ক্রিয়েটিভ রাইটিং || কিছু মা বাবার জেদের কারণে সন্তানের জীবনের শেষ পরিণতি খুব খারাপ হয়(শেষ পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। গত সপ্তাহে এই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম এবং আজকে তৃতীয় ও শেষ পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। গত পর্বে আপনারা পড়েছিলেন,সজীবের মা বাবা তার গার্লফ্রেন্ডের বাসায় যায় ঠিকই, কিন্তু সজীবকে তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয় না। অর্থাৎ সজীবের বাবা রাজি হয় না। কিন্তু সজীবের মা বারবার রাজি করানোর চেষ্টা করলেও,সজীবের বাবা রাজি হয় না। কারণ সজীবের গার্লফ্রেন্ডের পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না। তবে সজীবের বাবার অনেক টাকা পয়সা আছে। অর্থাৎ তারা বেশ ধনী বলা যায়। তাছাড়া সজীবের বাবা তার বন্ধুর মেয়ের সাথে সজীবের বিয়ে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে।
কিন্তু সজীব তার গার্লফ্রেন্ডকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে না। এদিকে সজীব তার গার্লফ্রেন্ডকে বারবার বলতে থাকে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে। কিন্তু সজীবের গার্লফ্রেন্ড একেবারেই রাজি হয় না। কারণ সে তার মা বাবাকে কষ্ট দিতে পারবে না। কারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সম্মানটাই আসল। তারা সম্মান জিনিসটাকে অনেক বড় করে দেখে। তাই যেকোনো ধরনের কাজ তারা করতে পারে না। তবে সজীবের গার্লফ্রেন্ডও কিন্তু সজীবকে অনেক ভালোবাসে। সজীব এবং তার গার্লফ্রেন্ড খুবই কঠিন দিন পার করছে। কারণ তাদের তখন কিছুই করার ছিলো না। এদিকে সজীবের গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে ঠিক করে ফেলে তার পরিবার। যে ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে, সেই ছেলে আমেরিকাতে থাকে। সজীবের গার্লফ্রেন্ড অনেক চেষ্টা করে বিয়ে ভেঙ্গে দেওয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফল হয় না।
কারণ সজীবের গার্লফ্রেন্ড এর মা বাবা তাকে অনেক বুঝানোর পর সে রাজি হয়ে যায়। আসলে মেয়েটার কিছু করার ছিলো না। সজীব যখন জানতে পারে তার গার্লফ্রেন্ডের অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে, তখন তার মনে হয় যে পুরো পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। সজীব তখন কি করবে কিছুই বুঝতে পারে না। এদিকে সজীবের গার্লফ্রেন্ড বিয়েতে রাজি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সে সজীবের জন্য প্রচুর কান্নাকাটি করছে। কারণ সে কখনোই ভাবেনি সজীবকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে হবে। দেখতে দেখতে সজীবের গার্লফ্রেন্ড এর বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসলো। যেদিন সজীবের গার্লফ্রেন্ড এর বিয়ে হয়,সেদিন রাতে সজীব তার রুমের দরজা বন্ধ করে, ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে। সজীবের মা তো চোখের সামনে ছেলের মৃত্যু দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
যখন তার জ্ঞান ফিরে, তখন সজীবের বাবাকে অনেক কথা শোনায়। কারণ সজীবের বাবার জেদ এর কারণে,এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সজীবের গার্লফ্রেন্ড এর বিয়ের কয়েকদিন পর সে জানতে পারে,সজীব আত্মহত্যা করেছে। তখন সে প্রচুর কান্নাকাটি করে। সজীবের গার্লফ্রেন্ড তার স্বামীর সাথে পরবর্তীতে আমেরিকা চলে যায়। এদিকে সজীবের মা সজীবকে হারিয়ে পাগলের মতো হয়ে গিয়েছে। কারণ সজীব ছিলো তাদের একমাত্র সন্তান। সজীবের বাবা নিজের ভুল ঠিকই বুঝতে পারে,কিন্তু সবকিছু হারানোর পর। তাই অতিরিক্ত জেদ কখনোই ভালো না। সজীবের বাবার অঢেল সম্পত্তি রয়েছে ঠিকই, কিন্তু কোনো ওয়ারিশ নেই। একমাত্র সন্তান সজীবকে হারিয়ে তাদের জীবনটা একেবারে এলোমেলো হয়ে যায়। (সমাপ্ত)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | ক্রিয়েটিভ রাইটিং(গল্প) |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S24 Ultra |
তারিখ | ৩১.১.২০২৫ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
ডেইলি টাস্ক প্রুফ:
X-promotion
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 5/6) Get profit votes with @tipU :)
কিছু মা-বাবার জেদের কারণে সন্তানদের জীবনে মাঝে মাঝে অপ্রত্যাশিত ও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়। অনেক সময় তারা নিজেরা যা মনে করেন, সেটাকেই সঠিক বলে মনে করেন, কিন্তু সন্তানের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নকে অবজ্ঞা করলে সেই পথ সন্তানদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একজন বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের সিদ্ধান্ত ও ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাদের পাশে দাঁড়ানো, যাতে তারা নিজের জীবন নিজের মতো করে গড়তে পারে। আপনার পোস্ট মধ্যেমে সজীবের গল্প জানতে পারলাম, শেষ পরিণতি জেনে আমার খুব খারাপ লাগলো । ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
সজীবের শেষ পরিণতি খুব খারাপ হয়েছে। গল্পটা পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে ভাই, যখন মা বাবারা তাদের ভুল বুঝতে পারে তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। সন্তানের জীবন ধ্বংস হয়ে যায় তখন আর কিছু করার থাকে না। সজীবের ভাগ্যে এমনি হয়েছে। আসলে মা বাবাদের উচিত সকল বিষয় সঠিক ভাবে বিবেচনা করা। শুধু একটা বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
আসলে প্রতিটি মা বাবার উচিত সন্তানের পছন্দের গুরুত্ব দেওয়া। এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার গল্পের প্রতিটা পর্বই পড়েছিলাম কিন্তু শেষ পর্ব পড়ে সজীবের জন্য যেমন খারাপ লাগছে তেমনি রাগও হচ্ছে। এভাবে সে তার সুন্দর জীবন শেষ করে দিয়ে কাজটি ভালো করেনি। তাছাড়া আত্মহত্যা মহাপাপ। এই কথা সবাই জেনেও কেন যে এই পথ বেছে নেয় সেটাই বুঝি না। আত্মহত্যা করলে হয়তো ক্ষণস্থায়ী কষ্ট কমবে কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী কষ্ট সবসময় পেতে হবে। তবে সজীবের মৃত্যুতে এখন তার বাবা সবচেয়ে বেশি শাস্তি পেলো,এটাই হওয়ার ছিল। সজীবের বাবা যেটা করেছে তাকে জেদ বলা যায় না বরং এটাকে অহংকার বলে। এই অহংকার সজীবের মৃত্যুতে নিঃশেষ হলো। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
কিছু কিছু মানুষের টাকা পয়সা বেশি থাকলে অহংকার এমনিতেই বেড়ে যায়। যাইহোক সম্পূর্ণ গল্পটা পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।