কেউ একটি উপজেলার সমান সম্পদের মালিক আর কারো ঘুমানোর জায়গা নেই।।
বাংলা ভাষায় প্রকাশ করো নিজের অনুভূতি-
গত শুক্রবারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে রাত প্রায় বারোটার দিকে কমলাপুর স্টেশনে নামলাম। মেইট প্লাটফর্ম থেকে গেইট ক্রস করে বাহিরে এসে কয়েকটি ফটোগ্রাফি নিয়েছি। ফটোগ্রাফি গুলো আমি শখ করে নেই নি। এগুলো দিয়ে একটি ব্লগ তৈরী করবো সেই জন্যই নিয়েছিলাম। এখানে বেশ কিছু মানুষকে স্টেশনের বাহিরে ফ্লোরে ও অভার ব্রিজের উপরে শুয়ে থাকতে দেখলাম। রাত যত গভীর হবে মানুষের সংখ্যা তত বাড়বে। তারা তিন বেলা ডাল ভাত খেতে পারে কিনা আমার জানা নেই। এমনকি আজকে রাতে তারা খালি পেটে ঘুমিয়েছে না কি ভরা পেটে ঘুমিয়েছে সেটাও আমার জানা নেই। আর যাদের জানার কথা তাদের চোখে হয়তো এই চিত্র গুলো পড়ে না। এটা শুধু কমলাপুরের এক দিকের চিত্র। অন্যদিকে যাওয়ার মত আমার সময় হয়নি। রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন শহরে এরকম হাজার হাজার অভার ব্রিজ ও স্টেশন রয়েছে । প্রত্যেকটা স্টেশনে এমন চিত্র দেখা যায়।
সিডিপির রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের মাথাপিছু অভ্যন্তরীণ আয় ২ হাজার ৬৭৫ মার্কিন ডলার আর প্রত্যেকের মাথাপিছু জাতীয় আয় ২ হাজার ৭৮৪ ডলার। আমি যদি বাংলাদেশি টাকায় ডলার গুলো কনবার্ট করি তাহলে ২৭৮৪*১১৭= ৩,২৫,৭২৮ টাকা হয়। যারা স্টেশনে ঘুমাচ্ছে তাদেরও বাৎসরিক আয় তিন লক্ষ পঁচিশ হাজার সাতশো আটাশ টাকা। প্রতি বছরের এত টাকা ইনকাম করেও তারা কেন স্টেশনে, রাস্তায় ময়লা আবর্জনায় ঘুমায়, সেটা আমার বুঝে আসে না। আপনাদের কারো বিষয়টা বুঝে আসলে আমাকে জানাবেন।
সিডিপির রিপোর্টে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য পেলাম। আর সেটা হলো বাংলাদেশ অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতিতে ৯ ও ১০ শতাংশে অবস্থান করছে। যা বর্তমানে শ্রীলঙ্কার চেয়েও বেশি। গত কয়েক বছর আগে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা, যাদেরকে আমরা লোন দিয়ে সহযোগিতা করেছিরাম। তাদের মূল্যস্ফীতিও আমাদের থেকে কম। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা যে পণ্য গুলো নিত্যদিন ব্যবহার করে সে গুলোর দাম আকাশ ছুঁয়ে গেছে। মুসর ডাল ৯৫ ভাগ, খোলা সয়াবিন ৮৪ ভাগ, বোতলজাত সয়াবিন ৫৬ ও পামঅয়েলে ১০৬ ভাগ গরুর মাংসের দাম ও ব্রয়লার মুরগি ৬০ ভাগ, চিনির দাম ১৫২ ভাগ, গুঁড়া দুধ ৪৬-৮০, পিঁয়াজ ১৬৪, রসুন ৩১০ ও শুকনা মরিচ ১০৫ ভাগ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক অনেক বেশি। Source
শুনেছি আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি টাকা বাজেট পেশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যার অধিকাংশ অর্থ বাহিরের দেশ থেকে ঋণ করে পুরন করা হবে। অলরেডি বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নাগরিকের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ৩৬৫ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ৪২,৭০৫ টাকা হয়। নতুন অর্থবছরে বাজেট পেশ করা হলে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ কত হবে সেটা জানি না। যায়হোক এবার মূল বিষয়ে কথা বলা যাক।
গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের দুইজন ব্যাক্তিকে নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। তাদের মধ্যে একজন হলেন বাংলাদেশের সাবেক সেনা প্রধান। আরেক জন হলেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সব থেকে বেশি প্রশ্ন এসেছে বেনজীর আহমেদ সম্পদের পরিমান নিয়ে। গত ৩১ মার্চ ২০২৪ তারিখে কালের কণ্ঠ পত্রিকায় “বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ” নামে একটি নিজউ প্রকাশ হয়। সেখানে নেজরীর আহমেদের যে সম্পদ দেখানো হয়েছে তাতে একটি উপজেলা হয়ে যাবে। এই জন্যই হেডলাইনে লিখলাম কেউ একটি উপজেলার সমান সম্পদের মালিক আর কারো ঘুমানোর জায়গা নেই। এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পরে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বেনজীর আহমেদের সম্পদের বাস্তবতা খোঁজে বের করে।
