শৈশবের স্মৃতিতে: "মালাই সমাচার"
নমস্কার
শৈশবের স্মৃতিতে: "মালাই সমাচার"
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।আবার কিছু মিষ্টি স্মৃতি ফিরে পেতে চাই বারেবারে।আবার কিছু স্মৃতি সাময়িক সময়ের জন্য আনন্দ দেয়,আবার কিছু স্মৃতি ভয়ভীতু করে তোলে।তেমনি একটি মিষ্টি শৈশবের গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট্ট গল্পখানি।তো চলুন শুরু করা যাক--
গ্রীষ্মকালের দুপুর।রোদের উজ্জ্বলতায় খা খা করছে চারিদিক, গাছেরা থাকে তৃষ্ণার্ত ,পথিকেরা পিপাসু হয়ে আশ্রয় নেয় গাছের ছায়ায়।পাখিরা জড়ো হয়ে গাছের মগডালে ঘন পাতার ফোকরে।হাওয়াগুলি বিষাক্ত হয়ে বইছে আর সঙ্গে মাঠের সাদা ধুলো সাদা মেঘের মতো উড়িয়ে নিয়ে।সবমিলিয়ে এই সময় একটু ঠান্ডা জল হলেই আত্মতৃপ্তি সকল জীব কিংবা প্রাণীর।
ঠিক তখনই গ্রামে ইটের রাস্তা দিয়ে মাইকে গান বাজিয়ে আগমন ঘটতো আইসক্রিমওয়ালার।আমরা তখন আইসক্রিমকে বরফ কিংবা মালাই বলতাম।গানের ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মাঝেই ভাঙাচুড়া বালতি, প্লাস্টিক বোতল,সাবানের খোসা ,টিন ভাঙা,লোহা ভাঙা দিয়ে আইসক্রিম নিয়ে যান--- বলে লম্বা হাঁক শুনতে পেতাম।আবার কেউ কেউ বলতো---
আর লাক্স সাবানের খোসা দিয়ে যান।
আর গ্রামে তখন আইসক্রিমওয়ালার মাইকে দুটিই গান বাজতো।বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মমতাজ বেগমের কণ্ঠে----
ফাইট্টা যায়... বুকটা ফাইট্টা যায়...
আর একটি হচ্ছে---নান্টু ঘটকের কথা শুইনা...
যেইনা দূর থেকে এই গান শুনতে পেতাম অমনি মায়ের কাছে কিংবা বাবার কাছে গিয়ে বায়না করতাম----আইসক্রিম খাবো টাকা দাও।বাবাও দিতেন এক টাকা আবার কখনো দুই টাকা।সেটা নিয়েই দৌড়ে চলে যেতাম আইসক্রিমওয়ালার কাছে।যদিও আইসক্রিমওয়ালা গ্রামে আসতেই ভ্যানের পিছু পিছু একদল বাচ্চারা জড়ো হয়ে দৌড়াতে থাকতো।কিন্তু সত্যি বলতে সেই 1 টাকা কিংবা 2 টাকার আইসক্রিমে যে স্বাদ পেতাম সেটা এখন 50 টাকার আইসক্রিম খেয়েও সেই তৃপ্তি পাই না।তখন পেপসি পাওয়া যেত না আর আইসক্রিমে কোনো ফুড কালার ছিল না।তবে সেই মালাইয়ের মধ্যে নারিকেল কোড়া,দুধ ও মিষ্টির ফ্লেভার থাকতো।যেটা দারুণ স্বাদের এককথায়।
তখন সাবানের খোসা ছিল দুর্মূল্য।বিশেষ করে লাক্স সাবান মেখে তার নতুন খোসা রেখে দিতাম আইসক্রিম খাওয়ার লোভে।দুটি খোসা দিয়েই একটি আইসক্রিম পেয়ে যেতাম,কতই না মজার ছিল সেই দিনগুলো।এরপর ধীরে ধীরে আইসক্রিমের দাম বেড়ে তিন টাকা,পাঁচ টাকা,দশ টাকা হতে হতে এখন বিভিন্ন দামে গিয়ে ঠেকেছে।কিন্তু সেই এক টাকা আর দুই টাকা দামের আইসক্রিম আর পাওয়া যায় না।আর গ্রামে এখন গান বাজিয়ে ভ্যানে করে হাঁকতে হাঁকতে আইসক্রিমওয়ালার দেখাও তেমন পাওয়া যায় না।
সেই শৈশবের দিনগুলো এখন বড্ড বেশি মিস করি।হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না দিনগুলো শুধু স্মৃতি হয়েই রইয়ে যাবে আমাদের মনের চৌকুঠুরিতে।।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।
টাস্ক প্রুফ:
কমেন্টস লিংক--
https://x.com/green0156/status/1910856800993227215
https://x.com/green0156/status/1910857646380294276
https://x.com/green0156/status/1910858451544133704
https://x.com/green0156/status/1910859444382056530
0.00 SBD,
0.00 STEEM,
0.00 SP
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ছোটবেলার অনেক স্মৃতি এখনো মনে পড়ে। আসলে সময়গুলো হারিয়ে গেছে। কিন্তু স্মৃতিগুলো রয়ে গেছে। আপনার এই পোস্ট পড়ে আপনার শৈশব স্মৃতি সম্পর্কে জানতে পারলাম আপু।
আসলেই সময়গুলো দ্রুত হারিয়ে গেছে, ধন্যবাদ আপু।
সত্যি আমাদের শৈশব আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি মিস করি এবং স্মৃতিচারণ করে থাকি। তবে আমার ছোটবেলাতেও এমন টিন ভাঙ্গা, লোহা ভাঙ্গা এবং প্লাস্টিকের জিনিস দিলে আইসক্রিম পাওয়া যেত। বর্তমানেও দুপুরবেলা আইসক্রিমের গাড়ি আসে তবে অর্থের বিনিময়ে আইসক্রিম কিনতে হয়। আর আগেকার মত এক দু টাকায় আইসক্রিম পাওয়া যায় না। সত্যি আমাদের শৈশব অনেক মধুর। অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ।
আসলেই কিছু কিছু বিষয়ে খুবই মধুর ছিল শৈশবগুলি।ধন্যবাদ আপনাকে।