অযত্ন ও অসুস্থতায় বেড়ে ওঠা আমার সন্তান।🥲

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

হ্যালো বন্ধুরা

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি।

আমার এই ছোট্ট মেয়েটার জন্মের পরপরই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি,একেবারে যাকে বলে পঙ্গু..!ওর কোনো যত্ন আমি করতে পারিনি!কাজের মানুষ সবকিছু করে দিয়েছে।ওকে কোলে নেওয়ার জন্য মানুষ দরকার ছিলো কিন্তু সেই মানুষ নেই!বড় মেয়েও তখন খুব ছোট আর ওর বোধবুদ্ধি কম ছিলো,আর প্রচন্ড জেদি ও খুব জ্বালাতো। পরে আমার পরিচিত ভাবিদের পরামর্শে সাবলেটে উঠি যাতে পাশের ভাবি একটু ওর খেয়াল রাখতে পারে।ঐ বিল্ডিংয়ে চারজন ভাবি আমার খুব খেয়াল রাখতো,আমার মেয়ের দেখাশোনা করতো।তাদের মেয়েরাও খুব আদর করতো।আমার পাশের রুমের ভাবি ভাই তো নিজের মেয়ের মতো করে আদর করতো।

IMG_20250723_231730.jpg

অতিরিক্ত ঔষধের কারণে মেয়েটা শুকিয়ে গেছে এখনও তার প্রভাব আছে..🥲

IMG_20250723_231804.jpg

ওর বাবা তিনবেলা দুই মেয়েকে খাইয়ে দিতো তারপর নিজের খাবার খেতো।আমি কখনোই খাওয়াতাম না
ওর বাবা যতোই ব্যস্ত থাকুক না কেনো এটা তাঁর রুটিন ছিলো।এভাবেই আমার মেয়েটা বড় হয়।যখন ওর তিন বছর বয়স তখন ও অসুস্থ হয়ে পড়ে প্রচন্ড ঠান্ডা লাগে! তারপর থেকে ডাক্তার চিকিৎসা ওষুধ লেগেই ছিলো।একটু ঠান্ডা লাগলেই কাশি শুরু হতো!আর দিনের পর দিন সেই কাশি কমতো না রাতের পর রাত ঘুমাতে পারতো না, সাথে আমি ওর বাবাও।অনেক ডাক্তার দেখানো হয় পরীক্ষানিরীক্ষাতেও তেমন কিছু ধরা পড়েনি।ইবনে সিনা পপুলার ল্যাবএইড সবখানেই ডাক্তার দেখানো হয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সাময়িক ভালো থাকে আবার শুরু হয়।

IMG_20250723_231742.jpg

পড়াশোনা ছাড়া কিছু বোঝে না পড়া পাগলি টা..🥰

শেষে পিজিতে দেখানো হলো তখন ওখান থেকে বললো এটা এ্যালার্জিজনীত সমস্যা! ওকে বাহিরে বের করা যাবে না,রুম সবসময় ধুলোবালি মুক্ত রাখতে হবে ও কখনোই গরুর দুধ খেতে পারবে না।আর ও যখন নিজে কোনোদিন পুকুর নদীতে স্নান করা শিখবে সেদিন হয়তো এটার থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবে।আগের দিনের মানুষ এগুলো বলতো তখন বিশ্বাস হয়নি।ওর আট বছর বয়স পর্যন্ত এই সমস্যা ছিলো।বাড়িতে গেলে পুকুরে স্নান করতে বললে ভয় পেতো।কিন্তু এখন বাড়িতে গেলে পুকুর থেকে উঠতেই চায় না।

IMG_20250723_231753.jpg

২০২০ সালে যখন আমি গোবিন্দগঞ্জ এ আসি তখন একবার এরকম অসুস্থ হয়ে পড়ে কোন ডাক্তার দেখাবো ভাবছিলাম।প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য আমি আগের প্রেসক্রিপশন দিয়ে বাহাদুর ফার্মেসীতে যাই ওষুধ নেওয়ার জন্য,দোকানদার ভাই উনি আমাকে জিজ্ঞেস করে কি কি সমস্যা হয়? তখন আমি বলি এই এই হয়।উনি শুনে আমাকে বলে আপনি যদি আমাকে বিশ্বাস করেন তাহলে আমি দুইটা ওষুধ দেই,খাওয়ায় দেখতে পারেন!আমি তো মা সন্তানের ভালোর জন্য সবকিছু করতে চাইবো।তখন বললাম ঠিক আছে দেন।তখন আগের ওষুধ বাদ দিয়ে ওনার দেওয়া ওষুধ নিলাম।মেয়েকে খাওয়ানো শুরু করলাম দুই দিন পর মেয়ে অনেক টা আরাম বোধ করলো।তারপর ওনাকে গিয়ে বললাম ভাই মনে হয় কাজ হচ্ছে!!তখন উনি বললো এই ওষুধ দুটো সবসময় ঘরে রাখবেন যখনই সমস্যা হবে সাথে সাথে খাওয়াবেন।বিশ্বাস করেন দুই থেকে তিনবার মনে হয় ওর এরকম হয়েছিলো।তারপর থেকে আজ পর্যন্ত আর কখনোই ওর সেইরকম ভয়াবহ রকমের ঠান্ডা লাগেনি।

আগে যখন ওর কাশি হতো মনে হয় ওর চোখ দুটো বেড়িয়ে আসবে দম কখন বন্ধ হয়ে যাবে!আমি রাতের পর রাত ওকে কোলে নিয়ে বসে কান্না করছি।কাশি কমানোর জন্য ওর বাবা আমি কতো আপ্রাণ চেষ্টা চালাতাম। মেয়েটা আমার অসহায়ের মতো আমাদের দিকে দেখতো আর ওর চোখ দিয়ে জল পড়তো ঐ দৃশ্য গুলো যে কতোটা কষ্টের ছিলো তা শুধু আমিই জানি।ভগবানের অশেষ কৃপা এবং সেই ভাইয়ের পরামর্শে মেয়েটা অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছে।এখন বছরের ছয় মাসে হয়তো একটু ঠান্ডা লাগে ওষুধ না খেতেই সেরে যায়।এটা ভগবানের আশীর্বাদ।🙏🙏

#ThankYouGodForEverything 🙏🙏🙏

সাথে বাহাদুর ফার্মেসীর ভাইকে ধন্যবাদ🙏🙏

99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWY6ryCgnizd4SmozHPACxnHF8Lc4cYHYazhMMYtnXHUFLoeHg6pvGz8XiqU4kJ9G4Wwh7s6WvRRrwCpUijw4cW.jpeg

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

Break3.jpg
Banner User.png
Break3.jpg

আমি অতশী চাকী (বৃষ্টি) । নতুন নতুন রেসিপি বানিয়ে সবাইকে খাওয়াতে আমার ভালো লাগে। আর ভালো লাগে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে। আমি "ভালো কাজের, ভালো ফল কথাটাতে" মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং মেনে চলার চেষ্টা করি।

Break3.jpg

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovfEfMUsxphK2C94MUmPesRzxucV6L5C5WztC1e4L1hqcx2mH3BcV9oEFqiwTsErcMQNvVa4puc9hxr4N1FcnerVs (1).gif

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.