বেনজীর আহমেদের এক মেয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। মেয়ে ক্লাসের ফাঁকে একটু সময় কাটাবেন, একটু রেস্ট নিবেন। সে জন্য সাড়ে তিন কোটি টাকায় বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট কিনে দেন বেনজীর আহমেদ। আর বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ স্টেশনে রাস্তায় ঘুমায়। ভদ্রলোকের সম্পদের হিসাব আমি এখানে লিখলে সারাদিনে লিখেও শেষ করতে পারবো না। তবে আমি কোন কোন জেলায় বা কোন কোন জাগায় সম্পদ আছে সেটা কিছুটা উল্লেখ করার চেষ্টা করছি। সব থেকে বেশি সম্পদ হলো নিজ জেলা গোপালগঞ্জে। সেখানে ৫০০ কোটি টাকার উপরে সম্পদ রয়েছে। তাছাড়া মুন্সিগঞ্জ,ঢাকার সাভারে, উত্তরায়, যাত্রাবাড়ি, নারায়ণগঞ্জে, পূর্বাচলে, গাজীপুরে মাওনায়,ভাওয়ালে, বান্দরবনে,সুন্দরবনে,কক্সবাজারে, কোয়াকাটায় ও সেন্টমার্টিনেও বেনজীর আহমেদের সম্পদ রয়েছে। এখন তিনির সব সম্পদের তথ্য প্রকাশ হয়নি। প্রতিদিনই তিনির নতুন নতুন জাগায় সম্পদ বের হচ্ছে। সব গুলো সম্পদ এক সাথে করলে জেলা না হলেও উপজেলা হয়ে যাবে। Source
বেনজীর আহমেদ তার ৩৪ বছর সাত মাস দীর্ঘ চাকরিজীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোট বেতন বাবদ উপার্জন করেছেন এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকা। আর তার সম্পদ কয় হাজার কোটি টাকা সেটা এখনো সিউর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। এই সম্পদের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পরেই ভদ্রলোক সিঙ্গাপুর উড়াল দেন।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | কেউ একটি উপজেলার সমান সম্পদের মালিক আর কারো ঘুমানোর জায়গা নেই।। |
স্থান | কমলাপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ৩১/০৫ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
বেশ ভালো লিখেছেন ভাইয়া। আসলেই কিছু শ্রেণীর মানুষ আছে যারা সম্পদের পাহাড়ে বসে আছেন আর অপরদিকে অনেক মানুষ আছে যাদের থাকার জায়গাটুকুও নেই। যাদের আছে তাদের আরো চাই।আশেপাশের কারোর ভালোর কথা মাথায় রাখি না আমরা। মনুষ্যত্বের বড্ডই অভাব।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
জী আপু একজন দূর্নীতি করে উপজেলার সমান সম্পদ গড়ে ফেলছে। আর কেউ ঘুমানোর জায়গা পায় না। ধন্যবাদ।
আসলে বিভিন্ন দূর-দূরান্তে গেলে বাস্তবতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। স্টেশনে কিংবা ফুটপাতে অনেক অসহায় মানুষ যাদের ঘর বাড়ি নেই তারা শুয়ে থাকে। তাদের জীবনের বিষয়টি নিয়ে উপলব্ধি করলে বুঝতে পারা যায়। কতটা কষ্টে তারা জীবন যাপন করছে। আপনি সেই বিষয়টি উপলব্ধি করে অনেক সুন্দর কথা লিখেছেন ভালো লাগলো পড়ে।
জী বিভিন্ন জায়গাতে গেলে অনেক কিছু দেখা যায়। অনেক তথ্য পাওয়া যায়। ধন্যবাদ।
ঠিকই বলেছেন ভাই দূর দুরান্তা গেলে বাস্তবতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। স্টেশন কিংবা ফুটপাতে গেলে দেখা যায় অনেক অসহায় মানুষ আছে তাদের কোন ঘরবাড়ি ঠিক ঠিকানা নেই তারা এভাবেই জীবনযাপন করে। তাদের জীবনের বিষয়টি উপলব্ধি করলে বুঝা যায় জীবন কতটা কষ্টের। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আমরা এগুলো দেখলেও যাদের দেখার প্রয়োজন তারা দেখে না। ধন্যবাদ।
কি করে দেখবে ভাই তাদের চোখের উপর অতিরিক্ত পর্দা পড়ে গেছে। তাদের মন অনেক কঠিন হয়ে গেছে।