বদলাপুর বয়েজ সম্পূর্ণ মুভি রিভিউ। ১০% বেনিফেসিয়ারি @shy-fox এর জন্য।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
মুভির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
------- | ------ |
---|---|
মুভির নাম | বদলাপুর বয়েজ |
পরিচালক | শৈলেস বর্মা |
লেখক | সুশেনথিরান |
সিনেমাটোগ্রাফি | সংকেত শাহ |
সংগীত | সামীর অঞ্জন, শচীন গুপ্তা |
মুক্তি | ১২ ডিসেম্বর ২০১৪ |
দৈর্ঘ্য | ২ ঘন্টা ৩ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
অভিনয়ে | নিশান, সুশান্ত ক্যানদিয়া, অঙ্কিত শর্মা, অন্নু কাপুর, পুজা গুপ্তা, আমান বর্মা আরো অনেকে। |
মুভির কাহিনী সংক্ষেপ
দক্ষিণ ভারতের ছোট একটি গ্রাম নাম বদলাপুর। এইগ্রামে পানির খুবই সংকট। পানির সংকটের জন্য ঠিকমতো চাষাবাদ করতে পারে না গ্রামের কৃষকরা। এজন্য গ্রাম থেকে সরকারের কাছে অনেক চিঠি পাঠানো হলেও তা সরকারের হাতে আর পৌছায় না। এজন্য রাগে ক্ষোভে ঐ গ্রামের এক কৃষক আমাদের মুভির হিরো বিজয়ের বাবা আত্মহত্যা করে। যাইহোক এরপরও চাষাবাদের পানির কোনো ব্যবস্থা হয় না। এরপর বিজয় ঐ গ্রামেই একজন জমিদারের বাড়িতে কাজে লাগে। কারণ তার মা এবং তার চলার আর কোনো উপায় ছিল না। এই বদলাপুর গ্রামে সবাই কাবাডি খুব ভালোবাসে। এবং এখানকার ছেলেদের কাবাডির একটা দলও আছে। এই দলের সবচেয়ে ভালো খেলোয়ার হলো বিজয়। তবে বিজয় এখন আর কাবাডি খেলে না। কারণ বিজয় যে জমিদারের কথাই কাজ করে সে বিজয় দিয়ে শপথ করিয়ে নেয় বিজয় আর কখনো কাবাডি খেলবে না। যাইহোক এভাবেই চলতে থাকে। বিজয় বড় হয়ে যায়।
বদলাপুর গ্রামের ছেলেরা ছোট থেকে কাবাডি খেলে কিন্তু তারা এখন পযর্ন্ত কোনো দলকে হারাতে পারে নাই। এজন্য গ্রামের সবাই তাদেরকে নিয়ে হাসাহাসি করে। কিছুদিন পরেই বাদলাপুর গ্রামে একটি মেলা আছে। মেলাটা প্রত্যেকবছর বেশ জাকজমকভাবে হয়। তাই ঐ গ্রামের ছেলেরা ঠিক করে ঐ মেলায় কাবাডি খেলার জন্য পাশের গ্রামের ছেলেদের আমন্ত্রণ দেবে এবং জিতে পুরো গ্রামবাসিকে দেখিয়ে দেবে। কারণ ঐ পাশের গ্রামের ছেলেরা ওদের থেকেও খারাপ খেলে। এরই মধ্যে এই মেলা দেখতে অন্য এলাকা থেকে একজন মেয়ে এই এলাকায় বেড়াতে আসে। তার সাথে বিজয় দেখা হয়। দুজন দুজনকে পছন্দ করতে শুরু করে। কাবাডি খেলার দিন বাদলাপুর বয়েজের একজন খেলোয়ার কম হয়। সবাই বিজয়কে খেলতে বলে। কিন্তু সে কীভাবে খেলবে। কারণ সে কারো কাছে না খেলার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যাইহোক কাবাডি দলের সবাই জমিদারকে অনুরোধ করে যেন সে বিজয়কে খেলতে দেয়। জমিদার রাজি হয়। এবং বিজয় খুবই ভালো খেলে। কিন্তু ম্যাচের মাঝে সাজিদ নামের একটি ছেলের সাথে ঝামেলা হয়। এবং খেলাটা অসম্পূর্ণ রেখে শেষ করে দেওয়া হয়। এবং এই খেলা দেখার প্রধান অতিথি হয়ে আসে সাবেক ভারতীয় কাবাডি দলের অধিনায়ক এবং বর্তমানে রেলওয়ে টিমের কোচ। বদলাপুর বয়েজের খেলা দেখে উনার ভালো লাগে। এরপর ঐ ঝামেলার জেড় ধরে জমিদার বিজয়কে তার বাড়ির কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেয়।
এরপর মেলা দেখা শেষ হয় যায়। ঐ মেয়েও বাড়ি চলে যায়। কিন্তু দুজন দুজনকে ভালোবাসে এবং টান অনুভব করে। এরপর বদলাপুর বয়েজ একটি বিজ্ঞাপন দেখে যে অনেক বড় একটি কাবাডি টুর্নামেন্ট হচ্ছে। এখানে তারা অংশ নিতে চাই। এজন্য তারা সবাই তৈরি হয়ে টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য অন্য এক শহরে যায়। গিয়ে ঐ রেলওয়ে কোচের সাথে দেখা হয়। উনি বলেন এটা জাতীয় পর্যায়ের খেলা। এখানে এভাবে খেলা যায় না। তোমরা পরবর্তী বছরে আগে থেকে চেষ্টা কর। কোনো উপায় না দেখে বদলাপুর বয়েজ চলে যাচ্ছে। এমন সময় টুর্নামেন্ট ম্যানেজমেন্ট খবর পাই যে একটা দল খেলবে না। অর্থাৎ দল এখন ৩১ টা। কীভাবে হবে টুর্নামেন্ট। রেলওয়ের ঐ কোচ একটু বুদ্ধি করে বদলাপুর বয়েজকে ঐ জায়গাই খেলিয়ে দেয়। প্রথম ম্যাচের প্রথম হাফে বদলাপুর বয়েজ খুবই খারাপ করে। এরপর ঐ কোচের অনুপ্রেরণায় তারা সবাইকে চমকে দিয়ে ম্যাচ জিতে নেয়। এবং বদলাপুর বয়েজকে সামান্য ট্রেনিং দেওয়াই রেলওয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে কোচের ঝামেলা হয়। এবং উনি ঐ রেলওয়ে টিমের কোচ পদ থেকে সরে দাড়ান এবং তারপর থেকে উনি বদলাপুর বয়েজের কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
