আমার বাংলা ব্লগ। স্বরচিত কবিতা। অচিন দেশের পাড়ি।
স্বরচিত কবিতা।
অচিন দেশের পাড়ি।
![]() |
---|
আমি মনে করি প্রতিটা মানুষের জন্ম নেয় নিষ্পাপ হয়ে। কৈশোর শৈশব কাটে দুরন্তপনায়, হাজার সুখের হাতছানি হাজার স্বপ্ন ভুনা। মাঝপথে এসে সব কিছু হয়ে যায় এলোমেলো। আর সেই এলোমেলো জীবনটা অনেকে গোছাতে পারে। আবার অনেকে গোছাতে পারে না। আর এ জীবনটা ঘুচাতে না পারা লোকগুলো জীবনের কষ্টের শেষ নেই। তবুও তারা রাতদিন পরিশ্রম করে। চেষ্টা করে নিজের জীবনটাকে গোছাতে। যখন দেশে অপারগ হয়ে পড়ে কিছুই করার থাকেনা, তখন মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পাড়ি জমাতে হয় ভিনদেশে।
আর এই ভিনদেশে জীবিকা উপার্জনের জন্য পাড়ি জমাতে গিয়ে হাজার লোকের প্রাণ যাচ্ছে প্রতিদিনই। কে রাখে কার খবর, তবুও কি কেউ থেমে আছে না কেউ থেমে নেই। তবুও মানুষ উড়ে যাচ্ছে দেশ থেকে দেশান্তর স্বপ্ন পূরণের আশায়। কেউবা স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, আবার কেউবা হতাশায়। তবে আমি বিশ্বাস করি প্রতিটা মানুষ তার নিশ্বাস থাকা পর্যন্ত চেষ্টা করে যায় জীবন সাজানোর জন্য। আর এই যুদ্ধটা করে যেতে হয় প্রতিটা পুরুষকে। মানুষের অবহেলা অনাদর কষ্টে জর্জরিত জীবনটাকে গুছানোটা যেমন কষ্টকর। তেমনি ভিনদেশে গিয়ে উপার্জন করাটাও অনেক কষ্টের।
প্রতিটা পুরুষ মানুষ এভাবে তার সংসার মা-বাবা ভাই-বোন ছেলে সন্তানকে সুখে রাখার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আর সেই সুখ টুকু এনে দিতে হলে প্রয়োজন প্রচুর অর্থের। আর সেই অর্থের যোগান দিতে ছুটে যায় দেশ থেকে দেশান্তর। জীবনের গল্পের শেষ থাকে না। হাজার গল্প জড়িত থাকে তাদের জীবনে। প্রতিটা পুরুষ যদি জীবনের গল্প লিখতো, হয়তো কালমে কালি ফুরিয়ে যেত, খাতার পাতা ফুরিয়ে যেত, কিন্তু লেখার শেষ হতো না। বর্তমান বহির বিশ্বে মানুষের জীবনের চেয়ে টাকার মূল্য অনেক বেশি। আর যার টাকা নেই তার মান-সম্মান নেই, আত্মসম্মান নেই, যার টাকা আছে তার সব আছে। টাকার কাছে আজ মানুষ অসহায়।
যখন একটা ছেলে বেকার থাকে কিংবা উপার্জনের কোন মাধ্যম থাকে না, তখন সে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে থাকে হাঁসির পাত্র হিসেবে। আর যেই ব্যক্তি কাছে প্রচুর পরিমাণে অর্থ সম্পদ থাকে সে হয় মহাজ্ঞানী। তার কথার মূল্য অনেক বেশি এবং সবাই তাকে বাহবাহ দেয়। সংসারেও যার কাছে টাকা আছে তার মূল্যটাই অনেক বেশি। আর সেই ব্যক্তিটা সবার থেকে ভালো। আমি জানিনা আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আমার কথা একমত হবেন কিনা, তবে এই কথাগুলো চিরসত্য। তাই মনে চেপে রাখা কষ্ট নিয়ে "অচিন দেশে পাড়ি" কবিতাটি লিখলাম। আশা করি সকলেরই ভালো লাগবে। চলুন একবার পড়ে আসি।
স্বরচিত কবিতা।
অচিন দেশে পাড়ি।
ইচ্ছা নাহি মোর রাত্রি ভ্রমন করিবার
অনিচ্ছা সত্ত্বেও যেতে হয় দূর বহুদূর
কপালে সুখ আছে কি দুঃখ আছে, ভাবীনি যে আর
অজানার দেশে উড়াল দিল আরবের ওইপার
উড়াল দিল অচিন দেশে সংসারের কথা ভেবে
জানিনা ওপারে কে বুকে টেনে নেবে
দুঃখ কষ্ট সবকিছু ভুলে ভাসিয়েছিল চোখের জলে
আরবেতে সুখ নেই দুঃখ শুধু ,বলে হাজার লোকে
লোকের কথায় কান পেতে শুনে, দিয়েছিলাম আড়ি
সংসারের সুখের জন্য পাড়ি দিলাম, অচিন দেশের বাড়ি
জীবন আমার দুঃখে ভরা, দুঃখ কিসে আর
জগৎ সংসার সাজাতে দিয়ে দিলাম অচিন দেশে পারাপার
চিন্তায় আমি ভিভোর থাকি, থাকি সর্বক্ষণ
