ব্যবিলনের শুন্য উদ্যান @lailatulferdawsi “10% beneficiary to @beautycreativity”

in Beauty of Creativity2 years ago (edited)

খৃষ্টপূর্ব ৬০০ সালে ইরাকের ইউফ্রেটিস নদীর তীরে ব্যবিলনের শুন্য উদ্যান তৈরি করা হয়েছিল। নামে একে শুন্য উদ্যান বলা হলেও অবকাঠামোটি শুন্যে ভাসমান ছিলো না। বিস্তৃত সমতল ভূমির মাঝে সুউচ্চ স্তম্ভ তৈরি করে তার উপর এই বাগান বানানো হয়েছিল। সম্রাট নেবুচাদনেজারের স্ত্রী ছিলেন মিডিয়ান রাজ্যের রাজকন্যা। মিডিয়ান ছিলো পাহাড় পর্বতে ঘেরা অনেক সুন্দর একটি দেশ। কিন্তু ব্যবিলন হলো সমতল মরুভূমি।

babylonian-oasis-artist-rendering.webp

Source
তাই বিয়ের পর ব্যবিলনে এসে সবসময় সম্রাজ্ঞীর মন খারাপ থাকত। তখন নেবুচাদনেজার সম্রাজ্ঞীকে খুশি করতে বিশাল এক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি তার প্রাসাদের সাথেই একটি কৃত্রিম পাহাড় তৈরির আদেশ দেন এবং সেই পাহাড়ে তৎকালীন সময়ের প্রায় সকল ফুল ও ফলের গাছ লাগিয়ে একটি বিশাল বাগান গড়ে তোলেন।এই বাগানের আয়তন ছিল ৮০০ বর্গফুট এবং মাটি থেকে এর উচ্চতা ছিলো প্রায় ৮০ ফুট। বিশাল বিশাল স্তম্ভের উপর নির্মিত বারান্দায় বিভিন্ন রকমের গাছ লাগিয়ে বাগান গড়ে তোলা হয়েছিল।
ধারনা করা হয় সেই বাগানে ছিল ৫ থেকে ৬ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। বাগানটি তৈরি করতে ৪ হাজার শ্রমিক কাজ করেছে এবং বাগান পরিচর্যার কাজে ১০৫০ মালিনি নিয়োজত ছিল।

animation-hanging-gardens-of-babylon_1.jpg
Source
ব্যবিলনের শুন্য উদ্যানে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বাগানকে সতেজ রাখা। কারন এমনিতেই মরুভূমি এলাকায় বেশি বৃষ্টিপাত হয় না। আবার এত উঁচুতে পানি তোলা সহজ কাজ নয়। তবে স্থাপনাটি ইউফ্রেটিস নদীর তীরে বানানো হয়েছিল বলে পানির উৎস নিয়ে চিন্তা ছিল না। তৎকালীন সময়ের এক সেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাগানে পানির সমস্যা সমাধান করা হয়। ৮০ ফুট উচ্চতায় পানি তুলতে প্যাঁচানো একধরনের নলের ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ধারণা রয়েছে। মেসোপটেমীয় সভ্যতাগুলোর মধ্যে ব্যবিলন ছিল অন্যতম সেরা। সেইজন্য এই মহাপরিকল্পনা তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল বলে গবেষকদের ধারনা।খৃষ্টপূর্ব ৫১৪ সালে ব্যবিলনের পার্শ্ববর্তী পারশ্য রাজ্যের সাথে এক ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে নেবুচাদনেজারের সাজানো বাগান সম্পুর্ন ধ্বংস হয়ে যায়।

Jardins-de-Babylone-01-V.jpg
Source

১৯৮৩ সাল থেকে ইরাক সরকার ব্যবিলনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করানোর চেষ্টা করে আসছিল। তিন দশকেরও বেশি সময় পরে তাদের সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। কিন্তু অনেকেই ব্যবিলনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়াতে আপত্তি জানিয়েছে। কারন ব্যবিলনের এই শুন্য উদ্যান বলতে না কোনো কিছু অবশিষ্ট আছে আর না কেউ কখনো এই বাগান দেখেছে। আধুনিককালের বহু গবেষকের ধারনা ব্যবিলনের যুলন্ত উদ্যান বলতে আসলে কিছুই ছিল না। এই বাগানের পুরোটাই সাহিত্যকদের কল্পনা। ব্যবিলনের বাগান সম্পর্কে প্রথম বর্ণনা পাওয়া যায় খৃষ্টপূর্ব ৪০০ সালের দিকে। বেরোসাস নামের ব্যবিলনের এক পুরোহিত সেই বর্ণনা দেন। এরপর গ্রীক ইতিহাসবীদেরা বেরোসাসের বর্ণনার উপর ভিত্তি করেই ব্যবিলনের শুন্য উদ্যান ধারনাটিকে জনুপ্রিয় করে তোলে।

Hanging_Gardens_of_Babylon.webp
Source

ইনশাআল্লাহ সামনে আবার লিখবো। আমি স্টিমিটে এর আগে আরেকটা পোস্ট করেছিলাম। এই যে আমার ভ্যারিফাইড পোস্টের লিংক:
https://steemit.com/hive-172186/@lailatulferdawsi/achievement-1-my-first-post-lailatulferdawsi

ধন্যবাদ

লায়লাতুল ফেরদৌসী অপর্না(@lailatulferdawsi)
বাংলাদেশ