ক্রিয়েটিভ রাইটিং || ভৌতিক রহস্য গল্প : পোড়া বাড়ি (পর্ব-০২)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি রহস্যময় ভৌতিক গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "পোড়া বাড়ি "।গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।

lost-places-776297_1280 (1).jpg

ইমেজ সোর্স

প্রথম পর্বের লিংক

যেহেতু গ্রামের বাড়ি ছিল তাই তাড়াতাড়ি খাওয়া দাওয়া করে সবাই ঘুমিয়ে যেত। তাদের প্ল্যান করা ছিল জাস্ট রাত দশটায় তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে গ্রামের একটা দোকানের সামনে দেখা করবে এবং সেখান থেকে পরে সবাই একসাথে যাবে। যাইহোক, প্ল্যান মতই তারা দেখা করে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে, তারা যে যার মত বাড়ি থেকে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে গেছিল। যেমন কেউ নিয়ে গেছিল ছুরি আবার কেউ লাঠি। তবে টর্চ লাইট প্রত্যেকেই নিয়ে গেছিল। মোটামুটি একটা অভিযানে যাচ্ছে, এরকম একটা প্রস্তুতি নিয়ে তারা পোড়াবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। দ্বীপ, পাঁচ বন্ধুর এই গ্রুপের মধ্যে সবথেকে বেশি সাহসী ছিল। সেই জন্য তাদের চলার পথে সব সময় সে সামনে সামনে যাচ্ছিলো। কিছু সময় হাঁটার পর তারা পৌঁছে যায় সেই পোড়া বাড়ির সামনে।

এই পোড়া বাড়িতে সামনে আসার পর তারা যেন ফিল করতে থাকে, অন্য কোন জায়গায় চলে এসেছে তারা। তাদের কাছে যেই জায়গাটা দূর থেকে যেমন মনে হতো সেরকমটা মনে হচ্ছিল না। অন্য কোন স্থান, অন্য কোন পরিবেশ অনুভব করে তারা, সেই সময় কি করবে তারা বুঝে উঠতে পারছিল না যদিও। কারণ প্রথমবারই তারা এরকম একটা ব্যাপার ফেস করছিল। এরকম পরিস্থিতিতে তাদের ভিতর এবার একটু ভয়ের জন্ম নেয় তখন। কিন্তু তারা যেহেতু এই পোড়া বাড়ির অভিযানে চলে এসেছিল, তাই পিছিয়ে যাওয়ার কথা আর ভাবিনি। তারা যে কোন পরিস্থিতিতেই এই বাড়ির মধ্যে যেতে চেয়েছিল। যাইহোক, সেই মুহূর্তে দ্বীপ সবাইকে কোনরকম বুঝিয়ে এই বাড়ির মধ্যে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করে এবং কোন কিছু হবে না এরকমটা ভরসা দেয় সবাইকে। তখন আস্তে আস্তে সবাই এই পোড়া বাড়ির গেটের ভিতরে প্রবেশ করে ‌।

তখন তাদের কাছে এরকমটা মনে হয়, পিছন থেকে কেউ যেন তাদের ফলো করছে। এই ব্যাপারটা প্রত্যেকের সাথেই ঘটে। কিন্তু কেউ কাউকে বলে না, সবাই মুখ বন্ধ করেই থাকে। তবে একজন আরেকজনকে ইশারায় বুঝিয়ে দেয় সবকিছু সঠিকভাবে যাচ্ছে না। তারা হাঁটতে হাঁটতে একদম পোড়া বাড়ির দরজার কাছে পৌঁছে যায়। কিন্তু দরজায় তালা দেওয়া ছিল, তারা কি করে ভেতরে প্রবেশ করবে তখন সেই চিন্তা শুরু হয় । তখন তারা বাড়ির উল্টো দিকটাতে চলে যায়। যেখানে গিয়ে তার একটা ভাঙ্গা দরজা পায় এবং সেখান দিয়ে তারা ভিতরে প্রবেশ করে। তারা যেহেতু তাদের সাথে লাইট নিয়ে গেছিল তাই সবকিছু তারা দেখতে পাচ্ছিলো । বাড়িটি পুড়ে একেবারে শেষই হয়ে গেছে, এই বাড়িতে আর কোন কিছু নেই। পঞ্চাশ বছর এর পুরনো সব জিনিসপত্র পচে গলে নষ্ট হয়ে গেছে এইরকম পরিস্থিতি। এভাবে তারা বাড়িতে কি কি রয়েছে সেগুলো দেখতে থাকে।

তারা যখন এই ঘরের মধ্যে এইসব দেখতে ব্যস্ত থাকে, তারা দূর থেকে একটা ডাক শুনতে পায়। কে যেন দ্বীপ বলে, চিৎকার করে করে ডাকছে। তারা এই ডাক শুনে ভয় পেয়ে যায় কারণ এই বাড়ির আশেপাশে অন্য কোন বাড়ি নেই। আর এখনই বা এত রাতে এখানে কেউ কেন ডাকবে। তারা একবার এই ভেবেও ভয় পায় যে , বাড়ির লোক এসে ডাকছে না তো আবার। কিন্তু বাড়ির লোকের কন্ঠের আওয়াজ এটা ছিল না, যা পরক্ষণেই তারা বুঝতে পারে। এই সময়ই আবার হঠাৎ করে অন্ধকারের মধ্যে চলতে গিয়ে দ্বীপের এক বন্ধু পড়ে যায় এবং ভাঙ্গা কাচের উপর পড়ে গিয়ে পায়ে অনেকটা কেটে যায়। এরকম পরিস্থিতিতে, এরকম জায়গায় এসে পা কেটে যাওয়ার ব্যাপারটা তাদের জন্য বিপদই ছিল।

চলবে...


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (ভৌতিক রহস্য গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা পোড়া বাড়ি গল্পের দ্বিতীয় পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  
 2 years ago 

ভাইয়া আপনার ভৌতিক রহস্য গল্পটি প্রথম পর্বটি পড়ে ভালো লেগেছিল। আর দ্বিতীয় পর্ব পড়ে দেখলাম দ্বীপ ওর বন্ধুরা ওই বাড়িটির অভিযানে গিয়েছে। ওখানে গিয়ে কিছু খুঁজে পাচ্ছে না তারা। তবে পিছে থেকে কে যেন তাদের ডাকছিল এটা অনুভব করতে পেরেছে তারা। তবে পরের অংশটুকু দেখলাম। দ্বীপের একটি বন্ধুর পা কেটে রক্ত বেরিয়েছে। সেখানে কোন রহস্য লুকিয়ে আছে কিনা তাই ভাবছি৷ আগামী পর্বে কি হয় দেখার আশায় রইলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া এই ভৌতিক গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

আমার শেয়ার করা এই গল্পের দুটি পর্বই আপনি পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।