মানুষের মনুষ্যত্ব কোথায় যাচ্ছে দিন দিন
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলে সব দিক থেকে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। যদিও আমি নিজে খুব বেশি ভালো নেই। ঢাকায় যেমন গরম পরা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে,, আমি আবারো কদিন থেকে মাইগ্রেইন এর ব্যাথায় ভুগছি। গত তিনদিন ই ভীষণ বাজে গিয়েছে। আজ এখন কিছুটা ভালো। তবে মাথা ব্যাথা টা পুরোপুরি তো যায় নি এখনো। গত তিন দিন ওভাবে কোনো এক্টিভিটি ও হয় নি আমার। কারণ এই সময়ে এত বেশি লাইট এবং সাউন্ড সেন্সিটিভ হয়ে থাকি আমি, লাইট এবং সাউন্ড সহ্য করতে পারি না। যাই হোক, আজ এখন কিছুটা ভালো লাগছে, তাই আপনাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করবো আমার পোস্ট টি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। এবং আপনারা আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করবেন। তো আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি চলে যাই মূল পোস্ট এ।
মাথা ব্যাথা আমার অনেক ছোট বেলা থেকেই সঙ্গী। মাইগ্রেইন ও সাইনাস দুটোই আছে আমার। তাই প্রতিমাসেই মাথা ব্যাথা হয়ই! মাঝে মাঝে তো প্রতি সপ্তাহেও হয়। অতিরিক্ত গরম, শীত কিংবা বর্ষা সবগুলো ওয়েদার এই মাইগ্রেইন এর সমস্যা প্রকোট হয়ে উঠে। সাথে স্ট্রেস যোগ হলে তো কথাই নেই! যেটা এবার হয়েছে আমার সাথে। কেন, কিসেএ স্ট্রেস সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি।
গতবছর জুলাই-আগস্ট এর ইস্যুর পর থেকেই আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচরণ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছি। তখন এবং তার পরেও জুলাই আগস্ট এর এমন কিছু ভিডিও/ পোস্ট চোখের সামনে চলে আসতো যে আমি ওসব সহ্য করতে পারতাম না। রাতের পর রাত ঘুম আসতো না, অনেকটা প্যানিক আটাক ই হতো। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই রেশ ছিলোই। তারপর ধীরে ধীরে কিছুটা ঠিক হলো পরিস্থিতি। তবুও তা আর কদিনের জন্য! এই যে বর্তমানে আবারো এমন কিছু ইস্যু তৈরি হয়েছে যেটা আবারো নিতে পারছি না। ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাগুলোর উপর যে অত্যাচার হচ্ছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে, তা কিভাবে মেনে নেয়া যায়! ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চারাও কোথাও সেইফ না!! নিজের বোনের বাড়িতে গিয়ে ফেরা হলো না একটা ছোট্ট পরীর! ওদিকে ২১শে ফেব্রুয়ারী শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার জন্য পাশের বাড়ি থেকে ফুল নিতে যাওয়া বাচ্চার সাথেও কি নির্মম ঘটনা ঘটে গেলো, অথচ কোনো বিচার নেই! সাতক্ষীরায় মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনার মামলার বাদী হওয়ায় বাড়ির পাশেই বাবার মরদেহ পাওয়া গেলো! কি যে হচ্ছে এসব চারপাশে! অথচ কোন বিচার নেই, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তো পরের কথা!
এছাড়াও দুদিন আগে ফেসবুক এ হুট করে একটা ভিডিও চোখে পরলো। রাস্তায় একটা কুকুর ঘুমায় ছিলো। একটা লোক বিশাল বড় পাথর দিয়ে যাস্ট সেই ঘুমন্ত কুকুর টার মাথায় বারি দিয়ে দৌড়ে পালায় গেলো সেই রাস্তা থেকে! কুকুরটা ওখানেই মরে গেলো! এসব দেখে আসলে আমার এত্ত প্যানিক লাগে!! কোন কারণ নেই!! একজন মানুষের পক্ষে কিভাবে সম্ভব এমন মনুষ্যত্বহীন কাজ গুলো করার! চারপাশে কেমন মেন্টালিটির মানুষ নিয়ে যে বেঁচে আছি, কার মনে যে আসলে কি চলছে!! এসব মনে নিতে না চাইলেও বারবার মনে এসব ই ঘুরতে থাকছে! মাথা থেকে এই ঘটনা গুলো আমার বের ই হচ্ছে না। যে কোন বাচ্চা মেয়েকে দেখলেও ভয় লাগে যে মেয়েটা আদৌ সেইফ কোথায়! এমনকি নিজের বাসাতেই তো সেইফ না কোনো মেয়ে!! মানুষের মনুষ্যত্ব দিন দিন কোথায় যাচ্ছে কে জানে!! আশেপাশে এত মানুষ এর মুখোশ পরা অমানুষ ঘুরছে!! চেনার উপায় কি! অমানুষ গুলোও দেখতে যে একেবারে মানুষের মতোই!! ভীষণ প্যানিক ও লাগে, অশান্তি লাগে, অসহায় লাগে... কিন্তু কি করার??
আজকের লেখা আর বাড়াচ্ছি না। সকলের সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি। সাথে সকলের কাছে আমার জন্য, আমাদের জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো। সকলে সাবধানে থাকবেন। শুভরাত্রি।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শিক্ষগত যোগ্যতায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। দীর্ঘ ৬ বছর চাকরির পর বর্তমানে পুরোদমে একজন গৃহিণী। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি। OR
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মান+হুস নিয়ে হচ্ছে মানুষ।সহজে যার ভিতরে আত্মসম্মান থাকবে+জ্ঞান (ভালো মন্দ পার্থক্য করতে পারবে)।মানুষের পরিচয় ফুটে ওঠে মনুষ্যত্বে।যেটা দিন দিন লোপ পাচ্ছে।
খুব সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ।
মনুষ্যত্বের অধঃপতনে আমরা এমন এক পরিস্থিতির মাঝে এসে দাঁড়িয়েছি, মানুষের চিৎকার এখন আর আমাদের হৃদয়ে আঘাত করে না বরং আমরা সেটায় আনন্দ পাই। পরিবেশ পরিস্থিতি দুটোই ভীষণ খারাপ এখন।
আসলেই মানুষের চিৎকারে কষ্টের বদলে আনন্দ পাওয়ার লোকের দল ই ভারী এখন ভাই !
আসলেই মানুষের চিৎকারে কষ্টের বদলে আনন্দ পাওয়ার লোকের দল ই ভারী এখন ভাই !
এই সকল দৃশ্য গুলো যখন আমার সামনে আসে আমিও নিজেকে সামলে নিতে পারিনা। একটা খারাপ লাগা তৈরি হয়। সত্যি আমরা মানুষ কতটা নিষ্ঠুর। দিনে দিনে মানুষের মধ্যে যেন নির্দয়তা বেড়েই চলেছে। বেশ দারুণ লিখেছেন আপনি।
আজকাল কে যে মনে কি নিয়ে ঘুরছে বোঝা মুশকিল! মনের মাঝে এত নিষ্ঠুরতা নিয়ে কিভাবে দিব্যি চলাচল করে বেড়ায় কে জানে!