ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে প্রাণ হারালো অনেকেই

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। সদা-সর্বদায় সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। যাইহোক আমি আজকে আপনাদের মাঝে ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরার চেষ্টা করব।

hurricane-63121_1280.jpg

রোদের তীব্রতা এতই প্রখর ছিল যে মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ায় দুষ্কর ছিল। পশু পাখি থেকে শুরু করে সবাই গরমের জ্বালা অতিষ্ঠ ছিল। শুকিয়ে গিয়েছিল ফসল, মরে গিয়েছিল নবরোপনকৃত অসংখ্য গাছপালা। ফেটে চৌচির হয়ে গেল ফসলি জমিন। সূর্যের প্রখরতা থেকে বাঁচার জন্য মানুষের হাহাকারের কমতি ছিল না। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করতে লাগলো বৃষ্টির জন্য। মুসলমানেরা খোলা মাঠে বৃষ্টি আসার জন্য নামাজ পড়লো, হিন্দুরা তাদের মন্দিরে প্রার্থনা দিল। এভাবেই দীর্ঘদিন কেটে গেল কিন্তু বৃষ্টির দেখা পেল না। হঠাৎ করেই আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ঘোষণা আসলো রেমাল নামে একটি ঘূর্ণিঝড় তেড়ে আসতেছে।

এই ঘূর্ণিঝড়টি ২৫ তারিখে আসার কথা হলেও আকাশে রোদ দেখেছি। তবে ২৬ তারিখ দিনের বেলা কিছুটা রোদ থাকলেও দিনের একটা অংশে মেঘে ঢেকে ফেলল সূর্যকে। ২৬ তারিখ রাত আটটা থেকেই শুরু হল প্রবল বেগে বাতাস, বইতে লাগলো বৃষ্টি। সেই থেকে এখনো অব্দি বৃষ্টি এবং বাতাস থামছেই না। এই রেমাল এতই ভয়ানক তান্ডব সৃষ্টি করেছে যে, প্রাণ কেড়ে নিল অনেক মানুষের।

ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগর থেকে। রাত ৮ টার দিকে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হানে। এই ঝড়ের প্রভাবে গতকাল থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত বরিশাল, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, ভোলা ও চট্টগ্রামে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবার মোংলায় ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ রয়েছে শিশুসহ দুইজন। তবে দুজনের মৃত্যু খুব অস্বাভাবিকভাবে হয়েছে। আমরা যদি একটু সচেতন থাকতাম তাহলে তাদের এমন করুন মৃত্যু হতো না। বরিশালের একটি ভুবনের ছাদের দেয়াল ধসে খাবার হোটেলের টিনের উপর পড়ে ২ জন জাগাতেই মরে যায়।

এসব ঘূর্ণিঝড়ে আমরা সবাই সচেতন থাকতে হবে এবং সবাইকে সচেতন করতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চল গুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আশ্রয় কেন্দ্র থাকা উচিত বলে মনে করি আমি। কারণ এসব ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতেই বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। গতকাল থেকেই বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন প্রায় সব জায়গাতেই। তার সাথে সাথে ইন্টারনেটও যেন চলছে না। সব মিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতি। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে এ পরিস্থিতিতেও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। যেটি সত্যিই আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে।

প্রাইমারি স্কুলের মত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আজকে পরীক্ষা ছিল। যদি কোন শিক্ষার্থীর ক্ষয়ক্ষতি হয় তাহলে এর দায়ভার কে নিবে? এসব কঠিন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা উচিত বলে মনে করি আমি। কারণ প্রতিটা মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা রাষ্ট্রীয়ভাবে সুনিশ্চিত করা উচিত। এইসব ভয়ানক ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস মোকাবেলা করার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের কে সচেতন করা এবং ওদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। এ সময়ে প্রতিটা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুপরামর্শ দেওয়া। যাইহোক, আজকে আর বেশি কিছু বলব না। এই পরিস্থিতিতে সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন, সচেতন থাকুন এই কামনা শেষ করছি।


নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

1000106788.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Sort:  
 last year 

রেমাল চালাচ্ছে তার কঠিন তান্ডব আর এই অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ না করে খোলা রাখার সিদ্ধান্তটি আমি মনে করি জ্ঞান হীনতার পরিচয়। অনেক মানুষ মারা গেল এই ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে। আমাদের উচিত নিজেদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। তাহলে পরিপূর্ণ মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব না হলেও অনেক মানুষ বেঁচে যাবে। আপনি সঠিক বলেছেন অবশ্যই আমাদের জনসচেতনতা অনেক বেশি জরুরী। ধন্যবাদ সময়োপযোগী জনসচেতনতামূলক পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোষ্টের আলোকে আপনার মতামতের শেয়ার করার জন্য। সত্যি প্রতিষ্ঠান খোলার রাখার বিষয়টা অনেকটাই অবাক করা বিষয়। এসব পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত। এবং যারা অসহায় দুরবস্থার মধ্যে আছে তাদেরকে কিভাবে সহায়তা করা যায়, এখন থেকে প্রতিটা শিক্ষার্থীকে হেল্পফুল করে গড়ে তোলা উচিত।

 last year 

ঘূর্ণিঝড়ের পর আমরা যখন নিউজ পেপার কিংবা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমগুলো দেখি তখন সত্যি অনেক খারাপ লাগে। কত মানুষ এই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে সেটা হয়তো আমরা ঘরে বসে বুঝতে পারি না। অনেকেই নিজের জীবন হারিয়ে ফেলে। খবর গুলো শুনলে সত্যিই অনেক খারাপ লাগে।

 last year 

আমারও আসলে সেটাই মনে হয় ভাই, উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে একটু বেশি করে আশ্রয়স্থল বানানো উচিত সরকারের। কারণ এইসব জায়গাগুলোতে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষজন। তাছাড়া ঝড়ের দিনে পরীক্ষা গুলোও রাখা উচিত হয়নি বলে আমি মনে করি। যাইহোক, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণ হারানোর কথা শুনে সত্যিই অনেক বেশি খারাপ লাগছে।