শৈশবের স্মৃতিতে বর্ষাকাল।

in আমার বাংলা ব্লগ25 days ago

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ২৯শে মে, বৃহস্পতিবার , ২০২৫ খ্রিঃ

কভার ফটো


1000050392.jpg



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো। আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করতে আমার খুব ভালো লাগে। আজকেও ভেবেছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। বৃষ্টির দিন আমার অনেক ভালো লাগে। আজ সকাল থেকে সারাদিন অনবরত বৃষ্টি পড়ছে। কখনো বা মুষলধারে আবার কখনো দু এক ফোঁটা। যদিও কিছু মানুষের জন্য খুবই বিরক্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তবে আমার কাছে বৃষ্টি খুব ভালো লাগে। বৃষ্টি হলে ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়াতে ঘুমাতে বেশি ভালো লাগে। এই বৃষ্টি দেখে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। বৃষ্টির সময় কাটানো স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠলো। শৈশবের সেই স্মৃতিময় কিছু মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করব।



বর্ষাকাল আসলেই প্রচন্ড বৃষ্টি। সারাদিন অনবরত বৃষ্টি হতেই থাকতো। গ্রামের বাড়িতে অনবরত বৃষ্টি হলে কিছুটা বিপাকে পড়তে হয়। বৃষ্টি হলে কাজকর্ম কিছুই করা হয়ে ওঠে না। উঠানে প্রচন্ড কাদা হয়ে যায়। ঘরবাড়ি কেমন যেন স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। তারপরেও বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে। বৃষ্টির দিনে মায়ের হাতে খিচুড়ি সে যেন অমৃত। যেকোনো সময় আমি খিচুড়ি খেতে ভীষণ পছন্দ করি।আর বৃষ্টি হলে তো একেবারে জমে যায়। গরম গরম খিচুড়ি ভাত সাথে ভর্তা এবং ডিম ভাজি। ছোটবেলায় বৃষ্টি হলেই মা খিচুড়ি রান্না করতেন। সবাই মিলে একসাথে বসে বৃষ্টির দিনের সেই খাওয়া দাওয়ার মুহূর্তকে অনেক মিস করছি।

খাওয়া দাওয়ার শেষ করে বসে যেতাম লুডু খেলার আড্ডায়। পাড়ার ছেলেপেলেরাও চলে আসতো মায়ের সাথে লুডু খেলতে। আমার মা আমাদের সাথে বসে যেতেন লুডু খেলতে। মানুষ একটা খেলতে না আমরা বাচ্চারা মিলেই খেলতাম। কি যে মজা হত কি বলবো। আমরা আবার বাজে ধরতাম। যে হেরে যাবে সে ২০ টাকা খাওয়াবে। সেই 20 টাকার আনন্দ আজ হাজার হাজার টাকার কাছে হেরে যায়। কত যে মজা করতাম। দিনগুলোর কথা মনে পড়লে আবার ফিরে যেতে ইচ্ছা করে।

তারপর সবাই মিলে লুডু খেলা শেষ করে বৃষ্টিতে ভিজে স্নান করার মুহূর্ত। সবাই চলে যেতাম পাশের বাড়ির দিদাদের উঠানে। সেখানে সবাই মিলে ফুটবল খেলতো যারা মেয়েরা দেখতাম। খুব ভালো লাগতো বৃষ্টিতে ভিজে গেছে খেলা দেখতে। ঘন্টার পর ঘন্টা স্নান করে যেতাম। তখন যেন ঠান্ডা জ্বরও হতো না। এখন একটু বৃষ্টির ফোঁটা মাথায় পড়লেই জ্বর এসে যায়। আর যদি সে সময় গাছে আম পাকতো। বৃষ্টির মধ্যে কুড়াতে তো দারুন লাগত।

