান। আরও একটি সমস্যা দেখা যায় সেটা হচ্ছে চাকুরি ক্ষেত্রে অসৎ,দুর্নীতিবাজ লোকজনদের অবস্থান রয়েছে বড় বড় পোস্টে।যাইহোক আজকে আপনাদের সাথে রিসেন্ট আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি বিষয় নিয়ে লিখতে এলাম।আমাদের সাব্জেক্টে প্রতি বছর প্র্যাকটিকাল মার্ক থাকে।ফার্স্ট ইয়ার এবং সেকেন্ড ইয়ার নন মেজর যেই সাব্জেক্টে গুলো ছিল সেখানে কোনো স্বজনপ্রীতি করা হয়নি।যদিও তারা তাদের কথা অনুযায়ী মার্ক দেইনি তারপরেও যেটা দিয়েছেন সেটাই সন্তুষ্ট ছিলাম বলা যায়।
আমাদের কলেজে যেহেতু ক্লাস হয়না সেহেতু স্যাররা পরীক্ষার আগে কিছুদিন ল্যাব ক্লাস গুলো নিয়ে থাকেন।আর বলে দেন যারা ক্লাস নিয়মিত করবে এবং পরীক্ষায় ভালো করবে তাদের ফুল মার্ক দেওয়া হবে।আমাদের গণিতে প্রথম বর্ষে নন মেজর রসায়ন এর প্র্যাকটিকাল ছিল সেখানে পরীক্ষা ভালো দিই এবং ভাইভাতে ম্যাক্সিমাম প্রশ্নের উত্তর করতে পারি আর সব ক্লাস নিয়মিত করেছিলাম।তাই আমাকে এ গ্রেড দেওয়া হয়েছিল।আর আমি যেহেতু একটা প্রশ্ন পারিনি তাই আমাকে এ প্লাস দেয়নি সেটা আমি মেনে নিয়েছিলাম।যারা মোটামুটি ভালো করেছিল আমাদের প্রত্যেককেই এ গ্রেড দেওয়া হয়েছিল।এরপর দ্বিতীয় বর্ষ তেও একই গ্রেড পেলাম তাতে মোটামুটি খুশি ছিলাম।
এবার যখন মেজর সাব্জেক্টে এর প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা হলো তখন আমাদের নিজেদের ডিপার্টমেন্ট থেকে পরীক্ষা নেওয়া হলো।ওইবার প্রোগ্রাম রান করাতে পেরেছিলাম না আমি কারণ কম্পিউটার টা নষ্ট ছিল। যদিও ম্যাম কে তখন বলেছিলাম অন্য কম্পিউটারে বসবার সুযোগ দিতে কিন্তু তিনি দেন নি।যাইহোক সেইবার আমাকে বি প্লাস দেওয়া হলো।এখানে আমাদের কোনো ভাইবা নেই।যাইহোক এটাও মেনে নিলাম ভাগ্যের জন্য এরকম হয়েছে।তবে যারা রান করাতে পারেনি ক্লাস ও করেনি কোনোরকম তারা এ প্লাস পেল।কেউ কেউ লবিং করে পেল আবার কেউ কেউ সারের কাছে টিউশন পড়ে সেজন্য পেল।
এবার আসা যাক তৃতীয় বর্ষের গল্পে, স্যার বলে দিলেন যারা ক্লাস করবে এবং প্রোগ্রাম রান করাতে পারবে তাদের সবাইকে এ প্লাস দেওয়া হবে।যেহেতু আমার ফার্স্ট ইয়ার সেকেন্ড ইয়ার জিপিএ তেমন ভালো না।তাই চেয়েছিলাম এইবার যেভাবেই হোক আমাকে এগিয়ে থাকতে হবে।তাই সব ক্লাস করি মনোযোগ সহকারে।আমাদের যেহেতু ল্যাবে অনেকগুলো কম্পিউটার খারাপ। তাই সেগুলো সবগুলো চেক করি কোনটাই কোনটাই প্রোগ্রাম রান হয় না ক্লাস চলাকালীন।আর সেইগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি কারণ দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়া হয়না। পরীক্ষার দিন খুবই অল্প সময়ে আমি আমার কাঙ্খিত প্রোগ্রাম রান করাতে পারি এবং পরীক্ষা দিয়ে বের হই।আমি এবার সিউর যে আমাকে এ প্লাস দিতেই হবে।কিন্তু যখন রেজাল্ট প্রকাশিত হয় তখন দেখতে পারি আমাকে এ মাইনাস দেওয়া হয়েছে।তাহলে বুঝুন সারের কথার সাথে কাজের কিরকম মিল।
এরপরে আমার কাছের যেই বান্ধবী তার কাছ থেকে জানতে পারি।ওই পরীক্ষা কিছুনা আমাদের ডিপার্টমেন্ট এ একজন ছেলে আছে সে যাদের নাম দেয় সারের কাছে তাদেরকেই নাকি প্লাস দেওয়া হয়েছে।আমার ওই বান্ধবীর নাম সেই দিয়েছিল।অথচ সে কিছুই পারেনি পরীক্ষায় ওই ছেলেটির সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় দিয়ে দিয়েছে।এই ব্যাপারটি পরীক্ষার আগে বললে আমার খারাপ লাগতো না,কিন্তু সে বলেনি।
