স্মৃতির পাতা থেকে : অফিসে ওয়ান ডিশ পার্টি

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago

হ্যাল্লো বন্ধুরা

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই সেটা আর জিজ্ঞেস করবো না এই পরিস্থিতিতে। যাই হোক, এ নিয়ে আর কথা না বাড়াই। সকলের সুস্থতা কামনা করেই নতুন একটা পোস্ট শুরু করছি। তো চলুন, আজকের নতুন পোস্টে চলে যাই।


আজ হাজির একটি স্মৃতি রোমন্থন পোস্ট নিয়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়, সময় কত দ্রুতই না চলে যায়। আবার কিছু কিছু সময়ে মনে হয় যেন অনন্তকাল ধরে সময় বইছেই না, থেমে আছে, আটকে আছে। যেমনটা বর্তমানে মনে হচ্ছে।আবারো অন্য দিকে কথা চলে যাচ্ছে, ওদিকে যাবো না আমি। তবে আসলে সময় অতিবাহিত হওয়ার পরই বোঝা যায় সময় টা ভালো ছিলো, নাকি খারাপ!



যখনকার স্মৃতি, তখন আমার নতুন অফিসে জয়েন করেছি মাত্র ১৬ দিন হবে। অফিসটায় মানুষ মোটে ৩০ জনের মতোন। তার আগে যে অফিসে কাজ করেছি আমি, সেখানে মানুষ ছিলো ৬০০ জনের উপরে! যাই হোক, নতুন অফিস, নতুন কলিগ, নতুন পরিবেশ- বুঝতে কিছু সময় তো প্রয়োজন। তো ১৬ দিন পরেই হুট করে অফিসের কয়েকজন মিলে প্ল্যান করছেন যে দুদিন পরেই ওয়ান ডিশ পার্টি করবেন অফিসে! মানে একেক জন বাসা থেকে রান্না করে একেক রকমের আইটেম আনবেন, তা দিয়েই আমরা সবাই মিলে লাঞ্চ করবো একসাথে। ওদিকে নতুন মাস পরেছে বটে, স্যালারিটা দেয় নি তখনো! আমার হাত তখন একদমই ফাঁকা বলা যায়। তাই স্যালারি দেয়ার আগেই এমন প্রস্তাবে খুব একটা খুশি হতে পারি নি আমি। মমে মনে কিছুটা গাঁই -গুই করছিলাম যে কীভাবে কী!! আমরা ৩ জন ছিলাম অফিসে একদম ই নিউ জয়েনার- যাদের এক মাস ও হয় নি জয়েন করার। বাকিরা কে কি আইটেম আনবেন লিস্ট করার পর আমাদের নতুন ৩ জন কে বলা হলো, আমরা ৩ জন মিলে যেন এই লিস্টের বাহিরে অন্য যে কোন একটা আইটেম আনি। তাতে কিছুটা না, অনেকটাই স্বস্তি পেলাম যেনো!






আইটেম লিস্ট দেখে আমরা তো চিন্তায় পরে গেছি। কারণ মোটামুটি সব আইটেম ই কভার হয়ে গেছে বাকিদের থেকেই! মেইন আইটেম থেকে শুরু করে ডেজার্ট, এমনকি আইসক্রিম, মিষ্টি, কোক পর্যন্তও সেই লিস্টে আছে! আমরা এখন কী আনবো!! পরে অনেক চিন্তা ভাবনা করেও যখন ৩ জনে মিলে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, গেলাম এক সিনিয়র আপুর সাথে পরামর্শ করতে। উনার পরামর্শে ঠিক হলো কাবাব এর ব্যবস্থা করবো আমরা। তো সেই দুই দিন বেশ এই ওয়ান ডিশ পার্টি নিয়ে ভীষণ ই হইচই হলো অফিসে। অফিসটায় মানুষ কম হলেও, সবার বন্ডিং বেশ ভালো ছিলো। কলেজ/ ভার্সিটির ফ্রেন্ড রা যেমন সবসময় একে অন্যের পেছনে লাগে, কোনো কথা মাটিতে পরতে দেয় না- একদম সেই ভাইব ছিলো মানুষগুলোর মাঝে! যাই হোক, অবশেষে সেই পার্টির দিন। একেক জন অফিসে ঢোকে আর সবাই মিলে তার উপর হামলে পরছে তার বক্স খোলার জন্য!! সে কী মজার দৃশ্য সেদিনের! পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত থেকে শুরু করে আচারি বেগুন, রোস্ট, মাংস, ইলিশ ভাজি, মাছ ভুনা আবার কেক, কোক, পুডিং, আইসক্রিম কিছুই বাদ যায় নি সেদিন!! সবাই মিলে খুব আনন্দ-মজা করে ওয়ান ডিশ পার্টি করেছিলাম। নতুন জয়েনার হিসেবে সেদিনের সেই পার্টি আমাদের ৩ জনের জন্য যেনো অনেকটাই আপন করে নেয়ার মাধ্যম ছিলো ! দেখতে দেখতে দুই বছর হয়ে গেলো সেদিনের। তখন মনে হলো, আসলেই, ভালো সময় খুব দ্রুতই কেটে যায়!!