কখন জানি সুখ পাখিটা, ধরা দিবে তখন
সুখ বলে নেই কোন কিছু, আছে শুধু মরীচিকা
বেঁচে থাকলে হয়তো হতে পারে স্বজনের সাথে দেখা
হাজার কষ্ট বুকের মাঝে, বাসা বেধে আছে আজ
ভাইকে আমার বিদায় দেওয়া এখন সবচেয়ে বড় কাজ
মায়ের কান্দে বোন কান্দে, কান্দে আত্মীয়-স্বজন
ভালো রাখার চেষ্টা আসোলে করে কয় জন
হাজার কষ্ট বুকে নিয়ে উড়াল দিল আরোব দেশে
স্বপ্ন ভুনা স্বপ্নগুলো রেখে দিল শেষে
জানিনা কখন ফুরাবে তখন, তাহার মনের ভাষা
এত কষ্ট বুকে চেপে রাখা, ছিল না তো এই আশা
বিদায় দিলাম হাসিমুখে, মনে অনেক জ্বালা
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আমি দেখিলাম মুক্ত আকাশের আলো
প্রভু তোমার কাছে প্রার্থনা করি তাহার জীবনের পুষ্পিত আলো জ্বালো।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
অচিন দেশে পাড়ি কবিতাটি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। আপনারর কবিতা পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। এভাবে লেখার চর্চা টা চালিয়ে যান। ইনশাল্লাহ আগামীতে আরো ভালো ভালো কবিতা আপনার কাছে আমরা উপহার পাবো। এই আশাই ব্যক্ত করছি।♥♥
আপু আসলে আমি ধন্য, আমার মনের ভাবগুলো কতটা প্রকাশ করতে পেরেছি কবিতায় জানিনা। তবে আপনার এই অনুপ্রেরণা আমাকে অনেক বেশি উৎসাহ যোগায়। কবিতা লেখার অনুপ্রেরণায় আপনি একজন আমার প্রিয় কবি আপু। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ছেলেদের ডেডিকেশন কোন ভাবে অস্বীকার করার নয়।অনেকেই ভাবে ছেলে বিদেশে গিয়ে থাকছে মানেই তো দাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। তার কিসের কষ্ট।কিন্তু এটা সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা। যে গিয়ে থাকে সে ই বোঝে মা, বাবা প্রিয়জনের মুখ না দেখে দিনের পর দিন কাটাতে কেমন লাগে। কোন অনুষ্ঠান, পার্বন কিছুতেই অংশগ্রহণ করতে পারে না সে। আপনি একদমই যথাযথ লিখেছেন।
একদম সঠিক কথা বলেছেন আপনি। অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হয় হতে হয় যা কোনভাবেই অস্বীকার করা যায় না। আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা দিদি।
প্রিয় ভাই আপনার শালককে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার পরে আপনার মধ্যে অন্যরকম একটি ফিলিংস কাজ করছে, যেটা আপনার কবিতাটি পড়ে বুঝতে পারলাম।অনেক অনেক ধন্যবাদ খুব চমৎকার একটি কবিতা উপহার দেওয়ার জন্য।
ফিলিংস নয় ভাইয়া দুশ্চিন্তা। তবে মনের ভাবগুলো কতটা প্রকাশ করতে পেরেছি জানিনা। সুন্দর মন্তব্য উপহার দেওয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার ভাষায় ফিডব্যাক দেয়ার জন্য
একেবারেই সত্যি কথা বলেছেন ভাইয়া। একজন বেকার ছেলে পরিবার, সংসার, সমাজ সবার কাছেই বোঝা। আপনার মন্তব্যটা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, আপনার জন্য রইল আন্তরিক অভিনন্দন।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
কবিতাটির মাঝে ভীষণ আবেগ জড়িয়ে আছে।
আসলে একজন পুরুষ তার জীবনের সুখের কথা চিন্তা না করে বিদেশে পাড়ি জমায় এবং সীমাহীন কষ্ট করে। অনেকেই তো মারাও যাচ্ছে।
কবিতার লাইনগুলো আবেগ জড়িত ছিল।
ভাইয়া কবিতা লাইনগুলো আবেগপ্রবণ ছিল কিনা জানিনা। তবে মনের কথাগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনার এই বাহ বাহ অনুপ্রেরণা দেয় কাজ করতে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।