বর্ষাকালে বৃষ্টি তো একবার শুরু হলে আর থামতোই না। সারাদিন এরকম বৃষ্টি দেখতে কখনো কখনো বিরক্ত হয়ে যেতাম। তবে মন্দ লাগত না। কারেন্ট থাকতো না। গ্রামের বাড়িতে সবাই মিলে বিছানায় শুয়ে শুয়ে গল্প করতাম। মা বাবা এবং পরিবারের সবার সাথে কত আনন্দে যে কাটাতাম দিনগুলো। এখন সেগুলো ভীষণ মনে পড়ে। গ্রামের বাড়িতে মা বাবা নানান কাজে ব্যস্ত থাকে। বৃষ্টি হলে তারা ছুটির দিন কাটাতেন। অবশ্য মাঝে মাঝে ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে আমাকে কাজে যেতে হতো মাকেও ঘর সামলাতে হতো। তারপরেও অন্য সময় গুলো থেকে বৃষ্টির দিনে কর্মব্যস্ততা কম থাকতো। কিছুটা সময় হলেও সবাই মিলে ছুটির দিন কাটাতে পারতাম।

যেদিন স্কুল থাকতো সেদিন তো মুহূর্তটা আরো ভালো লাগত। আমি ছিলাম নিয়মিত স্টুডেন্ট। আসলে প্রাইমারি স্কুলে অনেকেই নিয়মিত স্টুডেন্ট থাকে। প্রতিদিন ঝড় বৃষ্টি যাই হোক স্কুলে আমাদের যেতেই হবে। ভিজে ভিজে স্কুলে যাওয়া। আর কখনো কখনো একসাথে এক ছাতার নিচে তিনজন চারজন করে। কখনো কখনো স্কুল থেকে ফিরে আসার সময় ভিজে যেতাম। আবার কখনো কচুপাতা কিংবা কলার পাতা মাথায় নিয়ে স্কুল থেকে ফিরতাম। এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। মাঝে যখন বৃষ্টি দেখি। তখন ফিরে যাই শৈশবে। স্মৃতিগুলো তখন তাদের কাছে ডেকে নিয়ে যায়। শুধু উপলব্ধি করি আর হারিয়ে যাই।

আজ অনবরত বৃষ্টি হচ্ছে। আজকেও খিচুড়ি রান্না করে খেয়েছি। একটু বাইরে গিয়েছিলাম সেখানে বৃষ্টি উপভোগ করেছি। তবে শৈশবের মতো আনন্দ পাইনি। শৈশব সব সময় সেরা।

আজ এই পর্যন্তই।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ৩ রা ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 24 days ago 

শৈশবের স্মৃতি গুলো আবারো মনে পরে গেলো।এখনকার যান্ত্রিক জীবনে ওই দিনগুলো আর ফিরে পাওয়া যায় না।জীবনের আসল সৌন্দর্য থাকে শৈশবে।বয়স বাড়ে,চিন্তা কাঁধে আসে।

 24 days ago 

আপু আপনার পোস্টটি পড়ে আমার শৈশবের স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেলো।আসলে বৃষ্টির দিনে আমরা শৈশব কালে অনেক ধরনের খেলা খেলতাম।তবে এই বৃষ্টির মধ্যে একমাত্র খেলা রয়েছে সেটা হচ্ছে ফুটবল খেলা।কারণ বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল খেলতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে।যাই হোক আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপু।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

 22 days ago 

শৈশবের সেই মধুমাখা আনন্দ আর এখন পাওয়া যায় না। এটা ঠিক বলেছ সেই সময় ২০ টাকা দিয়ে যে আনন্দ হতো এখন হাজার হাজার টাকা দিয়েও সেই আনন্দ হয় না। গ্রামে বর্ষাকালের সময়ে বৃষ্টি হওয়া মানেই খিচুড়ি খাওয়ার দিন। আমিও খিচুড়ি প্রচুর পরিমাণে পছন্দ করি। যেকোনো সময় খেতে ভীষণ ভালো লাগে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।