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 8 months ago 

আপনারা যারা নতুন ছিলেন তারা তো দেখছি বেশ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। একদিকে বেতন হাতে নেই অন্যদিকে কি আনবেন নির্ধারণ করতে পারছিলেন না। ওয়ান ডিশ পার্টি দেখেই তো অন্য রকমের ভালোলাগা তৈরি হলো। সবার আন্তরিকতা দেখে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আপু। আসলে এভাবে সবাই যদি বাসা থেকে একটি একটি করে আইটেম এনে একসাথে খাওয়া হয় তাহলে দারুন মজা হয়। অনেক ভালো লাগলো আপু আপনার এই পোস্টটি দেখে।

 8 months ago 

আসলেই আমরা তিনজন বেশ দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম। সময়ও কম ছিল, হাতও ফাঁকা ছিল। আবার তিনজন মিলে কি আনবো সেটা নিয়েও কনফিউজড ছিলাম। পরে সিনিয়রের পরামর্শে উদ্ধার হয়েছি।

 8 months ago 

আপনাদের ওয়ান ডিস পার্টিতে বিভিন্ন রকমের আইটেম দেখে বড় ভালো লাগলো। এমন পার্টি মাঝে মাঝে জীবনে কিছু শুদ্ধ হাওয়া নিয়ে আসে। প্রতিদিনের জীবনের অভ্যাসে এমন কিছু ব্যতিক্রমী দিন বড় ভালো লাগা তৈরি করে। প্রতিটি পদ দেখেই মনে হচ্ছে সুন্দর হয়েছে। এমনভাবে সকলে মিলে মিলেমিশে থাকাই উচিত। জীবনকে উদযাপন করাই জীবনের সংজ্ঞা।

 8 months ago 

যথার্থ বলেছেন ভাই। সবাই একসাথে মিলে মিশে জীবনকে উদযাপন করাই জীবনের সংজ্ঞা। দারুন সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 8 months ago 

আসলেই আপু কিছু কিছু দিন যায় যেগুলো স্মৃতির পাতায় খুব সুন্দর ভাবে গাঁথা হয়ে যায়। আর তেমন একটি দিন আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। একদিক থেকে তারা সবাই যেহেতু পুরনো রয়েছে তারা সবটা কাভার করে ফেলেছে এবং আপনাদের নতুনদের উপর তেমন একটা চাপ ফেলতে দেয়নি। এরকম ওয়ান ডিস পার্টি গুলা আসলেই অনেক বেশি সুন্দর হয়। আমি তো ভাবছি, ইস যদি সেখানে থাকতে পারতাম হয়তো আমি আনন্দ করতে পারতাম, ভালো লাগলো আপু

 8 months ago 

আমরা তিনজন যেহেতু নতুন ছিলাম তাই বাকি রাও খুব সুন্দর ভাবে ম্যানেজ করে নিয়েছিল এবং আমাদের উপরে তেমন কোনো চাপ দেয় নি। সবাই মিলে ভীষণ মজা করেছিলাম সেই দিনটাতে। আসলেই এই স্মৃতি অনেক দিন ধরে মনে থাকবে।

 8 months ago 

মাঝেমধ্যে সাথের মানুষদের সাথে ছোটখাটো পিকনিকের আয়োজন করলে খুব ভালো লাগে।বেশ চমৎকার ছিল আপনাদের এই খাওয়া মুহূর্তটা। দারুন ভাবে উপস্থাপন করেছেন আমাদের মাঝে। অনেক অনেক ভালো লাগলো দেখে।

 8 months ago 

জি ভাই, ঠিক কথাই বলেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 8 months ago 

একদম আপু সময় খুবই দ্রুত চলে যায় আবার একেক সময় মনে হয় সময় যেন কাটছেই না। আর এই পার্টিগুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগে একেক জন বাড়ি থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবার নিয়ে এসে একসাথে খাওয়ার মজাই আলাদা। আর এত লোভনীয় খাবারগুলো দেখে লোভ সামলাতে পারছি না।খাবার-দাবার এবং আপনার সুন্দর মুহূর্ত পরে বুঝলাম সেদিন খুব ভালোই মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন। ধন্যবাদ আপু আমাদের সাথে সেই স্মৃতিচারণ শেয়ার করার জন্য।

 8 months ago 

সেদিন আসলেই বেশ হাসি মজায় কাটিয়েছিলাম। আর সাথে নানা স্বাদের খাবার তো আছেই!

 8 months ago 

এ ধরনের পার্টির মাধ্যমে খুব সহজেই নতুন জায়গায় নিজেকে মানিয়ে নেয়া যায়। আর এটা ঠিক বলেছেন ভালো সময় খুব দ্রুত চলে যায় আর কঠিন সময় যেনো যেতেই চায় না। তবে আপনার পুরানো স্মৃতির লেখে পড়ে বেশ ভালো লাগলো। বেশ সুন্দর কিছু সময় কাটিয়েছেন আপনার কর্মময় জীবনে। তাইতো এখনও সেই সুন্দর সময়গুলো মিস করেন।

 8 months ago 

জী আপু। যখন স্মৃতিগুলো মেমোরি তে আসে, ভাবি, দারুণ মুহুর্ত কাটিয়েছি আমার কর্মজীবনে! আসলেই মিস করি সময়গুলো, মানুষগুলোকেও।