শৈশবের স্মৃতি : চাঁদনী রাতের স্মৃতিময় গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ০৯মে,শুক্রবার, ২০২৫ খ্রিঃ

কভার ফটো


1000046234.jpg

কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।আমি আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করে থাকি। বিভিন্ন টপিক নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আজ আপনাদের সাথে শৈশবের গল্প শেয়ার করব। প্রত্যেকের জীবনে শৈশবের স্মৃতিময় অনেক গল্প রয়েছে। তেমনি আমার জীবনেও রয়েছে। মানুষ হারিয়ে যায় কিন্তু তাদের সাথে জড়িত স্মৃতিগুলো সারা জীবন থেকে যায়। সেরকমই একটি স্মৃতিময় গল্প আজ শেয়ার করব।



দিদাকে হারিয়েছি আজ দেড় বছর হয়ে গেল আর দাদুকে হারালাম আজ চার দিন। দিদা দাদুর বড় আদরের বড় নাতনি ছিলাম আমি। সবাই তো বাবার বাবা মাকে ঠাকুরমা এবং ঠাকুর দাদু বলে থাকে। আমরা আবার ছোটবেলা থেকে দাদু দিদা বলেই ডাকি। বংশের প্রথম সন্তান ছিলাম আমি। আমি পৃথিবীতে আসাই আমার দিদা অনেক খুশি ছিলেন। দোল পূর্ণিমার দিনে আমার জন্ম হয়েছিল। দিদা শখ করে নাম রেখেছিলেন পূর্ণিমা। দিদার দেওয়া নামেই আজ আমার পরিচয়। দিদা হারানোর দেড় বছর হওয়ার পরেও এখনো দিদাকে বড্ড মনে পড়ে। এতদিন দাদুকে নিয়ে কোন ভাবে থাকতাম দাদুকে হারানোর পর যেন খারাপ লাগা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তাদের সাথে কাটানো স্মৃতিময় সময় গুলো আমাকে বারবার ফিরে নিয়ে যাচ্ছে অতীতে।

আজ রাতের বেলায় উঠানে চেয়ার নিয়ে বসে ছিলাম। বসে বসে চাঁদের দিকে দেখছিলাম। ফুটফুটে চাঁদ উঠেছে। দেখতে ভারী মিষ্টি লাগছে। দেখতে দেখতে মনে পড়ে গেল ছোটবেলায় দিদা দাদাদের সাথে কাটানো স্মৃতিময় সময়। কুমারখালীতে থাকতেন সেখানে আমাদের বড় বাড়ি রয়েছে। বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ রয়েছে। আমার দিদার জন্য সব সময় আমাদের বাড়ির উঠানে বড় একটা মাচা বানিয়ে রাখা হতো। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত দিদা সেখানে সময় কাটাতেন। আমরা যখন নাতি নাতিরা বেড়াতে যেতাম তার সাথে সেখানে শুয়ে শুয়ে অনেক গল্প করতাম। চাঁদনী রাতে দিদার কোল ঘেঁষে শুয়ে তার জীবনের গল্প কিংবা নানান ধরনের শিক্ষনীয় বিষয় শুনতে অনেক ভালো লাগতো।

দিদা দাদুর সাথে আমার জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছি আমি। মাঝে মাঝে ছুটি পেলেই চলে যেতাম দিদা দাদুর কাছে। এখন গরমের সময় আমাদের আম গাছ ছিল প্রচুর। রাত আটটা নটা অবধি দিদা দাদু এবং আমি ওই মাচায় বসে আম পাহারা দিতাম। ঝড় হলে ছুটে গিয়ে আমাকে ধরে নিতাম। কত আনন্দের ছিল সময় গুলো। দাদুর হাত ধরে ট্রেনে করে কত গিয়েছি ওই বাড়িতে। দিদা দাদুর মাঝে শুয়ে ওই চাঁদ দেখার মুহূর্তগুলো এখনো ভুলতে পারিনা।

আজকে রাতের চাঁদটা দেখে অনেক বেশি মনে পড়ছে দিদা দাদুর কথা। দিদাকে হারালাম দাদু কেউ হারালাম। ভালোবাসার দুটো আপন মানুষকে হারিয়ে ফেললাম। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে তারা চলে গেলেন। কত ভালবাসার ছিল মানুষগুলো। দিদার সাথে সবথেকে বেশি ভালো সম্পর্ক ছিল আমার। তার সাথে অতিবাহিত করা সুন্দর সুন্দর সময় গুলো সব সময় আমার হৃদয় থেকে যাবে স্মৃতি হয়ে। এই সুন্দর স্মৃতি গুলো আমি কখনোই হারাতে চাই না। দিদা এবং দাদুকে আমি কখনোই ভুলতে পারবো না।

শুধু চাইবো তারা পরপারে ভালো থাকুক।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 3 months ago 

অনেক অল্প সময়ের ভিতর দুইজন ভালোবাসার মানুষকে হারিয়েছ এটা সত্যিই অনেক কষ্টের ব্যাপার। জীবনে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসার মানুষগুলোর ভেতরে দিদা দাদু অন্যতম। তোমার এই সুন্দর গল্পটা পড়ে আমারও শৈশবে দাদুর সাথে কাটানো সুন্দর মুহূর্তগুলো ভীষণ মনে পড়ছে। আমরা তাদেরকে হারিয়েছি তবে তাদের সাথে কাটানো সেই সুন্দর মুহূর্তকে হারাতে চাইনা। সেই সুন্দর স্মৃতিময় মুহূর্তগুলোকে আপন করে রাখবো হৃদয়ের অন্তরালে।