বিয়ের মজার কান্ড: মুকুটওয়ালার মুকুট বিক্রি

in আমার বাংলা ব্লগlast year

|| আজ ৫ মে ,২০২৪ || রোজ: রবিবার ||

হ্যাল্লো বন্ধুরা

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। এমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলে এমন গরমের মাঝেও ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে পরিবারসহ বেশ ভালোই আছি। আজ আবারো আপনাদের সামনে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করবো আজকের পোষ্ট টি আপনাদের ভালো লাগবে।


আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিয়েতে নানা রকমের আচার পালিত হয়ে থাকে। এইসব আচার প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত- বৈদিক আচার এবং লৌকিক আচার। এর মধ্যে বৈদিক আচার গুলো মোটামুটি সবখানেই একই থাকে এবং এগুলো সব বিয়েতেই পালিত হয়। তবে লৌকিক আচার গুলো অঞ্চলভেদে, এলাকাভেদে বা গোত্রভেদে কিছুটা এদিক- ওদিক হয়ে থাকে বা কোন খানে পালিত হয় আবার কোথায় পালিত হয় না। বিয়ের এমন ই একটা লৌকিক আচার নিয়ে আমার আজকের পোষ্ট।


সনাতন বিয়েতে বর-কনে উভয়ের জন্যই অবশ্য প্রয়োজনীয় জিনিস হচ্ছে শোলার মুকুট। এই মুকুটকে বরণ করে নিতে হয়। এটি হচ্ছে বিয়ের আচার। মুকুট বরণ করার জন্য যখন মুকুটের খোঁজ হলো, এই সময়েই আমাদের পরিচিত বৃষ্টিচাকী এর কর্তা মশাই, আমার জামাইবাবু মুকুটওয়ালা সেজে কিছু মজা করেছিলেন। সাথে এসিস্ট্যান্ট ছিলেন আমার জ্যেঠাতো বড়বৌদি। মুকুট তো আগে থেকেই কেনাই ছিলো। আমাদের ঘর থেকে সেই মুকুট নিয়ে গিয়ে বিয়ের রাইয়োদের কাছে সোপার্দ করার আগে মুকুটওয়ালা হয়ে গেলেন কিছুক্ষণ এর জন্য। রাইয়োদের যেহেতু এখন মুকুটটা লাগবে, সেই মুকুট নাকি মুকুটওয়ালার থেকে কিনে নিতে হবে রাইয়োদের! এখানে রাইয়ো বলতে বোঝানো হচ্ছে বিবাহিত মহিলাদের যারা বিয়ের সকল আচার নিয়ম গুলো দ্বায়িত্ব সহকারে পালন করে থাকেন।



প্রথমে তো রাইয়ো রা মিলে মিষ্টি কথায় অনেকক্ষণ ধরে ভীষণ চেষ্টা করলেন! কিন্তু আমাদের মুকুটওয়ালাও তো ছাড়বার পাত্র নয়! রাইয়োদের মুখের মিষ্টি কথায় ভুলবার লোক উনিও নন! তার নগদ টাকা লাগবে, তবেই তার হাত থেকে মুকুট রাইয়োদের হাতে যাবে! ওদিকে বাদ্যওয়ালার ভীষণ মজা পেয়েছে। তারাও সমানে তাল দিয়ে যাচ্ছে! উঠোনের একটা অংশ জুড়ে বেশ ভালো ভীড় জমে গিয়েছিলো এই মজার আয়োজন দেখার জন্য! আসলে গ্রামের বিয়েতে এটাই যেন আলাদা মজা! নানা রকম মজার মজার কিছু ঘটনা যেন ঘটতেই থাকে বিয়ের বাড়িতে! আর সাথে দর্শকেরও অভাব হয় না!


অনেকক্ষণ ধরেও মিষ্টি কথায় যখন আর কিছুতেই কাজ হচ্ছে না, তখন অবশেষে ডাক পড়লো বরের মায়ের। অর্থাৎ আমার মায়ের। রাইয়োরা ব্যর্থ হয়ে মা কে বলে মুকুট উদ্ধার করে দিতে এই মুকুটওয়ালার থেকে! বিনে টাকায় কিছুতেই কাজ হচ্ছে না! অবশেষে কড়কড়ে হাজার টাকার বিনিময়ে ঘরের মুকুট ঘরেই আবার কিনে নিতে হলো! তবে নিয়ে রাইয়ো দের হাতে বরণের জন্য মুকুট হস্তান্তর হলো! এরপর রাইয়ো রা তাদের কাজ করলেন- মুকুট বরণ হলো, বাদ্যদের ও বরণ হলো।

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার এই পোস্ট করার মধ্য দিয়ে। তবে এমন বিষয় আমার কখনো জানা ছিল না। অনেক কিছু শেয়ার করেছেন। কিছু কিছু মানুষ আছে খুব সুন্দর মিষ্টি কথা বলতে পারে। কিছু বিক্রেতারাও এমন ভাবে মানুষের কাছে জিনিস বিক্রয় করে থাকে। তবে যাই হোক বিষয়গুলো জেনে থাকলে ভালো হয়।

 last year 

আসলে আপু আপনাদের বিয়ের নিয়ম কানুন গুলো আমার জানা নেই। কিন্তু আপনার কাছ থেকে আজকে দুই রকমের নিয়ম জানতে পেরেছি। তাহলে আপনারা দেখছি বেশ মজা করেছেন সবাই মিলে। বিশেষ করে বৃষ্টি আপুর হাজবেন্ড মুকুট বিক্রি করতে বসলো। এই বিষয়টা ভীষণ মজার ছিল। শেষ পর্যন্ত দেখছি হাজার টাকা দিয়ে মুকুট বিক্রি করেছে। গ্রামে এ ধরনের মজাগুলোর কারণেই বেশি ভালো লাগে।

 last year 

জি আপু। গ্রামের বিয়েতে এসব মজার কারণেই অনেক বেশি ভালো লাগে।

 last year 

আসলে দিদি মুকুটের এই নিয়ম কানুন গুলো আমারও জানা ছিল না। মুকুটওয়ালার মুকুট বিক্রির এই ব্যাপারটা আজকেই প্রথমবার জানলাম। তাছাড়া রাইয়ো কাদের বলা হয়, এটাও আমি জানতাম না। যাইহোক, শেষ পর্যন্ত হাজার টাকার বিনিময়ে হলেও ঘরের মুকুট ঘরেই আসলো, এটা জেনে খুশি হলাম দিদি।

 last year 

নিজের ঘরের জিনিস আবারো টাকা দিয়ে কিনে নিতে হলো আর কি! আসলে এই পুরো বিষয়টা ই ছিলো নিছক মজা করার জন্যই!

 last year 

আসলে এই পুরো বিষয়টা ই ছিলো নিছক মজা করার জন্যই!

আচ্ছা দিদি, এইবার বুঝলাম ব্যাপারটা। সত্যি বলতে, বিয়েতে এরকম মজার অনেক কিছুই থাকে।

 last year 

সত্যি সেইদিন অনেক মজা হয়েছিল দর কষাকষি নিয়ে বেশ টান টান উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিলো।অবশেষে টাকা দিয়েই মুকুট কিনে নিতে হল।বিয়ের প্রত্যেকটা মুহূর্ত অনেক মজার ছিল।সবাই বিয়েতে অনেক আনন্দ করেছিল।সুন্দর মুহূর্তগুলো তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ মনা