একটি ছোট্ট ছেলের গল্প(পর্ব-১) || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক


  • একটি ছোট্ট ছেলের গল্প
  • ০৫, এপ্রিল ,২০২২
  • মঙ্গলবার


আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি একটি ছোট্ট ছেলের গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।



kids-160168__480.webp.png

Source

চার বছরে পা দিল অভ্র ।
এরই মধ্যে বাড়িতে তার স্কুলে ভর্তি নিয়ে কথাবার্তা চলছে । স্কুল ব্যাপারটা ঠিক কি তা অভ্র ঠিকমত না বুঝলেও একটা জিনিস সে জানে , স্কুল মানে সাদা শার্ট , নেভি - ব্লু হাফ প্যান্ট , মাথায় ক্যাপ , গলায় টাই , পায়ে কেডস্ পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে রোজ সকালে তার মামা - খালামনিদের মত স্কুল ভ্যানে করে স্কুলে যাওয়া । জন্মের পর থেকে অভ্র তার নানুবাড়িতেই আছে । কখনো তার নিজের বাড়িতে যাওয়া হয়নি । ঘুম থেকে উঠে সকাল সকাল মামাতো ভাই - বোনদের সাথে উঠোনে খেলতে বসে যায় অভ্র । বয়সে সবার ছোট হলেও খেলায় নেতৃত্ব দেওয়া চাই । সারাদিন শিশু সুলভ দুষ্টুমিআর চঞ্চলতায় মাতিয়ে রাখে পুরো মোল্লা বাড়ি । সব নানা - নানুদের চোখের মণি অভ্র । মেজো নানা হাই স্কুলের শিক্ষক । সারাদিন স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে আগে অভ্রর সাথে দুষ্টুমি না করলে তার চলেই না । ছোট নানার সাথে তো সারাদিন অভ্রর খুনসুটি চলতেই থাকে । সেজো নানাকে বাড়ির সবাই খুব ভয় পায় । বেশ গম্ভীর মানুষ , অথচ তার সাথে অভ্র সহজেই বেশ ভাব জমিয়ে নিয়েছে । অনেকটা চাপা স্বভাবের সেজো নানা বাড়ির ছোট খাট বৈঠকে প্রায়ই বলেন - ' এই ছেলে একদিন অনেক বড় হবে।মেজো খালার ডাকে খেলায় ছেদ পড়ে অভ্রর । মেজো খালা এসে অভ্রকে বলে ‘ তাড়াতাড়ি আয় গোসল করতে হবে , তোকে আজ স্কুলে ভর্তি করাতে নিয়ে যাব ’ । স্কুলের কথা শুনে আনন্দে অভ্র মেজো খালার আগেই ভোঁ - দৌড় । মা আর মামার সাথে বেড়িয়ে পড়ে অভ্র । পথে যার সাথে দেখা হচ্ছে তাকেই বলছে সে স্কুলে ভর্তি হতে যাচ্ছে । গ্রামের সবাই অভ্রকে খুব আদর করে । বাড়ি থেকে আসার আগে মেজো নানা বলে দিয়েছে- স্কুলে ভর্তি হতে যাচ্ছ নানু ভাই , মামা - খালাদের মত যেন রোল এক ( ১ ) থাকে । স্কুলে ভর্তির যাবতীয় কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে অভ্র তার মাকে জিজ্ঞাসা করে-

আম্মু আমার রোল কত ? - দুই ।
মেজো নানা যে বলল রোল এক ( ১ ) করতে তুমি দুই করলে কেন ? হাসতে হাসতে অভ্রর মা বলে ,
এটা তো ভর্তির রোল বোকা । তুমি পরীক্ষায় সবার চেয়ে বেশি নাম্বার পেয়ে রোল এক করবে । অভ্র অভিমানের সুরে বলে ,
আমার রোল এক চাই , তা না হলে খালামণিরা আমাকে খেপাবে আর বলবে , আমি পচা তাই আমার রোল এক না । অভ্রর আম্মু শুধু হাসল কিছু বলল না ।

