কাজের জায়গাটাকে ভালোবাসুন।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসি, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আজ আপনাদের সামনে একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং নিয়ে হাজির হয়েছি। যার মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে, কাজের জায়গাকে সম্মান করা।


man-597178_1280.jpg

Photo Source

বাংলায় একটা প্রবাদ আছে,

যেই পাত্রে খায়, সেই পাত্র ফুটা করে।

আমাদের চারপাশে তাকালে এই কথাটা দিবালোকের মতোই সত্য বলে প্রমাণ হয়। ব্যক্তিগতভাবে আমি এখন পর্যন্ত কাউকে পাইনি, যে তার কর্মজীবন, কর্মস্থল, কর্মপদ্ধতি নিয়ে সুখে আছে। আপনি যাকেই জিজ্ঞাসা করবেন, তিনি তার কর্মস্থল, কর্মজীবন, এবং কর্মপদ্ধতি নিয়ে হতাশা জনক কথাবার্তা বলবে। তাদের কথার সারমর্ম হচ্ছে, তারা এই কাজে সুখী নয়। আপনি যদি তাদেরকে বলেন, তাহলে সুখ আছে এমন কোন কাজ করুন। সে তাতেও রাজি হবে না।

কলেজে আমাদের বিদায় অনুষ্ঠানে আমাদের এক শিক্ষক বলেছিলেন,

বাবারা, আর কয় বছর পরেই তোমরা কর্মজীবনে পদার্পণ করবে। তোমরা সব সময় চেষ্টা করবে কর্মস্থলকে সম্মান করার। যখন তুমি কর্মস্থলকে সম্মান করতে পারবে, কাজটাকে আপন করতে পারবে, কাজটাকে ভালোবাসবে, তখনই তুমি তোমার সেরা কাজটা করে দেখাতে পারবে। মনে রেখো, সেরা কাজের প্রতিদান ও সেরা হয়।

আমি নিজে কতটুকু কথাটাকে ধারণ করতে পেরেছি, তা আপনাদের কাছে বলা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আপনি নিজে ভাবুন তো, এই কথাটাকে আপনি কতটুকু ধারণ করতে পেরেছেন? আপনি কতটুকু ধারণ করতে পারবেন? এই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কথাই ধরুন। আমাদের সকলের প্রিয় এই আমার বাংলা ব্লগের কথাই ধরুন। প্রতিমাসে আপনি এখান থেকে অর্থ উপার্জন করার সুযোগ পাচ্ছেন, ততটুকু ইফোর্ট কে আপনি দিচ্ছেন? যে সুযোগ-সুবিধাগুলো আপনি নিচ্ছেন, ততটুকু সহযোগিতাকে আপনি কমিউনিটিকে দিচ্ছেন? এই প্লাটফর্মকে দিচ্ছেন? কমিউনিটির বিষয়ে আমাদের দায়িত্ববোধ নিয়ে আমি আর একটা লেখা লিখবো ভেবেছি। সেজন্য আমি এখানে আর বেশি কথা বললাম না। কিন্তু যে মূল কথাটা আমি বলতে চাচ্ছি, আপনি বুকে হাত রেখে বলুন তো, কমিউনিটির প্রতি যে দায়িত্ববোধ আপনার ছিল, তা কি আপনি শতভাগ পূরণ করতে পেরেছেন? শতভাগ দূর, আপনি কি তার আশি শতাংশ পূরণ করতে পেরেছেন?

গুটি কয়েকজন ব্যতীত তেমন কাউকে আমার চোখে পড়েনি। ঠিক এমন ভাবে আমাদের সারাদেশেই কাজের জায়গাটাকে অসম্মান করা, অশ্রদ্ধা করা, অবজ্ঞা করার প্রবণতা চলছে। যার কারনে গুণ থাকা সত্ত্বেও একজন সত্যিকারের কর্মী হয়ে উঠতে পারেনি। আমরা এটা ভাবি না, যেই কাজটা করে আমার জীবন চলছে, আমার সংসার চলছে, আমার স্ত্রী-পরিজন চলছে, সেই কাজটাকে আমার কতটুকু সম্মান করা উচিৎ, সেই কাজটাকে আমার কতটুকু গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।

এরপর যখন কোন কারনে কাজটা আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়, তখন আমরা উপরের মহলকে দোষারোপ করি। তাদের মুণ্ডুপাত করি। তাদেরকে অভিশাপ দেওয়ার চেষ্টা করি। অথচ, এটা ছিল আমাদের পরিণতি। এই পরিণতির জন্য আমরা নিজেরা দায়ী। যারা আমাদের কাজ দিয়েছেন, তারা তো আর আমাদের অবহেলার জন্য আমাদেরকে পারিশ্রমিক দেবেন না। এই বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। ধন্যবাদ সকলকে।