তাছাড়া কয়েকজন কে এ গ্রেড দিয়েছে তাদের লবিং অন্যভাবে ছিল যতদূর শুনেছি।যেহেতু আমার সেইভাবে কারো সাথে কোনো যোগাযোগ নেই তাই ভালো পরীক্ষা দিয়েও কাঙ্খিত নম্বর পেলাম না।আর যেই ছেলেটি নম্বর দেওয়ার জন্য সারের কাছে লিস্ট দেয় তার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক নেই।বর্তমান এমন একটি যুগে আমরা বাস করছি যেখানে সততা, নিষ্ঠা,পরিশ্রমের কোনো দাম নেই।এখানে যে যত বেশি তেলবাজ,লবিং করতে পারবেন তার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে যাবেন।আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই যদি এসব শিখে থাকি তাহলে আমরা কিভাবে একজন ভালো মানুষ হবো?
আদৌ কি দেশের জন্য কিছু করা সম্ভব এভাবে চলতে থাকলে।যেখানে একজন সারের কথার সাথে কাজের মিল নেই।সেই দিক দিয়ে নিজের ডিপার্টমেন্ট থেকে অন্যকে ডিপার্টমেন্ট এর স্যারদের প্রতি এমনিতেই শ্রদ্ধা আসে।কয়েকদিন যাবৎ এই বিষয়টি নিয়ে একদমই ভালো লাগছিলনা।অনেকে কষ্ট না করে ভালো পরীক্ষা না দিয়ে ভালো মার্ক পেয়ে গেল।অবশেষে মেনে নিলাম এখন আর সেইভাবে খারাপ লাগছে না।কারণ মেনে নিলে অনেকটাই হালকা লাগে যেকোনো জিনিস।পরিস্থিতি পরিবর্তন করা তো আর কখনোই সম্ভব না,তাই মেনে নেওয়াই শ্রেয়।
ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।
Post by-@rahnumanurdisha
Date -31st October,2024
VOTE @bangla.witness as witness

OR
VOTE @bangla.witness as witness

https://x.com/Disha1023548501/status/1851885320234766444?t=2KYQwjkTVQCLK9iDwlaqmw&s=19
আসলেই বর্তমানে সততার মূল্য একেবারেই নেই। সব দিকে এখন শুধু দুর্নীতি ছড়িয়ে গিয়েছে। এখন সৎ মানুষ পাওয়াও একেবারে মুশকিল। তবে যারা সৎ তারা কোথাও কখনো মূল্য পায় না। আপনার লেখাগুলো পড়ে আজকে অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম। আসলে পরিস্থিতি এরকমই। শেষ পর্যন্ত আপনি মেনে নিয়েছেন বিষয়টা।
ধন্যবাদ আপু পোস্টটি পড়ার জন্য।
সবকিছু এখন এরকম হয়ে গিয়েছে যে, কোথাও এখন আর সততার কোনো মূল্য পাওয়া যায় না। বাস্তবতাকে অনেক সুন্দর করে আপনি এই পোস্টের মধ্যে তুলে ধরেছেন। আপনার লেখাগুলো আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আপনি বাস্তবিক ভাবে লিখেছেন এটা।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে আপু সাময়িক সময়ের জন্য সততার মূল্য থাকে না। তবে দীর্ঘস্থায়ী সময়ে সততার মূল্য অবশ্যই থাকে। আমাদের সমাজ এবং চারপাশের পরিবেশ খুবই অন্যরকম হয়ে গেছে । এখন কোথায় সততার মূল্য পাওয়া যায় না। সবাই মিথ্যার পেছনে দৌড়ায়। এই বিষয়টা সত্যি আমাদের জন্য লজ্জার। আপনার পোস্ট টি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ধন্যবাদ আপনি ঠিক বলেছেন আমিও এটাই বিশ্বাস করি।
ব্যাপারটা জেনে খুব খারাপ লাগলো আপু। বর্তমানে প্রায় সব জায়গায় একই অবস্থা। লবিং ছাড়া কিছুই হয় না ভালোভাবে। চারিদিকে অসৎ মানুষের ছড়াছড়ি বলে,সততারও এখন কোনো দাম নেই। বরং যারা সৎ, তাদেরকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।