street-2805643__480.webp

Source

পরদিন আম্মুর সাথে স্কুলে আসে অভ্র । প্রথম বেঞ্চে ব্যাগটা রেখে আম্মুকে বলে , ‘ আম্মু তুমি চলে যাও , আমি এখন ক্লাস করবো ” । অভ্রর আম্মু চলে যেতেই সবার সাথে পরিচিত হতে থাকে অভ্র । ভাবখানা এমন যেন সবাই তার কত পরিচিত । যার সাথে কথা হচ্ছে সবাইকে জিজ্ঞেস করছে তাদের রোল কত । যখন কেউই বলছে না তাদের রোল এক তখন অভ্র মনে মনে খুব খুশি হয় । কিন্তু অভ্রর খুশিতে চীর ধরে যখন সাকিব নামের এক ছেলে বলে যে তার রোল এক । স্কুল থেকে ফিরেই কান্না জুড়ে দেয় অভ্র । সবাই তো অবাক ; একদিন স্কুলে গিয়েই কি হলো অভ্রর ? পরে সবাই যখন অভ্রর কান্নার কারণটা বুঝতে পারল তখন মুখটিপে শুধু হাসল কিছুক্ষণ । পরদিন স্কুলে গিয়ে অভ্রর আম্মু শিক্ষকদের বিষয়টা বুঝিয়ে বলেন । সব শুনে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রহমান সাহেব আশ্চর্য হয়ে বলেন- ‘ এতটুকু ছেলের রোল একের প্রতি এমন আকর্ষণ ভাবাই যায়না ' । সে দিনই আলোচনা সাপেক্ষে অভ্রর রোল এক করে দেওয়া হয় । অন্যদিকে অভ্রও প্রতিটা পরীক্ষায় সবার চেয়ে বেশি নম্বর পেয়ে শিক্ষকদের নজরে আসতে থাকে । যথারীতি বার্ষিক পরীক্ষায় রেজাল্ট দেওয়া হয় । অভ্র প্রথম স্থানটা স্থায়ীভাবে ধরে রেখে প্লে থেকে নার্সারিতে উত্তীর্ণ হয় । সারাটা দিন রেজাল্ট কার্ড হাতে নিয়ে সমস্ত মোল্লা বাড়ি নেচে বেড়িয়েছে । স্কুল থেকে ফেরার পর মেজো নানার গলা জড়িয়ে ধরে বলেছে- ‘ নানাভাই আমি রোল এক করেছি ’ । মেজো নানার চোখ জোড়া আনন্দের অশ্রুতে ভরে ওঠে । অভ্রকে কোলে তুলে নিয়ে বলেন - ‘ আমি আগেই জানতাম নানভাই তমি রোল এক করবে ' ।

ধন্যবাদ সবাইকে



logo.gif

Sort:  
 3 years ago 

সামান্যতম সাপোর্ট করে পাশে থেকে আপনার এই উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ।

গল্পটা পড়ে ভালই মজা পেলাম। অভ্রের কাহিনীগুলো ভালো লাগলো। রোল নিয়ে তার কান্ড কারখানা গুলো সত্যি ভালো লেগেছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটা গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ছোটবেলায় এরকম ঘটনার শিকার হয়েছিলাম যাইহোক গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ছোট বেলায় আমরা ও রোল নিয়ে মনে হয় আমরাও এমন করতাম,😉😉।অভ্রের কাহিনীগুলো ভালো লাগলো।।ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ছোটবেলায় লেখাপড়া শুরুর দিকে রোল নিয়ে স্মৃতিবিজড়িত অনেকখানি সবার জীবনে খুব বেশি রয়েছে গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 3 years ago 

অভ্রর গল্পটা পড়ে ভালো লাগলো।রোল নিয়ে এত মাথা ব্যাথা।তবে ছোটদের মধ্যে এমন রোলের বিষয়টি মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া ঠিক হয়নি।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

রোল বিষয়টি এমনি এমনি চলে আসে মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হয় না ভাই যাইহোক মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

 3 years ago (edited)

আপনার এই ছোট্ট ছেলে রগল্পটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এর জন্য অনেক ধন্যবাদ।রোল নিয়ে যে কান্ডখানা কী চমৎকার। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

 3 years ago 

ছোটবেলায় লেখাপড়ার পাশাপাশি রোল নিয়ে অনেক স্মৃতি বিজরিত কাহিনী থাকে যেটা উপলব্ধির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে ধন্যবাদ।

 3 years ago 

খুবই সুন্দর ভাবে অবসর গল্পটি আপনি লিখেছেন। অভ্র রোল নিয়ে মাথাব্যাথা হওয়ার কাহিনী টা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ রিপন ভাইয়া।।

 3 years ago 

ছোটবেলায় এরকম রোল নিয়ে মাথা ব্যাথার কারণে সবার জীবনে খুব বেশি রয়েছে আপনি যে গল্পটা ধন্যবাদ রাজু ভাই।

 3 years ago 

আপনার গল্পের প্রথম পর্ব পড়ে এখনি দ্বিতীয় পর্ব পড়তে মন চাচ্ছে। আপনার লেখার মাঝে একটা আলাদা ভাব আছে। এজন্য আমার কাছে বেশি পছন্দ হয়েছে। তবে ভাই আশা করি দ্বিতীয় পার্ট খুব দ্রুত পাবো।

 3 years ago 

দ্বিতীয় পর্ব চলে এসেছে ভাই পড়তে পারেন যেটা বললে গল্পটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝতে পারবেন ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আপনি খুবই চমৎকার একটা গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। গল্পটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে এটা উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

গল্পটির কাহিনী আপনার কাছে ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগলো যেটা আমার সার্থকতা সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।