ভ্রমণ: নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ইট ভাটায় গিয়েছিলাম

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

🥰...এবং হিন্দু ভাই বোনদের কে আদাব.💗🙏।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন নতুন সদস্য, এই প্লাটফর্মের সাথে দীর্ঘ কয়েক মাস আগে যুক্ত হয়েছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে ।আজকে আমি আপনাদের সাথে নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ইট ভাটায় ঘুরতে যাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

নানার বাড়িতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকালে হাঁটতে বেরোনো। কুয়াশার পর্দা ভেদ করে রোদের আলো যখন পড়ে, চারপাশে যেন রূপকথার এক জগৎ। ধানক্ষেতের ওপর শিশির, বাঁশঝাড়ের ছায়া, দূরে দেখা যায় কিছু বাচ্চা ছাগল দৌড়ে বেড়াচ্ছে। মায়ের হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে মনে হয়, সময় যেন একটু ধীরে চলে এখানে।দুপুরের দিকে নানা বললেন, চলো, ইট ভাটায় যাই।ছোটবেলায় অনেকবার গিয়েছি, কিন্তু বড় হয়ে এই প্রথম যাচ্ছি। রাস্তায় কাঁচা মাটির গন্ধ, ধুলো উড়ছে, মাঝে মাঝে গরুর গাড়ি দেখা যায়। দূর থেকে দেখা যায় ভাটার উঁচু চিমনি আর ধোঁয়ার রেখা। ধীরে ধীরে কাছে যেতে যেতে মনে হচ্ছিল, যেন কোনো রহস্যের দিকে এগোচ্ছি।

ইট ভাটায় গিয়ে দেখি কত মানুষ কীভাবে কাজ করছে। কেউ মাটি কেটে আনছে, কেউ তা পায়ে মেখে আকার দিচ্ছে, কেউ রোদে শুকোতে বসাচ্ছে, আর কেউ ইট চুল্লিতে ঢোকাচ্ছে। আগুনের তাপ ছিল এত বেশি যে দাঁড়িয়ে থাকা মুশকিল, কিন্তু সেই কাজের দৃশ্য দেখতে চোখ ফেরাতে পারিনি। বুঝলাম, এই ইট শুধু মাটির নয়, মানুষের ঘাম আর পরিশ্রমের ফল। আসলে প্রতিটি কাজের মাঝেই অনেক বেশি পরিশ্রম আছে। কিন্তু ইট ভাটার প্রতিটি কাজের মধ্যে একটু বেশি পরিশ্রম আছে। আপনারা হয়তো এই বিষয়ে সকলেই জানেন/অবগত আছেন।

একটার ওপর আরেকটা করে যত ইট সাজানো, দেখে মনে হচ্ছিল লাল রঙের ছোট ছোট পাহাড়। একজন শ্রমিক কাছে এসে হাসিমুখে বললেন, দিদি, এগুলো সব নতুন বেরিয়েছে। ওদের মুখে ক্লান্তি থাকলেও চোখে ছিল গর্ব। এই মুহূর্তটা যেন শিখিয়ে দিল, কঠোর পরিশ্রমের মধ্যেও মানুষ আনন্দ খুঁজে নিতে পারে। আসলে এই পৃথিবীতে এমন কিছু কিছু কাজ রয়েছে যে গুলোর মধ্যে অনেক বেশি পরিশ্রম থাকলে আনন্দ রয়েছে। ঠিক অনুরূপ ভাবে ইট ভাটার মধ্যে কাজ করা প্রতিটি শ্রমিকের পরিশ্রম কঠোর হলে ও তাদের মুখে আনন্দের হাসি দেখতে পাওয়া যায়। তাদের মাধ্যমে আমরা দালানকোঠা বাড়ি তৈরি করতে পারছি।

ইট ভাটার এক পাশে কয়েকজন ছোট ছেলে-মেয়ে খেলছিল। ওদের কৌতূহলী চোখে আমাদের দিকে তাকানো, আবার হাসতে হাসতে দৌড়ে পালানো সবই মনে করিয়ে দিল আমার নিজের ছোটবেলার কথা। কত সহজ আর সোজা ছিল তখন জীবন। তাদের খেলা ধুলা করা দেখে আমার ও খেলতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু সেদিন আমার খেলার তেমন একটা সুযোগ ছিল না।যদি সুযোগ থাকতো তাহলে আমি ও তাদের সাথে কিছু সময় খেলতাম। পরবর্তী সময়ে যদি খেলার সুযোগ পাই তাহলে তাদের সাথে খেলার চেষ্টা করবো। আসলে ছোট বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করতে আমার কাছে অনেক বেশী ভালো লাগে।

ইট ভাটা থেকে ফিরে আসার সময় মনে হচ্ছিল, এখানে শুধু ইট নয়, রয়ে গেল মাটির স্পর্শ, মানুষের পরিশ্রমের গল্প, আর একটুখানি গ্রামের ছোঁয়া। নানার বাড়ির এই ভ্রমণ সত্যিই অন্যরকম, এমন স্মৃতি মনের ভেতর অনেক দিন বেঁচে থাকে। পরবর্তী সময়ে গেলে আরো বেশি সময় নিয়ে ঘোরাঘুরি করার চেষ্টা করবো।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।