এপ্রিল ফুল
এপ্রিল ফুল নামটা শুনে অনেকেই ভাববেন এটা আবার কোন ধরনের ফুল।গাদা ফুল,জবা ফুল,শীতকালীন ফুল,বর্ষাকালীন ফুল কত প্রকারেরই তো ফুল দেখলাম কিন্তু এপ্রিল ফুল বলে কোন ফুলের নাম তো শুনিনি।নতুন কোন প্রজাতি নাকি? তাদের জন্য বলি না, এটা বাংলার ফুল না ইংরেজীর fool.যার অর্থ হল বোকা।
এই এপ্রিল ফুল দিবস পালন করা হচ্ছে অনেক আগে থেকে।তাও প্রায় ষোড়শ শতাব্দীতে এপ্রিল ফুল দিবস চালু হয়। এই দিবসের উদ্ভব ফ্রান্সে বলে ধারণা করা হয়।আর এই দিবস চালুর পেছনের ঘটনাটি কিন্তু বেশ মজার।আপনারা অনেকেই জানেন আমাদের নববর্ষ পহেলা বৈশাখে।কিন্তু সারাজীবন কিন্তু নববর্ষ পহেলা বৈশাখে ছিল না।
সেই মোঘল আমালের আগে আমাদের নববর্ষ ছিল অগ্রহায়ণ মাসে।তারপর মোঘল আমলে সম্রাট আকবর নববর্ষ পহেলা বৈশাখে নিয়ে আসেন। এর পেছনের কারন ছিল কর আদায়।আমরা বর্তমানে পহেলা জানুয়ারী ইংরেজী নববর্ষ পালন করি বটে।তবে এই নববর্ষ সব সময় পহেলা জানুয়ারি ছিল না। আগে ফ্রান্সে আগে জুলিয়াস সিজারের প্রচলিত জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করত। সেই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নববর্ষ পালিত হত,পহেলা এপ্রিল। এরপর অন্য এক শাসক গ্রেগরি সেই ক্যালেন্ডার এর পরিবর্তন করেন।
তার নতুন ক্যালেন্ডার অনু্যায়ী নববর্ষ পালন শুরু করা হয় পহেলা জানুয়ারি থেকে।যেটা আমরা এখনো করি৷অর্থাৎ আমরা বর্তমানে যে ক্যালেন্ডার ফলো করি সেটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। কিন্তু নতুন নিয়ম যে সবাই মেনে নেবে এমন কখনো হয়না।দুই একজন থাকেই যারা বিরোধীতা করবে।
ফলাফল অনেকেই সেই জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পহেলা এপ্রিলেই নববর্ষ পালন করতে থাকে। কিন্তু এদের সংখ্যা কম।তাই এদের সবাই বোকা বলা শুরু করল।আর এপ্রিলের নববর্ষ হয়ে উঠল বোকাদের উৎসব।আর এই বোকাদের উৎসব ক্রমে বিবর্তিত হতে হতে বর্তমানে এসে হয়ে গেছে এপ্রিল ফুলস ডে।
এই এপ্রিল ফুল অর্থাৎ বোকা বানানোর দিবস কিন্তু সারা বিশ্বে বেশ ঘটা করেই পালন করা হয়।সবাই মেতে ওঠে একে অপর কে বোকা বানাতে। এই যে যেমন আজ সকাল বেলা দাদা আমাদের সবাইকে তার এক অ্যানাউন্সমেন্ট দিয়ে বোকা বানালো।আজ দিনটাই শুরু হয়েছিল আমার বোকা হবার মাধ্যমে।
সকাল সকাল ঘুম থেকে নোটিফিকেশন চেক করতে ঢুকেছি ডিস্কোর্ডে এমন সময় দাদা ঘোষণা দিলেন আজ থেকে কমিউনিটি বন্ধ। একে ঘুম থেকে উঠেছি,ব্রেইন পুরোপুরি জাগে নি তারউপর এমন মারাত্মক খবর। মনে হল যেন ৪২০ভোল্টের ধাক্কা খেলাম।দাদা হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন নিল,এখন যাব কোথায় কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।এমন মনে হচ্ছিল যেন সদ্যই গার্লফ্রেন্ড এর সাথে ব্রেকাপ হয়েছে।
খুবই হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম।এতদিনের কমিউনিটির সাথে সম্পর্ক এভাবে কি ছিন্ন করা যায়।ডিস্কর্ডের জেনারেল চ্যাটে সবাই আমার মত একে অপরকে জিজ্ঞেস করছিল।এরপর দাদা বলেন সবাইকে এপ্রিল ফুল বানিয়েছেন।তখন মনে হল বুক থেকে পাথর নেমে গেল।যাই হোক এমন সিরিয়াস ভাবে বোকা অনেকদিন হইনি।তবে দাদা যখন বলল যে উনি মজা করেছেন তখন প্রচুর হেসেছি।এমন মন খুলে অনেকদিন পর হাসলাম।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
আরে আর কয়েন না ভাই। অফিস থেকে ফিরে মাত্র মোবাইল হাতে ডিসকোডে ঢুকলাম। হঠাৎ চোখে পড়লো দাদার নোটিফেকিশন। মনটা যেন ভেঙ্গে গেল। আর দু চোখ বেয়ে পানি পড়া শুরু হয়ে গেল। হঠাৎ নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি এপ্রিল ফুল। হা হা হা। আর একবার জীবন ফিরে পেলাম।
একদম আপু।ভিষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
চমৎকার লিখেছেন। ইতিহাস নিয়ে বেশ ঘাটাঘাটি করেন দেখছি। যাইহোক পুরো বিষয়টা জানা হয়ে গেলো আমার নিজেরও।
আর সত্যি বলতে দাদার ওই ঘোষনা দেখে আমিও রীতিমত একটু চমকে গেছিলাম হাহা।😁
তা একটু ঘাটাঘাটি করি বৈকি।ধন্যবাদ ভাইয়া উৎসাহ দেওয়ার জন্য।
সবার দেখছি একই অবস্থা, দাদা আসলে আজকে সবাইকে বোকা বানিয়েছে। আমি তো এনাউন্সমেন্ট দেখে প্রথমে হতাশ হয়ে গেলাম। তারপর বুঝলাম আমাদেরকে বোকা বানানো হয়েছে। 🤣🤣
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আজকে যখন অ্যানাউন্সমেন্ট দিয়েছিল দাদা তখন অ্যারাউন্সমেন্ট পড়ার পরে সত্যিই খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। প্রথমে পড়ে খুবই মন খারাপ হলো। পরে নিচের দিকে দেখলাম লেখা আছে এপ্রিল ফুল। পরে আমি বুঝতে পারলাম আমাদেরকে বোকা বানানো হচ্ছে। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ দাদা আমিও হঠাৎ করে বিকেল বেলা দেখে বুকের মধ্যে একটা শব্দ করতে শুরু করছিল ৷ যদিও প্রথমে বিষয়টি বুঝে উঠতে পারি নি ৷ এরপর জেনারেল অনেক জনের সাথে কথা বলে পরে বুঝলাম বিয়য় টি ৷আর তখনি অনেক টা শান্ত অস্তিরতা দুর হলো ৷ সর্বোপরি আমার বাংলা ব্লগ হলো এখন প্রানকেন্দ৷