মেয়েদের সেল্ফ ডিফেন্স শেখা মোটেও বিলাসিতা নয়
|| আজ ১৬ আগস্ট, ২০২৪ || রোজ: শুক্রবার ||
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে পরিবার সহ বেশ ভালো আছি। সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমি আমার আজকের নতুন পোস্ট শুরু করছি।
আমি প্রায় মাস তিনেক আগে আমার সেল্ফ ডিফেন্স জার্নির কথা শেয়ার করেছিলাম আপনাদের সকলের সাথে। সেখানে বলেছিলাম আমার ইনসিকিউরিটির কথা, কেন, কীভাবে আমার মাথায় সেল্ফ ডিফেন্স শেখার আগ্রহ জন্মে সেকথা এবং আমার সেল্ফ ডিফেন্স জার্নির কিছু ভিডিও আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আজ আবারো সেই সেল্ফ ডিফেন্স নিয়েই আপমাদের সকলের সাথে কিছু কথা শেয়ার করতে এসেছি।
খুব রিসেন্টলি, ভারতে ঘটে যাওয়া ডাক্তার মৌমিতার ঘটনা টি সকলকেই নাড়া দিয়েছে! কী নির্মম অত্যাচার এর শিকার হয়েছে মেয়েটি নিজেরই কর্মক্ষেত্রে। টানা ৩৬ ঘন্টা ডিউটির পর কিছুটা বিশ্রাম নিতে গিয়ে এমন নির্মমতার শিকার হতে হবে, কে ভেবেছিলো!! কেউ ই ভাবে না... এটাই সত্য! কেউ ই এমন পরিণতির কথা ভাবে না! তাই বলে কি মানুষ রূপী পশু গুলো চুপ করে থাকে? থাকে না তো!! একটা নিউজে দেখলাম, এদের বিকৃত রুচি থেকে বাদ পরে না পোষ্টমার্টাম রিপোর্টের জন্য অপেক্ষায় থাকা লাশ গুলোও! কী জঘন্য ব্যাপার, চিন্তা করা যায়!
তাই বলি, সময় থাকতেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বিকৃত রুচির মানব-রূপী পশু সব দেশে, সব জায়গায় ই আছে। শহর-নগর- গ্রাম, ঘরের বাইরে এমনকি ঘরের ভেতরেও আছে! একজন মেয়ে রূপে জন্মগ্রহণ কারী আসলে কারোর কাছেই হয়তো সেইফ না! কয়টা কেইস আসলে এমন ভাইরাল হয়? কয়টা কেইস থানা পর্যন্ত যায়? আর ডেইলি যে প্রকৃতপক্ষে কতগুলো এমন ঘটনা ঘয়ে ছড়িয়ে ছিটয়ে, তার আসলেই হিসেব নেই!
তাই, আমি একটা কথা বলি, আপনাদের যাদের বাসায় ছোট্ট পরী আছে, আপনারা ছোট থেকেই তাদের সেল্ফ ডিফেন্স শেখাবেন প্লিজ! মেয়েদের আর্ট, গান, নাচ, ঘরের কাজ বা রান্না শেখার চেয়েও সেল্ফ ডিফেন্স শিখাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, অনেক বেশি জরুরী। আমরা কেউই চাই না আমাদের কারোর সাথেই অপ্রীতিকর কিছু ঘটুক! কিন্তু এটাই চরম সত্য যে মেয়েরা এমনকি নিজেদের বাসাতেও সেইফ না! অথচ এই বিষয় টি কে অধিকাংশ মানুষ ই গুরুত্ব দেই না। যদিও শহর গুলোতে এখন কিছুটা সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু সেটাও হাতে গোণা! এসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিন, প্লিজ! নিজেদের ঘরের মেয়েটিকে নিজেকে রক্ষা করতে শিখান, প্লিজ! মেয়েদের জন্য সেল্ফ ডিফেন্স শেখা বিলাসিতা নয়, ভীষণ ভীষণ ব্যাসিক!! পাশাপাশি, নিজেদের বিবেক কেও জাগ্রত করুন। বিশেষত ছেলেদের বলবো, মেয়েরা আপনাদের হাসি- ঠাট্টার না কৌতুকের বস্তু নয়! আপনার বন্ধু যদি কোন মেয়ে সম্পর্কে কোন বাজে মন্তব্য করে, তাকে বোঝান যে সে ভুল করছে! নিজের বাড়ির ছোট / উঠতি বয়সের ছেলেটিকেও সঠিক শিক্ষা দিন যে- সকল মেয়েই সম্মানের যোগ্য! আপনি আজ অন্য বাড়ির মেয়ের দিকে নোংরা ইঙ্গিত করলে, মাকড়সার জালে পা দিলেন, সেই জালে হয়তো কোনো না কোনো দিন আপনার বাড়ির মেয়েও বাদ যাবে না! মনে রাখবেন, সব কিছুর ই হিসাব রাখা হয়!
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি। OR
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
আপনার কথাগুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। খুব সুন্দর ভাবে একটি পোস্ট আপনি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে কখনো কাউকে অবহেলা দৃষ্টিতে তাকাতে নেই। কারো নিজের ভুলের ফাঁদে নিজেকে পড়তে হয় এটা সব ঠিক।
আপনার আগের পোস্টে আপনের সেল্ফ ডিফেন্স জার্নির কথা গুলো জেনেছিলাম। বর্তমান সময়ে এসেও অনেকেই ভাবে যে এই সেল্ফ ডিফেন্স শিখাটাও একটা বিলাসিতা। তবে চারদিকে যে পরিমাণ ঘটনা ঘটছে সেগুলো যদি তারা চিন্তা করত তাহলে তারা মোটেই বলতো না যে এটা একটা বিলাসিতা। তবে এটা ঠিক বলেছেন, বাড়ির ছেলেদের ছোট থেকেই শিক্ষা দেওয়া উচিত মেয়েদের সম্মান দেওয়া। লেখাগুলো পড়ে ভালো লাগলো আপু।
চারপাশে এমন ঘটনা ঘটা টা নতুন না আপু। যা ঘটে, তার কতটুকুই বা আমরা সবাই জানি? অর্ধেক ও আসে না খবরে! আর সচেতনতা বৃদ্ধি তে, নিরাপদ সমাজ তৈরি তে ছেলে- মেয়ে উভয়েরই সমান ভূমিকা থাকতে হবে আপু! নইলে শুধু সেল্ফ ডিফেন্স শিখেও কি আর লাভ হবে, বলেন?