যথারীতি কোচের সহযোগীতায় অসাধারণ খেলতে থাকে বদলাপুর বয়েজ। এবং তারা সেমিফাইনালে পৌঁছে যায়। এই খবর গ্রামে জানজানি হলে সবাই তো খুব উচ্ছসিত হয়ে যায়। বদলাপুর গ্রামের সবাই খুব আনন্দিত। সেমিফাইনালেও বদলাপুর বয়েজের জয় নিশ্চিত। ঠিক সেই সময়ই ঘটে যায় একটা অঘটন। অন্য দলের একজন ইচ্ছা করে বিজয়কে ফাউল করে। বিজয় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে যায়। ডাক্তার কোচকে বলে ও ফাইনাল খেলতে পারবে না। খেললে একটু এদিক ওদিক হলে বিজয়ের মৃত্যুও হতে পারে। এই কথা কোচ বিজয়কে জানাই। কিন্তু বিজয়কে বলে এই ম্যাচ আমি খেলবই। কারণ এই ম্যাচে আমাকে কিছু প্রমাণ করতে হবে। যাইহোক কোচ আর বাঁধা দেয়নি। এবং বদলাপুর বয়েজের ফাইনাল হয় রেলওয়ে টিমের সাথেই। অনেক ভালো খেলে বদলাপুর বয়েজ। ম্যাচের শেষ সুযোগ উভয়ের পয়েন্ট সমান। রেলওয়ে টিমের খেলোয়ার অ্যাটাক করছে বদলাপুর বয়েজের কোটে মাএ একজন সে হলো বিজয়। অসাধারণ দক্ষতায় খেলোয়ার কে ধরে পড়ে যায় বিজয়। জিতে যায় বদলাপুর বয়েজ কিন্তু বিজয় আর উঠে দাঁড়ায়নি..........। বিজয় ওখানেই মারা যায়। এরপর ঐ কোচ বিজয় সব আবেগ সব দাবি তুলে ধরে। এবং সরকার তা মেনে নেয়। এবং ঐ গ্রামে চাষের পানির ব্যবস্থার জন্য খাল খনন করা হয়। এবং বিজয় মৃত্যুর খবরে তার ঐ প্রেমিকা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এবং বদলাপুর এর গলিতে গলিতে বিজয় খুজে বেড়ায়। এখানেই শেষ হয়ে যায় মুভিটা।
ব্যক্তিগত মতামত
এই মুভিটা থেকে তিনটা ভিন্ন ধরনের শিক্ষা অর্জন করা যায়। প্রথমত পিতার স্বপ্ন পূরণ। মুভিতে বিজয় তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য শেষ পযর্ন্ত লড়ে গেছেন। এবং শেষ পযর্ন্ত তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দ্বিতীয়ত খেলাধুলা যারা প্রকৃতপক্ষে ভালোবাসে যারা নিজের দলকে ভালোবাসে তারা নিজের জীবন দিয়ে খেলে থাকে। তার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য থাকে দলের সাফল্য অর্জন করা। এবং তৃতীয় টা ছিল ভালোবাসা। এখানে বিজয় যে মেয়েকে ভালোবাসত। বিজয়ের মৃত্যুর পর মেয়েটা বিজয়কে ভুলে যায়নি। বদলাপুরের গলিতে গলিতে ভারসাম্যহীণ অবস্থায় মেয়েটা বিজয়কে খুজে বেড়ায়। কখনো ভালোবাসা শেষ হয় না।
আইএমডিবি রেটিং : ৫/১০
ব্যক্তিগত রেটিং : ৭/১০
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
আমি ইমন হোসেন। আমি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় বসবাস করি। আমি একজন ছাএ। আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করি। আমি খেলাধুলা ভালোবাসি। বিশেষ আমি ফুটবল পছন্দ করি।
মুভিটা কখনো দেখি নেই। তবে আপনার মুভি রিভিউটা পড়ে অনেক কিছু শিখলাম। একজন বাবার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন। তাছাড়া আরো কিছু বিষয় জানতে পারলাম। যেটা অনেক ভালো লাগলো। আশা করি আরো সুন্দর মুভি রিভিউ পাবো আপনার কাছ থেকে। ধন্যবাদ ভাইয়া
ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।
মুভিটি কখনো দেখা হয় নাই তবে আপনার রিভিউটি পড়ে ভালো লাগলো । মুভি থেকে কিছু শিক্ষণীয় বিষয় জানতে পারলাম । বিজয় তার বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য জীবনের শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছে । কখনো ভালবাসা শেষ হয়না এটা একদম যথার্থ ছিল । ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে সুন্দর একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করার জন্য ।
আপনাকেউ ধন্যবাদ ভাই
মুভিটি আমি আগে দেখিনি। কিন্তু আপনার রিভিউ পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে মুভিটা। আশা করি কিছুদিনের মধ্যেই মুভিটা দেখবো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই অসাধারণ মুভিটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই💖💖